মিষ্টি মেয়ে খ্যাত নায়িকা কবরীর মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের আরেক বড় তারকা চিত্রনায়ক ওয়াসিম। শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১২টা ৩০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
বরেণ্য এই অভিনেতার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
চিত্রনায়ক ওয়াসিম রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
অ্যাকশন, বিশেষ করে ফোক-ফ্যান্টাসি ঘরনার সিনেমার এক নম্বর এই নায়ক গত কয়েকদিন ধরে বাসায় শয্যাশায়ী ছিলেন। পরিবার থেকে জানানো হয়েছিল তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারছিলেন না।
ব্রেন, নার্ভ ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন বরেণ্য অভিনেতা ওয়াসিম। অসুস্থ হওয়ার পর তাকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে বাসায় নিয়ে যেতে বলেন। কারণ, দেশে করোনার যে পরিস্থিতি তাতে হাসপাতালে রাখা নিরাপদ নয়।
১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে শীর্ষ নায়কদের একজন ছিলেন ওয়াসিম। ১৯৭২ সালে ‘ছন্দ হারিয়ে গেল’ সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে ওয়াসিমের অভিষেক হয়। নায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু ১৯৭৪ সালে মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ সিনেমার মাধ্যমে। দিন যতই যেতে থাকে ওয়াসিমের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয়। বাণিজ্যিক ঘরনার সিনেমার অপরিহার্য নায়ক হয়ে ওঠেন তিনি। শাবানা, ববিতা, কবরী, অলিভিয়া, সুচরিতা, অঞ্জু ঘোষ, অঞ্জনা, নূতন—ওই সময়ের এসব অভিনেত্রীর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি।
ছাত্রাবস্থায় বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন ওয়াসিম। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিং এর জন্য ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন।
সবমিলিয়ে ১৫২টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন ওয়াসিম। ওয়াসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো—‘রাতের পর দিন’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘দি রেইন’, ‘রাজদুলালী’, ‘বাহাদুর, ‘মানসী’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘বেদ্বীন’, ‘ঈমান’, ‘লাল মেম সাহেব’ প্রভৃতি। ‘বেদ্বীন’, ‘ঈমান’, ‘মানসী’ সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি।
এএ
