ভারতের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাটিতে খেলা যেকোনো দলের জন্য কষ্টসাধ্য বটে, তা ভালোভাবেই টের পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পাত্তাই পেলো না সফরকারীরা। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে ১২৮ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ভারত খুব সহজেই ম্যাচটি জিতে নিয়েছে, ৭ উইকেট ও ৪৯ বল হাতে রেখে।
ওপেনিংয়ে নামা সানজু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা- নির্ভয়ে ব্যাট করার চেষ্টা করেছেন। যদিও রানআউটের শিকার হয়ে ১৬ রানে ফিরতে হয়েছে অভিষেককে। এরপর স্যামসনের সঙ্গে সূর্যকুমার যাদব মিলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। ষষ্ট ওভার চলাকালে দলের রান যখন ৬৫, তখন মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার হয়ে ফেরেন সূর্যকুমার। তিনি ১৪ বলে ২৯ রান করেছেন।
দলীয় ৮০ রানের মাথায় বিদায় নেন সানজু স্যামসন। তার ব্যাটে আসে ২৯ (১৯) রান। এরপর নিতিশ কুমার রেডি ও হার্দিক পান্ডিয়া মিলে দলের জয় নিশ্চিত করেন। তারা দুজনে ৫২ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে তোলেন।
যেখানে নিতিশ কুমার ১৬ (১৫) রানে, হার্দিক ৩৯ (১৬) রান করে মাঠ ছেড়েছেন।
এর আগে গোয়ালিয়রে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মোটেও ভুল করেননি সূর্যকুমার যাদব। ভারতীয় অধিনায়ক জানতেন কীভাবে বাংলাদেশকে আটকে দেয়া যাবে। তবে বাংলাদেশি ব্যাটাররা নিজেরাই নিজেদের আটকে দিয়েছে আরও বেশি। একেকটা শট খেলেছেন, দেখে মনে হয়েছে কোনো ভাবনা ছাড়াই।
প্রথম ওভারে আর্শদ্বীপ সিংয়ের শেষ বলে বড় শট খেলার উদ্দেশ্যে ব্যাট হাঁকিয়ে বসেন লিটন দাস। তবে সেই শটে খেলা বল কেবল ওপরে উঠেছে ক্রিজের কাছেই। একটি বাউন্ডারি সম্বল করে বিদায় নেন লিটন।
এক বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাঠে নেমে পারভেজ হোসেন ইমনও আশানুরূপ কিছু করতে পারেননি। একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বটে, তবে ফিরে যান মাত্র ৮ রান করেই, আর্শদ্বীপের বলে বোল্ড হয়ে।
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয় মিলে দলকে কিছুটা সাহায্য করেছেন। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৮ বল খেলে ১২ রান করেই বিদায় নেন হৃদয়। দলীয় পঞ্চাশের আগে বিদায় নিতে হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেও। বাংলাদেশ দল তখন ৪৩ রান করে ৪ উইকেটে অবস্থান করছিল।
জাকের আলী অনিক এক ছক্কা হাঁকিয়ে আশা দেখিয়ে বিদায় নিয়েছেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেনকে যখন আরেকটু দায়িত্ব সহকারে ব্যাট করা উচিত ছিল, তখন ওয়াশিংটন সুন্দর নিজের বলে নিজে ক্যাচ নেন। ২৫ বল খেলে ২৭ রান দিয়ে বিদায় নেন শান্ত।
মেহেদী হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেন মিলে বাংলাদেশ দলকে খাদের কিনারা থেকে কিছুটা উদ্ধার করার চেষ্টা চালিয়েছেন। মায়াঙ্ক যাদবের পর পর দুই বলে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি খেলেন রিশাদ। তবে তার ঝড়ো ইনিংসও বড় হয়নি, ৫ বলে ১১ রান করেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।
বাংলাদেশ দল তখন ৭ উইকেট হারিয়ে ৯৩ রানে অবস্থান করছিল।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ মিলে ২৩ রানের জুটি গড়েন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২ রান নিতে গিয়ে রানআউটের শিকার হন তাসকিন। তার ১২ রানে ফিরে যাওয়ার পর শরিফুল ইসলামকে বোল্ড করে দেন হার্দিক পান্ডিয়া। দলীয় ১১৭ রানে শরিফুলের উইকেট পতনের পর, বাংলাদেশের শেষ উইকেট মোস্তাফিজুর রহমান বোল্ড হয়ে যান ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে।
এতে ১৯.৫ ওভারে ১২৭ রানে সফরকারী দল অলআউট হয়ে যায়।
ভারতের হয়ে বল হাতে, আর্শদ্বীপ সিং ও বরুণ চক্রবর্তী দুজনেই ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মায়াঙ্ক যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া ও ওয়াশিংটন সুন্দর।