কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বাণিজ্যিকভাবে সামুদ্রিক শৈবাল চাষ শুরু করেছেন ৭ জন উদ্যোক্তা। এই ৭ তরুণ উদ্যোক্তা কৃত্রিমভাবে সামুদ্রিক শৈবাল (স্পিরুলিনা) উৎপাদনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে রপ্তানি করাসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বপ্ন দেখছেন।
এই স্পিরুলিনা নামটি অধিকাংশ মানুষের কাছে অপরিচিত। স্পিরুলিনা হলো সাইনো ব্যাকটেরিয়া। বাংলাদেশে স্পিরুলিনাকে গ্রীন ডায়মন্ড বলা হয়ে থাকে। প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ প্রকৃতির আশ্চর্য এই খাবারটি অনেকে সামুদ্রিক শৈবাল হিসেবেই চেনেন।পুষ্টিহীনতা ছাড়াও রক্তশূন্যতা, রাতকানা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আলসার, বাত, হেপাটাইটিস ও কান্তি দূর করতে বেশ উপকারী।
উপজেলার প্রাাণকৃষ্ণ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে এরশাদ হোসেনের বাড়ীর উঠানে মাত্র ৩ শতক জমিতে তৈরী করেন স্বপ্নের গ্রীন হাউজ। ওই এলাকার সাত উদ্যোক্তা ‘ফুলবাড়ী এগ্রো’ নামে একটি সংগঠন খুলে নিজেদের সু-প্রতিষ্ঠিত করতে সমাজ-সেবাসহ উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই ৭ তরুণ উদ্যোক্তারা হলেন সেলিম রেজা, এরশাদ হোসেন, গোলাম ওয়াদুদ, জাকির সরকার, হাসান বাপ্পী, মাসুদ রানা, ফাতেমা আক্তার মিতু। সাত তরুণ উদ্যোক্তার মধ্যে সেলিম রেজা ওই সংগঠনটির প্রধান পরিচালক।
ফুলবাড়ী এগ্রো সংগঠনটির পরিচালক সেলিম রেজা ও উদ্যোক্তা মাসুদ রানা জানান,বাংলাদেশে স্বল্প পরিসরে স্পিরুলিনার চাষ শুরু হয়েছে। আমরা ২৪ হাজার লিটার পানিতে কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছি। এটিই দেশে সর্ববৃহৎ স্পিরুলিনা চাষের উৎপাদন কেন্দ্র। দেশের বাজারে স্পিরুলিনার চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে কিন্তু সে তুলনায় দেশে বাণিজ্যিকভাবে স্পিরুলিনার উৎপাদন নেই। দেশের নাম করা ঔষুধ কোম্পানিগুলো বাহিরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশে স্পিরুলিনার চাষ হলে আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে। বেকার যুবকদেরও কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবে।
তিনি আরও জানান, স্পিরুলিনা উৎপাদন করে প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ জানান, এই ৭ তরুণ উদ্যোক্তা স্পিরুলিনার উৎপাদন শুরু করায় উপজেলা জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই প্রথম স্পিরুলিনা চাষ করায় অনেকেই এক নজর দেখার জন্য ছুটছেন ওই সাত তরুন উদ্যোক্তার পাশে। উপজেলা কৃষিবিভাগ সবসময় ৭ তরুণ উদ্যোক্তার পাশে থাকবে।
মুনিয়া