বিনোদন

ভালোবাসা নিয়ে ফিরছেন কঙ্গনা-মাধবন!

বিনোদন প্রতিবেদন

বলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী ও বিজেপির সংসদ সদস্য কঙ্গনা রানাউত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবসময় বিতর্কে জড়িয়ে থাকেন। এ নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

এ বিতর্কের রানি ফের বিতর্কে জড়াতে অরুচি জানিয়েছে, এবার প্রেমে ফেরা যাক, উদ্যাপনের আবহে বুঝি এমনই ভাবনা কঙ্গনার মনে উঁকি দিয়েছে? এবার তনু ওয়েডস মনু ৩ ছবিতে থাকার কথা জানিয়েছে একটি প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে। কঙ্গনার সঙ্গী হিসেবে থাকছেন আর মাধবন।

কিছুই অসম্ভব নয়। কারণ বিজেপি বিধায়ক কঙ্গনা রানাউতের মর্জি বোঝা দায়। এই তিনি ইমার্জেন্সি ছবির কারণে বিতর্কের মধ্যমণি, সেই তিনিই নাকি ফের যাবতীয় তর্ক সরিয়ে রোমান্টিক মেজাজে ফিরতে চলেছেন। সৌজন্যে আনন্দ এলো রাইয়ের তনু ওয়েডস মনু ৩ ছবি। উৎসবের আবহে প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে এ ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই কঙ্গনার অভিনয়ের অনুরাগীদের মন ভালো করে দিয়েছে।

কারা থাকবেন ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির তৃতীয় পর্বে? পরিচালক-প্রযোজকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, কঙ্গনার সঙ্গী আর মাধবন অবশ্যই থাকছেন। থাকবেন আগের দুই পর্বের অভিনেতারাও। একই সঙ্গে এই প্রজন্মকে জুড়তে এখনকার কিছু জনপ্রিয় মুখও জায়গা করে নেবেন। তৃতীয় পর্বের গল্প লিখতে আনন্দকে সহযোগিতা করেছেন হিমাংশু শর্মা। 

এর আগে ২০২৩ সালে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শোনা গিয়েছিল, তনু ওয়েডস মনু ৩ আসছে। যদিও আনন্দের মুখ থেকে কোনো কথা কেউ শোনেননি। পাশাপাশি তিনি করবেন না, এমন বক্তব্যও কাউকে জানাননি।

আরও জানা গেছে, ছবিটি সম্ভবত আগামী বছর শুটিং ফ্লোরে যাবে। তার আগে রাই তেরে ইশক মে ছবির শুটিং শেষ করবেন। এ ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন ধনুশ। তবে তনু ওয়েডস মনু ৩ নিয়ে আনন্দ ঘোষণা করলেও বিতর্কের রানির মুখ থেকে এখনো কিছু শোনা যায়নি। বলিউড আপাতত তার বক্তব্য শোনার জন্য মুখিয়ে।

সম্প্রতি মহাত্মা গান্ধী ও লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পোস্ট করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়ে ছিলেন কঙ্গনা রানাউত। এ বিতর্কের রানি শাস্ত্রীর ১২০তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন। কংগ্রেসের দাবি, জাতির জনক হিসেবে মহাত্মা গান্ধীর মর্যাদা হ্রাস পেয়েছে। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে পোস্ট করে কঙ্গনা রানাউত লিখেছেন, দেশের কোনো বাবা হয় না, লাল (সন্তান) হয়, ধন্য এই ভারতমাতার সন্তানরা।

এর পরই শুরু হয় বিতর্ক। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে মান্ডির এ সংসদ সদস্য দেশে গান্ধীর স্বচ্ছতার উত্তরাধিকার বহন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। এর ফলে কংগ্রেসের তরফ থেকে একাধিক আক্রমণাত্মক পোস্ট এসেছে কঙ্গনা রানাউতের বিরুদ্ধে। অনেকেই তার মন্তব্যকে অশ্লীল ও নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন। 

কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, বিজেপি সংসদ সদস্য কঙ্গনা মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে তাকে অশ্লীল কটাক্ষ করেছেন। গডসে উপাসকরা বাপু এবং শাস্ত্রীজির মধ্যে পার্থক্য টানেন। নরেন্দ্র মোদি কি তার দলের নতুন গডসে ভক্তকে আন্তরিকভাবে ক্ষমা করবেন? জাতির পিতা আছেন, পুত্র আছেন, শহিদ আছেন, সবারই সম্মান প্রাপ্য। 

পাঞ্জাবের বর্ষীয়ান বিজেপি নেত্রী মনোরঞ্জন কালিয়াও গান্ধীর জয়ন্তী নিয়ে কঙ্গনার মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, রাজনীতি তার ক্ষেত্র নয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক ভিডিওতে কালিয়া বলেন, গান্ধীজির ১৫৫তম জন্মবার্ষিকীতে কঙ্গনা রানাউতের করা মন্তব্যের নিন্দা করছি। স্বল্প রাজনৈতিক জীবনে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন তিনি। রাজনীতি তার জন্য নয়। রাজনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কথা বলার আগে ভাবতে হবে, তার বিতর্কিত মন্তব্য দলের জন্য অশান্তি ডেকে আনছে।

কৃষি আইন প্রত্যাহারের পক্ষে সওয়াল করেও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত। কঙ্গনা যদিও জানিয়েছেন, তার মন্তব্য ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদর্শকে প্রতিফলিত করে না।

এদিকে কঙ্গনা রানাউত অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতেও পা রেখেছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে রাজনীতির সফর শুরু হয়েছে কঙ্গনা রানাউতের। তবে বিতর্কের কারণে শিরোনামে আসা তার কাছে নতুন কিছু নয়। এ জন্য তাকে ঠোঁটকাটা অভিনেত্রী বলা হয়ে থাকে। বিটাউনেও নানা মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। পরিণতির কথা না ভেবেই একাধিকবার নানা মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন কঙ্গনা। নিজেই স্বীকার করেছেন, তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এমন ক্ষমতা কারও নেই।

একটি সংবাদমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, কেউ আমাকে কখনো কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এ অধিকার আমি কাউকে দিইনি। আমার নিজের পছন্দ-অপছন্দের জন্য কেউ কথা শোনাবে বা তির্যক মন্তব্য করবে, এমন অধিকার কারও নেই।

উল্লেখ্য, কঙ্গনা রানাউত পরিচালিত ও অভিনীত ইমার্জেন্সি সিনেমা আইনি জটিলতায় পড়ে সেন্সর বোর্ডে আটকা আছে।  সিনেমাটি নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে সামাজিকমাধ্যমে। ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই এটি নিয়ে কয়েকটি শিখ গোষ্ঠী প্রতিবাদ জানায়। এ সিনেমা শিখ ধর্মের অনুসারীদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলে জানায় শিখ গোষ্ঠী। ফলে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি) থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ২১ মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ওপর ভিত্তি করে এ সিনেমা তৈরি করেছিলেন কঙ্গনা রানাউত। 

ইমার্জেন্সি ছবিতে কঙ্গনা রানাউত ছাড়াও থাকছেন অনুপম খের, মহিমা চৌধুরী, মিলিন্দ সোমান, শ্রেয়স তালপাড়ে প্রমুখ। থাকছেন প্রয়াত অভিনেতা সতীশ কৌশিকও। জি স্টুডিওজ এবং মণিকর্নিকা ফিল্মস এ ছবিটি প্রযোজনা করেছে। ভারতের অন্যতম অশান্ত সময়কে তুলে ধরা হয়েছে এ ছবিটিতে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত লিখেছেন, ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জানাচ্ছি, আমার পরিচালিত সিনেমা ইমার্জেন্সি মুক্তির সময় পিছিয়েছে। এখনো সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছি। সিনেমাটি আগামীতে কবে মুক্তি পাবে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি বোঝার জন্য এবং ধৈর্য ধরার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন কঙ্গনা রানাউত | অভিনেত্রী | ইন্দিরা গান্ধী | সিনেমা