যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে পুরোনো রেলপথ। নতুন রেলসেতু চালু হওয়ায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়া রেললাইন অপসারণের মাধ্যমে সেতুর সড়কপথকে আরও প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সেতু বিভাগ। যানজট কমানো ও ঈদ-পরবর্তী চাপ সামলাতে এ পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে টাঙ্গাইল অংশে সেতুর পূর্ব প্রান্তে রেললাইন খুলে ফেলার মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক অপসারণ কার্যক্রম। আজ শুক্রবার (২৭ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেন যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল।
তিনি জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সেতু বিভাগ যৌথভাবে রেললাইন সরানোর প্রস্তাব দেয়। সেই আলোকে অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কাজ শেষে রেলপথ ও অন্যান্য সরঞ্জাম হস্তান্তর করা হবে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে।
সেতু বিভাগের তথ্যমতে, বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতিটি সড়ক লেনের প্রস্থ ৬ দশমিক ৩ মিটার হলেও আদর্শ প্রস্থ হওয়া উচিত ৭ দশমিক ৩ মিটার। রেললাইন অপসারণের মাধ্যমে যে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ মিটার জায়গা পাওয়া যাবে, তা দুই পাশে ভাগ করে সড়কপথকে প্রশস্ত করা হবে। এতে করে ঈদ ও অন্যান্য ছুটির সময় যে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়, তা অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
১৯৯৮ সালে চালু হওয়া এই সেতু ছিল দেশের প্রথম সড়ক ও রেল সংযুক্ত মিশ্র যোগাযোগের উদাহরণ। তবে ২০০৮ সালে সেতুর কিছু অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় রেল চলাচলের গতি সীমিত করা হয়। সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর প্রায় ৩০০ মিটার দূরে নির্মিত হয় দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু—‘যমুনা রেলসেতু’। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই নতুন সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করে। এরপর থেকেই যমুনা সেতুতে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে কার্যকারিতা হারানো পুরোনো রেলপথ সরিয়ে ফেলেই যমুনা সেতুকে এখন পুরোপুরি সড়কসেতু হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বাস্তবায়িত হলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের সড়ক যোগাযোগে গতি আসবে, ভ্রমণ হবে স্বস্তিদায়ক ও নিরাপদ।
আই/এ