প্রায় দুই সপ্তাহ বিদেশি ঋণের অর্থ পরিশোধ বন্ধ থাকার পর সংকট কাটিয়ে আবারও শুরু হয়েছে কার্যক্রম। বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থিরতার কারণে পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ থাকায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করা যায়নি।
গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরের পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য নতুন করে নির্দেশনা দেয়া হয়। নতুন এই নির্দেশনার মাধ্যমে বিদেশি ঋণের সুদ-আসল এবং জ্বালানি তেল ও সারের বিল পরিশোধ আবার নিয়মিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন কোটি ডলার ঋণ ও বিল পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশকে।
এদিকে ঋণ পরিশোধ দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকায় দেশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, ঋণ পরিশোধ বন্ধ থাকায় দেশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে। বিদেশে অর্থ পাঠাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, এসব দেখেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেন। পেমেন্ট গেটওয়ে সব সময় চালু রাখা উচিত।
ইআরডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট তিনশোরও বেশি প্রকল্প আছে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগের বিদেশি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড এখনো শেষ হয়নি। ফলে আসল পরিশোধ করতে না হলেও এসব ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ নিয়ে প্রকল্প শেষ করা হয়েছে, এমন প্রায় ৭০০ প্রকল্পের ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে।
সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার প্রকল্পের বিপরীতে নেয়া বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ওই সব প্রকল্পের চুক্তির দিন অনুসারে সারা বছরের প্রতিদিনই কোনো না কোনো প্রকল্পের ঋণের অর্থসংশ্লিষ্ট বিদেশি সংস্থা ও দেশের কাছে পাঠাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করেই এই অর্থ পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরেই বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সামনে এ চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেএস//