আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

শাল্লায় হামলার ঘটনায় হেফাজতের সংশ্লিষ্টতা নেই: মামুনুল হক

শাল্লায় হামলার ঘটনায় হেফাজতের সংশ্লিষ্টতা নেই: মামুনুল হক

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু বাড়িতে হামলার ঘটনায় হেফাজতের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বললেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হক। তার দাবি, কতিপয় গণমাধ্যম যাচাই-বাছাই ছাড়াই হেফাজতকে দায়ী করে সংবাদ প্রচার করেছে।

আজ সোমবার (২২ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মামুনুল হক আরও দাবি করেন, হামলা নয় বরং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রথমে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
 
তিনি বলেন, যেদিন হামলার ঘটনা ঘটে, সেই হামলার মুখোমুখি যারা দাঁড়িয়েছিলেন প্রতিরোধ করার জন্য চেষ্টা করেছে, তারা স্থানীয় শাল্লা থানার আলেম সমাজ ও হেফাজত ইসলামের দায়িত্বে যিনি। সংবাদ সেইদিনেই এসেছে, আলেমদের বাধা উপেক্ষা করে হামলা করা হয়েছে। এ থেকে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ হয় যে কোনো সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সর্ব প্রথম যারা ভূমিকা পালন করেছে আলেম সমাজ এবং স্বাভাবিকভাবেই আলেম সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।              

উল্লেখ্য, গত ১৬ মার্চ সকালে নোয়াগাঁও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের ছেলে ঝুমন দাস আপন শাল্লা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঝুমন দাস তার ফেসবুক আইডি থেকে হেফাজতে ইসালামের কেন্দ্রীয় নেতা ও সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব শায়খুল হাদিস মাওলানা মামুনুল হককে আপত্তিকর মন্তব্য করার পরিপ্রেক্ষিতে দিরাই ও শাল্লা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের উত্তেজিত মুসলিম জনতা এর প্রতিবাদ করে। তারা আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়ার বিষয়টি মাইকে প্রচার করেন। প্রচারের পর তারা একত্র জড়ো হয়ে ১৬ মার্চ রাতে নোয়াগাঁও গ্রামে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও  উপজেলা চেয়ারম্যান সেখানে সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঝুমন দাস আপনকে গ্রেপ্তার করে এবং আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের আশ্বাসে বাড়ি ফিরে যায়। এ সময় নোয়াগাঁও গ্রামের পার্শ্ববর্তী  দাড়াইন বাজারে একজন এসআই ও একজন  এসএসআইসহ পুলিশ ফোর্স মোতায়ন করা হয়।

পরদিন ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শাল্লা উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রোগাম পালন করতে ছিলেন। প্রোগ্রাম চলমান অবস্থায় সংবাদ আসে যে শাল্লা উপজেলার কাশীপুর ও দিরাই উপজেলার চন্ডীপুর, নাচনী, চন্দ্রপুর ও ধনপুর গ্রামের এক থেকে দেড় হাজার উত্তেজিত জনতা দা, লাঠিসোঁটা নিয়ে ঝুমন দাসের বাড়ি আক্রমণ করার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

এ খবর পেয়ে দ্রুত দিরাই ও শাল্লা থানার পুলিশ ফোর্স ও  শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল নোয়াগাঁও গ্রামের দারাইন নদীসংলগ্ন উত্তর পশ্চিমপাড়ে অবস্থান করেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। কিন্তু নোয়াগাঁও গ্রামের উত্তর পূর্ব অংশ অরক্ষিত থাকায় উত্তেজিত জনতা দাড়াইন নদী পাড় হয়ে ঝুমন দাস ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুলের বাড়িঘর ভাঙচুর করে।

শুভ মাহফুজ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন শাল্লায় | হামলার | ঘটনায় | হেফাজতের | সংশ্লিষ্টতা | নেই | মামুনুল | হক