কেবল সমতলেই সম্পদের পাহাড় গড়েননি সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। অঢেল সম্পদের মালিকানা তার পাহাড়েও। বান্দরবান সদরের সুয়ালক ও লামায় নিজের এবং স্ত্রী ও মেয়ের নামে এক শ একরের বেশি জমি রয়েছে। সেখানে বাগানবাড়ি, মাছ ও গরুর খামার, ফলের বাগান তৈরি করেছেন বেনজীর। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে সাভানা ইকো রিসোর্টসহ ১৪ শ বিঘা জমির মালিক সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ। অভিযোগ আছে, বিশাল এই রিসোর্ট তৈরির পেছনে রয়েছে অনেক মানুষের নিঃস্ব হওয়ার দীর্ঘশ্বাস আর হাহাকার।
সোমবার (৩ জুন) গোপালগঞ্জের কয়েক শ একর জমিতে গড়ে তোলা রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা যায়, ওই এলাকায় শতাধিক একরের ফলমূলের বাগান এবং পশু ও মৎস্য খামার গড়েছেন বেনজীর আহমেদ।
অভিযোগ আছে, কৃষক ও সংখ্যালঘুদের জবরদস্তিমূলক উচ্ছেদের মাধ্যমে এসব জমি দখল করা হয়েছে। এভাবে পাহাড়ে জায়গার বেচা-কেনা নিষিদ্ধ হলেও বেনজীর আহমদ তা মানেননি।
স্থানীয় কৃষক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেককে ভয় দেখিয়ে জোর করে জমি নিয়েছেন বেনজীর। রাজি না হলে নির্যাতনের শিকার হওয়ারও অভিযোগ অনেকের। এমনকি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন কেউ কেউ। বেনজীরকে এই জোর-জবরদখলে সহায়তা করেছেন পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কিছু সদস্য।
এলাকাবাসী জানায়, শত শত সংখ্যালঘু পরিবারের সম্পত্তি জোর করে নেওয়া হয়েছে। তখন এখানকার মানুষ ভয়ে বা আতঙ্কে কখনও মুখ খোলেনি। পুলিশ প্রসাশনের অনেক কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কাজ করতেন। সম্পত্তি নেয়ার পর অনেক পরিবার ভারতে চলে গেছে।
এলাকার এক ভুক্তভোগীর ভাই বলেন, ‘আমার ভাই রাতের আধারে আমাকে কিছু না বলে পরিবার নিয়ে ভারতে চলে গেছেন। ভারতে গিয়ে আমাকে ফোন করে বলে ভাই তুই ওখানে থাকতে পারবি না। তুইও চলে আয়। তা না হলে তোকেও মেরে ফেলবে। আমার ভাইয়ের জমিতে এই রিসোর্টে রয়েছে।’
এলাকাবাসী বলছেন, দাম কম দিয়ে জোরপূর্বক পাহাড়ের জমি নিয়ে নিয়েছেন বেনজীর।
যদিও এসব বিষয়ে কিছুই জানা নেই বলে দাবি করছেন বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন।
এতোদিন ভয়ে মুখ খুলতে না পারলেও এবার অসহায় ভুক্তভোগীরা জমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি তুলেছেন। সরকার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা তাদের।
টিআর/