‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর শেষে দেশে আসার পর বিএনপি বলতে শুরু করেছে, আমরা নাকি দেশটা ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। এখন চীন থেকে আসার পর তারা বলে কি না, চীনের কাছেও দেশটা বিক্রি করে দিয়েছি। যেখানেই যাই তারা বলছে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিএনপির কাছে আমার আমার প্রশ্ন, দেশটাকে কয়বার বিক্রি করা যায়?’
শনিবার (৬ জুলাই) রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে প্রীতি সাংবাদিক সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এসব এসব কথা বলেন। বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিভাগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই নীতিটাই অনুসরণ করে চলেছেন অত্যন্ত সফলভাবে। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক দেখে বিএনপি’র গাত্রদাহ হচ্ছে। সেজন্য তারা উল্টাপাল্টা বলা শুরু করেছে।’
‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় এবং আমরা অত্যন্ত সফলভাবে সেটি করে চলেছি’ মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়েছিলেন সেখান থেকে এসে কিছুদিনের বিরতিতে তিনি এখন চীন সফরে যাচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে ভারতের সঙ্গে যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক, চীনের সঙ্গেও আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক। আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার যেমন অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আমাদের অত্যন্ত চমৎকার ও ভালো সম্পর্ক।’
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিকট প্রতিবেশী ভারত যারা আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রেখেছে, তাদের সঙ্গে যেমন ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছি, যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আমাদের পাশে ছিল না তারাও আমাদেরকে সহায়তা করছে আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছে, আমাদের উন্নয়নে অবদান রাখছে। এটি আমাদের পররাষ্ট্রনীতির এই সফলতা। এটি বিএনপিসহ অনেকেই বুঝেও না বোঝার ভান করে।’
বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার সরকার মাথা উঁচু করে চলে। শেখ হাসিনা কারও কাছে মাথা নোয়াবার নয়, এটি মনে রাখতে হবে। খেপাটে মেজাজের রিজভী সাহেব কী বলল, ঢুলঢুলে মেজাজে গয়েশ্বর বাবু কী বলল, শিক্ষিত হয়েও মীর্জা ফখরুল সাহেব অশিক্ষিতের মতো কথা বলল তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা রাষ্ট্রের মর্যাদা রক্ষা করে, সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সেটিই করে চলেছেন।’
‘গণমাধ্যমে রাষ্ট্রের উন্নতি প্রতিফলিত হওয়া উচিত’ মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি, প্রতিটি মানুষের জীবন মানের উন্নতি, সেটি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। সেটি অনেক সময় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় না। সমাজের অসংগতি কিংবা দায়িত্বশীলদের ব্যর্থতা যতটুকু প্রতিফলিত হয়, সমাজের উন্নতি, রাষ্ট্রের উন্নতি কিংবা দায়িত্বশীলদের সফলতা সেটি অনেক সময় ততটুকু প্রতিফলিত হয় না, সেটি হওয়া প্রয়োজন রয়েছে।’
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে’র মহাসচিব দীপ আজাদ।
এমআর//