শনিবার সন্ধ্যায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাসভবনে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে সিজারিয়ায় অবস্থিত এই বাড়ির উঠানে আগুণ ধরে যায়। গোয়েন্দা বাহিনী শিন বেত এবং দেশটির পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এখনো পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৬ নভেম্বর) ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত সিজারিয়া শহরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে রোববার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার যৌথ বিবৃতিতে জোর দিয়ে জানানো হয়েছে, হামলার সময় নেতানিয়াহু এবং তার পরিবার সেই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না।
পুলিশ এবং শিন বেত আরও বলেছে, তারা এই হামলার গুরুতর ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে। এছাড়া হামলার কারণ অনুসন্ধানে জোরালো তদন্ত শুরু করেছে।
এ ঘটনায় ইসরাইলের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড এবং জাতীয় ঐক্যের চেয়ারম্যান বেনি গ্যান্টজ নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরাইলের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। রোববার এক্সে তিনি লেখেন, ‘সব সীমা অতিক্রান্ত হচ্ছে। নিজের বাড়িতেই এভাবে বার বার হামলার শিকার হওয়া ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব নয়। ইরান ও তার ছায়াসঙ্গীরা চেষ্টা করছে নেতানিয়াহুকে হত্যা করার।’
রক্ষণশীল দল ইসরাইল বেতেনু প্রধান আভিগডর লিবারম্যান বলেছেন, এই হামলা ইসরাইল রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করার প্রচেষ্টা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
লিবারম্যান আরাে বলেন, তদন্তে শিন বেত এবং পুলিশকে সম্পূর্ণ সমর্থন দিতে হবে এবং জড়িতদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।
একইসঙ্গে ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগও এই হামলার তীব্র নিন্দা জারি করে বলেছেন, তিনি শিন বেত প্রধান রনেন বার এর সাথে কথা বলেছেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘটনার জন্য দায়ীদের তদন্ত এবং মোকাবেলা করার জরুরী প্রয়োজনের উপর জোর দিয়েছেন।
এর আগে গেলো ২১ অক্টোবর সিজারিয়ায় নেতানিয়াহুর এই বাসভবনে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল লেবাননের প্রতিরোধ আন্দােলন হিজবুল্লাহ। ওই সময় পরিচালিত হামলার পূর্ণাঙ্গ ও একক দায় ঘোষণা করেছিল হিজবুল্লাহ।
এরপর হিজবুল্লাহ প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রথম ভাষণে নেতানিয়াহুকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন শেখ নাঈম কাসেম। তিনি দাবি করেন, হিজবুল্লাহর হামলার ভয়ে নিজের জীবননাশের আশঙ্কা করছেন নেতানিয়াহু।
নাঈম কাসেম তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমরা নেতানিয়াহুর ঘরে একটি ড্রোন পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। নেতানিয়াহু এবার বেঁচে গেছেন, কিন্তু সম্ভবত তার সময় এখনও আসেনি।’
‘সম্ভবত একজন ইসরাইলি তাকে হত্যা করবে, সম্ভবত তার বক্তৃতার সময়।’
‘আমাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ আমাদের নিশ্চিত করেছে যে নেতানিয়াহু খুবই ভীতসন্ত্রস্ত, কারণ আমরা তাকে লক্ষ্যবস্তু করেছি’।
এসি//