বঙ্গোপসাগরের বুকে উথালপাথাল ঢেউ আর বাতাসে ভিজে আছে সতর্কতার সুর। উত্তাল জলরাশি আর অচেনা শঙ্কার গর্জন- এই স্রোতে, নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে মাত্র ১৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থানরত এই নিম্নচাপের কেন্দ্রে, দমকা হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের বেশি ছুঁয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিকেলের মধ্যেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে, সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়া হয়ে আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলে। ইতিমধ্যেই সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (২১.৪° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৫° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (বিজ্ঞপ্তি-২) এই আবহাওয়াবিদ আরও জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বিকেল নাগাদ সাগরদ্বীপ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ছাড়াও দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এসি//
