টাঙ্গাইলের মধুপুরে কলাগাছের খোসা ও আনারসের পাতা থেকে ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের মূল্যবান আঁশ। আর সেই আঁশ ও আঁশের তৈরি জিনিসপত্র বিদেশে রপ্তানি করে অর্জিত হচ্ছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। তবে বিদেশের বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় এই আঁশের যোগান দিতে পারছেন না উদ্যোক্তা আনোয়ার।
হঠাৎ করে দেখলে কারো মনে হতে পারে মেশিনে তৈরি হচ্ছে পাটের আঁশ। কিন্তু তা নয় পরিত্যক্ত কলা গাছের খোসা ও আনারসের পাতা থেকে তৈরি হচ্ছে উৎকৃষ্টমানের মূল্যবান আঁশ। এছাড়া এর বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের জৈবসার।
২০১৬ সালে নিজের মেধা ও নিরলস শ্রম দিয়ে আঁশ তৈরি শুরু করে সফলতার মুখ দেখেন উদ্যোক্তা আনোয়ার। বর্তমানে ৫টি মেশিনে ৪০ জন নারী-পুরুষ কাজ করছেন তার কারখানায়। প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় খুশি পরিবারসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, আঁশের তৈরি জিনিসপত্র কৃষিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
শ্রমিকরা জানান, কলাগাছের খোসা ও আনারসের পাতা থেকে আঁশ তৈরি ও তা দিয়ে জিনিসপত্র বানানো, এটি আমাদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। তবুও এই কাজের মাধ্যমে আমাদের সংসার খুব ভালোভাবে চলছে।
তবে এ শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা, কারখানায় বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়া ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পিছিয়ে পড়েছেন বলে জানান উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন।
টাঙ্গাইল শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন খান জানান, কলাগাছের খোসা ও আনারসের পাতার আঁশ দিয়ে অনেক কিছু তৈরি হচ্ছে। এই শিল্পকে যদি বৃহৎ আকারে করা যায় তা হলে সারাদেশে অর্থনৈতিক পরির্বতন হবে।
উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন জানান, এই কাজ করতে গিয়ে অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু আমি সব বাধাকে জয় করে এগিয়ে গিয়েছি। আঁশ দিয়ে পণ্যের চাহিদা অনেক এবং অনেক অর্ডার পাচ্ছি।
পাঁচটি মেশিনে মাসে সর্বোচ্চ ৪ হাজার কেজি আঁশ উৎপাদন করতে পারেন আনোয়ার হোসেন, যার বাজারমূল্য ১০ লাখ টাকা।