আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র যেতে বিকল্প পথে নেতানিয়াহু!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঝুঁকি এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সফরের জন্য বিকল্প বিমানপথ বেছে নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে তিনি অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশের আকাশসীমা এড়িয়ে চলেছেন।

এর আগে গেলো বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা দিতে এবং রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করতে নেতানিয়াহু তেল আবিব ত্যাগ করেন।

যাত্রার আগে দেয়া এক বক্তব্যে নেতানিয়াহু পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, যারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তাদের তিনি নিন্দা জানাবেন।

তার ভাষায়, “যারা খুনিদের, শিশু হত্যাকারীদের ও দুষ্কৃতকারীদের নিন্দা না করে বরং তাদের রাষ্ট্র দিতে চান, আমি তাদের কঠোরভাবে নিন্দা জানাবো। এটি কখনো ঘটতে দেয়া হবে না।”

 ইসরায়েলের স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ঝুঁকি এড়াতে নেতানিয়াহুর বিমান “উইং অব জায়ন” দক্ষিণের সর্বনিম্ন রুট বেছে নিয়েছে। বিমানটি বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশের আকাশসীমা এড়িয়ে গ্রীস ও ইতালির ওপর দিয়ে আটলান্টিকের দিকে যাত্রা করছে।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরেডার২৪ অনুসারে, ফ্লাইটটি গ্রীস এবং ইতালির উপর দিয়ে অল্প সময়ের জন্য উড়েছিল, কিন্তু এটি সম্পূর্ণরূপে ফরাসি এবং স্প্যানিশ আকাশসীমা এড়িয়ে চলেছিল, যার ফলে ফ্লাইটের সময়কাল দীর্ঘায়িত হয়েছিল।

আরেকটি ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট এডিএস-বি এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, গেলো জুলাই মাসে নেতানিয়াহুর শেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ গ্রীস, ইতালি এবং ফ্রান্সের উপর দিয়ে হয়েছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, এই রুট বেছে নেয়ার মূল কারণ ছিল আইনি ঝুঁকি এড়ানো। কারণ ইউরোপের কয়েকটি দেশ—স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড এবং ইতালি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, নেতানিয়াহু তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করলে তারা আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করবে। ফলে ইতালির আকাশপথ ব্যবহার করাও ছিল অত্যন্ত সংবেদনশীল।

যদিও ফ্রান্স নেতানিয়াহুকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল, তবুও তিনি দেশটির ওপর দিয়ে না গিয়েই বিকল্প পথ বেছে নেন। কারণ, আইসিসির পরোয়ানা এখনো কার্যকর রয়েছে।

অন্যদিকে হাঙ্গেরি প্রকাশ্যে জানিয়েছে, তারা নেতানিয়াহুকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত এবং আইসিসির সিদ্ধান্ত মানবে না। অন্যদিকে জার্মানি আদালতকে সমর্থন জানালেও ‘ইসরায়েলের’ সঙ্গে তাদের বিশেষ সম্পর্কের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত বছর নভেম্বরে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। নেতানিয়াহু যদি আইসিসির সদস্য ইউরোপীয় দেশগুলির উপর দিয়ে বিমান চালান, তাহলে তাকে অবতরণ করতে বাধ্য করা হতে পারে এবং গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেউই আইসিসির সদস্য নয়।

 

 

সূত্র: রোয়া নিউজ 

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #আইসিসি #বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু