কিছুদিন আগেও অভিনয়ে নিয়মিত ছিলেন মেহের আফরোজ শাওন। তবে স্বামী লেখক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর থেকে তাকে আর অভিনয়ে দেখা যায়নি। যদিও অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় শাওন। বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের মতামত প্রকাশ করেন এবং মাঝে মাঝে নিজের জীবনের আপডেটও শেয়ার করেন সেখানে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বড় ছেলে নিষাদ হুমায়ূনকে নিয়ে নিউমার্কেটে শপিং করতে গিয়েছিলেন শাওন।
অভিনেত্রী জানান নিউমার্কেটে রাস্তা পার হওয়ার সময় হঠাৎ এক অটোরিকশা এসে তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়, পড়ে যান অভিনেত্রী। রিকশার চাকার নিচে তার বাঁ পা চাপা পড়লে গুরুতর চোট পান তিনি। পরে শাওনকে দ্রুত শ্যামলীর ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড এও অর্থোপেডিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে শনিবার বিকেলে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাওন। বায়ান্ন টিভির পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
ঘটনা খুবই সরল ও অনাড়ম্বরপূর্ণ। বড় ব্যাটা নিষাদ হুমায়ূনকে নিয়ে গিয়েছিলাম নিউমার্কেট, তার বাবার প্রিয় বাজারে। সুন্দরভাবে কাজ শেষ করে গাড়ির কাছে ফিরছিলাম। জুম্মার সময়, দুপুর ১টা ৫৫। নিউমার্কেটের ভেতরের অংশের চলাচলের রাস্তায় বসা মুসুল্লীদের নামাজ প্রায় শেষের দিকে।
রাস্তা একদম ফাঁকা। ডান বাম ভালো করে দেখে যেই না রাস্তা পার হওয়া ধরেছি, কোথা থেকে মাটি ফুঁড়ে এলো ‘বাংলার টেসলা’ খ্যাত এক অটোচালিত রিকশা! কোনোরকম বেলের টুংটাং না করে “আআআপুউউউ....সরেএএএন’’ বলে ডাক, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিন যাত্রীসহ চালক মহাশয় এক সজোর ধাক্কা দিলেন। প্রবল বেগের সেই ধাক্কায় আমি ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে রাস্তায় পড়ে গেলাম আর ‘বাংলার টেসলা’র পেছনের চাকা আমার বাম পায়েরর উপর দিয়ে চলে গেল।
পরের ঘটনা উল্লেখ করে শাওন লেখেন, টেসলার চালককে ধন্যবাদ, তিনি পালিয়ে না গিয়ে নিজের দোষ কিছুটা স্বীকার করেছেন। আশেপাশে থেকে ছুটে আসা মানুষদের ধন্যবাদ, নানা জ্ঞান দিয়ে আমাকে সাহায্য করার চেষ্টার জন্য। কৃতজ্ঞতা সেই চা দোকানদারের প্রতি, যিনি নিজ দোকানের ফিল্টার পানির জার পুরোটা ঢেলে আমার পায়ে তাৎক্ষণিক আরাম দিয়েছেন।
অভিনেত্রী তার স্ট্যাটাসে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি সঙ্গে থাকা অর্পিতাকে। তিনি লিখেছেন, অর্পিতা, তুই সাথে না থাকলে কীভাবে যে ঐ সময়টুকু সামলাতাম জানি না। চোখের সামনে থেকে অন্ধকার সরার পর দেখলাম নিজের পুরো শরীরের ভার তোর উপর ছেড়ে আমি ঢলে পড়েছি আর তুই ঠান্ডা মাথায় আমাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য গাড়িতে তোলার চেষ্টা করছিস, পাশাপাশি ঘটনার আকস্মিকতায় নার্ভাস হয়ে পড়া নিষাদকে সামাল দিচ্ছিস! শুধু মুখে মুখে ‘শাওন মা’ না তুই আমার শক্তপোক্ত মেয়ের দায়িত্ব-ই পালন করে দেখালি। আমি তোকে নিয়ে গর্বিত।
নিজের শরীরের বর্তমান আপডেট জানিয়ে শাওন বলেছেন, পরম করুণাময় আল্লাহর দয়ায় পা ভাঙেনি। তবে পেশি ও কোমল টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্ণ বিশ্রাম আর ওষুধে আগামী কিছুদিনের মধ্যে সেরে যাবে।