মিসরের রাজধানী কায়রোয় ইসরাইল ও হামাসের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় দীর্ঘ সংঘাতের অবসান নিয়ে আলোচনায় বসেছেন। সোমবার (০৭অক্টোবর) লোহিত সাগরের উপকূলীয় শহর শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার আলোচনায় দুই পক্ষ ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা নিয়ে পরোক্ষভাবে আলোচনা করেছেন। মিশর ও কাতার এই আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
রয়টার্সের খবরে জানা গেছে, সোমবার রাত পর্যন্ত আলোচনার প্রথম দফা শেষ হয় এবং মঙ্গলবার নতুন বৈঠকের আয়োজন রয়েছে। এই আলোচনা এমন এক সময়ে শুরু হয়েছে, যখন হামাসের ইসরাইল আক্রমণ এবং গাজার ওপর ইসরাইলের হামলার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে। ফলে অনেকেই এটিকে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে শান্তির সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন।
তবে যুদ্ধে এখনও কোনো যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়নি। ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ১৩১টি বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। সোমবারের হামলায় একজন ত্রাণকর্মীসহ ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত গত দুই বছরে এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬৭ হাজার ১৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৯ জন আহত হয়েছেন।
গাজায় সংঘটিত এই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞে শহরের ভবন, বাড়িঘর ও সড়কপথ প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বিশেষ করে তেল আল-হাওয়া, দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শিল্পাঞ্চল এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিমান ও কামান হামলা চলছে। আল-তুফাহ, জননিরাপত্তা প্রাঙ্গণ, হামিদ রাউন্ডঅবাউট, আল-শিফা হাসপাতাল ও আল-নাসর স্ট্রিট লক্ষ্য করে বিশেষ আক্রমণ চালানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুতরা অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করছে এবং শান্তির জন্য বিশ্বনেতাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, সংস্থা গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তবে সবুজ সংকেত পেতে হবে। খাদ্য ও জরুরি সরঞ্জাম ইতোমধ্যেই জর্ডান, ইসরায়েলি বন্দর আশদোদ এবং অন্যান্য জায়গায় রাখা হয়েছে।
এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, দ্রুত প্রথম ধাপের আলোচনার সমাপ্তি হবে এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দির মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন। এ সপ্তাহেই তাদের মুক্তির ঘোষণা আসতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, উভয় পক্ষই তার প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামোর সঙ্গে একমত এবং দ্রুত অগ্রগতি চান। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ ছাড়বে, ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করবে এবং বিনিময়ে এক হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে।
তবে ইসরাইলের মুখপাত্র শোশ বেদরোশিয়ান জানিয়েছেন, এখনো “প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রম” চলছে এবং গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি এখনও কার্যকর হয়নি।
এসি//