সাবেক স্ত্রীকে খুঁজতে তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বের হয়েছিলেন সোহেল মিয়া (৩০)। কোলে থাকা শিশু সন্তান মায়ের জন্য কাঁদছিলো, এসময় সোহেলকে অপহরণকারী ভেবে বেধড়ক পিটিয়েছে জনতা। আহত সোহেলকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে থানা পুলিশ। বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার রামদি ইউনিয়নের তাতারকান্দিতে এ ঘটনা ঘটে। কুলিয়ারচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, প্রায় ১০ বছর আগে কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের হারুয়া সওদাগরপাড়ার সোহেল মিয়ার (৩০) সঙ্গে প্রতিবেশী সাবিনা আক্তারের (২৫) বিয়ে হয়েছে। এই দম্পতির তিন সন্তান। এর মধ্যে ৩ বছরের শিশুকন্যা রাইসা সবার ছোট। কিছু দিন আগে সোহেলকে তালাক দেন সাবিনা।কিন্তু সন্তান রয়ে যায় বাবার কাছে।
তিন বছর বয়সী রাইসা মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কান্না করছিলো। সন্তানের কান্না থামানোর জন্য সাবেক স্ত্রীর খোঁজে বের হন তিনি। রাইসাকে নিয়ে আগরপুর বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করার সময় মায়ের জন্য কান্না করছিল সে। এ সময় সোহেলকে অপহরণকারী ভেবে পথরোধ করে স্থানীয় লোকজন। একপর্যায়ে তাকে মারধর করে।
বারবার আকুতি করেও শেষ রক্ষা হয়নি সোহেলের। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ এসে সোহেলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে প্রমাণ হয় সোহেল অপহরণকারী নন, কোলে থাকা শিশুটি তারই মেয়ে। এ ঘটনার পর পরিবারের কাছে সোহেলকে তুলে দেয়া হয়।
কুলিয়ারচর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, উদ্ধারের পর সোহেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। সোহেলের স্ত্রী কোলের সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ায় ভৈরবে তার এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছিলেন স্ত্রীর খোঁজে। সেখানে কয়েকদিন ছিলেন তিনি। এরপর ভৈরব থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
কুলিয়ারচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক, কষ্টদায়ক। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হতেই পারে। সন্দেহ হলেই প্রমাণ ছাড়া বিচার শুরু করে দেওয়া বড় অন্যায়, বড় ভুল। সোহেলের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। রাতেই সোহেলের মা, ভাইসহ আরও অনেকে থানায় এসে দুজনকে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
আই/এ