শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার দরবারে (মুর্শিদপুর পীরের দরবার) গত বৃহস্পতিবার হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। অগ্নিসংযোগের পর থেকে দরবারে লুটপাট চালাচ্ছিল একটি গোষ্ঠী। আজ দুপুরে পীরের অনুসারীরা লুটপাটকারীদের ধাওয়া দিলে এ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় লুটপাটের মালামাল নিতে আসা কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মিজানুর রহমান ভূঁঞা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা ও সংঘর্ষে হাফেজ উদ্দিনের মারা যাওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা গতকাল দরবারের বিভিন্ন স্থাপনা আগুন দেওয়ার পাশাপাশি মূল্যবান আসবাব, গবাদিপশু, কাঠ, টিন, ধান-চালসহ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। আজ সকালেও লুটপাট অব্যহত ছিল। খবর পেয়ে পীরের কয়েক শ অনুসারী জোটবদ্ধ হয়ে দুপুরে দরবারে ঢুকে তাঁদের ধাওয়া করেন। পরে লুটের মালামাল বোঝাই কয়েকটি গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। বিকেলে পীরের অনুসারীরা দরবার ত্যাগ করেন।
মুর্শিদপুর পীরের এক অনুসারী বলেন, দরবারে হামলার ঘটনায় তাঁরা চরমভাবে ব্যথিত হয়েছেন। দরবারের মূল্যবান সম্পদ ধ্বংস করায় অনেক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আজ লুটপাট প্রতিরোধে তাঁরা দরবারে গিয়েছিলেন। এ সময় লুটপাটকারীদের কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেন ক্ষুব্ধ অনুসারীরা।
এদিকে পীরের অনুসারীদের দরবারে ফেরার খবর পেয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা পীরের অনুসারীদের বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে শুরু করেন। আতঙ্কে শেরপুর-জামালপুর সড়কের কুসুমহাটী বাজার এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে জেলা সদর থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দরবার ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভোরে মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মো. হাফেজ উদ্দিন (৪০) নামের এক কাঠমিস্ত্রি গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আবু সায়েম ক্ষতিগ্রস্ত দরবার শরিফ ও আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কাঠমিস্ত্রি হাফেজ উদ্দিনের মৃত্যু ও দরবারে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আই/এ