রাজনীতি

বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু ও সহাবস্থানের পরিবেশ ধ্বংসের চেষ্টায় লিপ্ত বামপন্থীরা: ঢাবি ছাত্রশিবির

বায়ান্ন প্রতিবেদন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর বিক্ষোভে উস্কানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা বলছে, এসব স্লোগানের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা চলছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিযোগ তুলে ধরেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সেক্রেটারি মহিউদ্দীন খান। বিবৃতির শিরোনাম ছিল, ‘ছাত্রশিবিরকে লক্ষ্য করে বামপন্থীদের সন্ত্রাসী স্লোগানের প্রতিবাদ ও ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপতৎপরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ’।

ছাত্রশিবিরের এই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত দুই দিন যাবৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের প্রথম সভাপতি এ টি এম আজহারুল ইসলামের বেকসুর খালাস পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে সবার যেকোনো বিষয়ে বিক্ষোভ করার কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার অধিকার রয়েছে। ছাত্রশিবির এই গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল।’

বামপন্থীদের বিক্ষোভ থেকে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ‘পুরোনো পতিত ফ্যাসিবাদের স্লোগান’ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বলে শিবির অভিযোগ করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, অতীতে স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে যেসব স্লোগান ও রেটরিক ব্যবহার করে ছাত্রশিবিরকে অমানবিকীকরণ করে হত্যার বৈধতা উৎপাদন করা হয়েছিল, তারই পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে৷ বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত বামপন্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ‘বাঁশের লাঠি মিছিল হবে, শিবির তোমার মৃত্যু হবে’, এমন সন্ত্রাসী স্লোগানও দিতে দেখা গেছে। এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে বামপন্থীদের মধ্যে থাকা ছাত্রশিবিরকে হত্যার সুপ্ত হীন জিঘাংসা প্রতিফলিত হয়েছে।

ছাত্রশিবির আরও বলেছে, নতুন বাংলাদেশে ক্যাম্পাসে এমন হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতির পুনরাবৃত্তির অপচেষ্টাকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছেন। গত মঙ্গলবার রাতে বামপন্থীদের মশালমিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকায় গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিয়ে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার রাতেও তারা একই এলাকায় গেলে শিক্ষার্থীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দিতে দেখা গেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদ এবং যেকোনো যৌক্তিক প্রতিরোধকে ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যাযোগ্য করার এই ফ্যাসিবাদী ধারা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বামপন্থীদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন ধরনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দুঃখজনক হলো, বামপন্থীদের এই মিছিলে দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের অন্যতম সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েকজন নেতা-কর্মীকেও অংশ নিতে দেখা গেছে, যাঁরা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা বলতে চাই, বামপন্থীদের চলমান বিক্ষোভ থেকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

ছাত্রশিবিরের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও সমর্থন নেই বলেই তারা সব সময় ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে সরাসরি কিংবা ঘুরিয়ে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাম সংগঠনগুলো এখন চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন ডাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নেওয়া ইতিবাচক উদ্যোগ থামিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীরা এসব ষড়যন্ত্র ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে বলেও জানিয়েছে ছাত্রশিবির।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় #ছাত্রশিবির