আর্কাইভ থেকে করোনা ভাইরাস

ভারতে ভয়ংকর ছত্রাকের আক্রমণে করোনা রোগীরা

ভারতে ভয়ংকর ছত্রাকের আক্রমণে করোনা রোগীরা

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাকাল ভারত। এ অবস্থায় শোনা যাচ্ছে ভয়ংকর ছত্রাকের সংক্রমণের খবর। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে করোনা আক্রান্তদের শরীরে এক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে মিউকোরমাইকোসিস বলা হচ্ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নামেও পরিচিত বিরল ও বিপজ্জনক এই সংক্রমণ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ব্রিটেনের বিবিসি জানিয়েছে, মূলত গুজরাট, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে বাড়ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ব্যাঙ্গালুরুতেও সংক্রমণ দেখা গেছে। এছাড়া এই সংক্রমণের খবর মিলেছে হায়দরাবাদ, পুনেসহ আরও কয়েকটি শহরে।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত আহমদাবাদের একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে সংক্রমিত ৬৭ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে। শেষ ২০ দিনের মধ্যে ঘটেছে এই সংক্রমণ। এদের মধ্যে ৪৫ জনের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানায়, প্রতিদিন তাদের ছয়-সাতটি অস্ত্রোপচার করতে হচ্ছে। মুম্বাইয়ের একাধিক হাসপাতালেও মিলেছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত রোগী।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, এ জটিলতায় মৃত্যুর ঘটনাও কম নয়। মহারাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয়ে আটজন মারা গেছে। একটি সংবাদ সংস্থা দাবি করেছে, আক্রান্ত ২০০ জনের চিকিৎসা চলছে।

দিল্লির একটি প্রথম সারির হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানায়, করোনার সঙ্গে এই সংক্রমণ জুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকদের নতুন করে চ্যালেঞ্জে পড়তে হচ্ছে।

দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক মনিশ মুনজাল বলেছেন, আমাদের হাসপাতালে গেল দুইদিনে ছয়জন মিউকোরমাইকোসিস নিয়ে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের দ্রুত ওজন কমছে, দৃষ্টিশক্তি চলে যাচ্ছে, নাক ও থুতনির হাড়ের ক্ষতি হচ্ছে।

একই হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ অজয় স্বরূপ জানান, ডায়াবিটিসে আক্রান্ত যে করোনা রোগীদের স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে তাদের শরীরে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।

চিকিৎসকদের দাবির সত্যতা স্বীকার করেছেন এমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, করোনার কারণে মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসছে। সে কারণে নানা রকম ফাঙ্গাল ও ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের শরীরে এই সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেশি। তার ওপর টানা স্টেরয়েড শরীরে প্রবেশ করায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সে কারণেই এ ধরনের ফাঙ্গাল সংক্রমণ তৈরি হচ্ছে।

ব্যাঙ্গালুরুর চক্ষু সার্জন ডা. রঘুরাজ হেগড়ে জানিয়েছেন, গেল দুই সপ্তাহে ১৯ জন রোগী পেয়েছেন তিনি। রোগীদের বেশিরভাগই বয়সে তরুণ। কয়েকজন এতো অসুস্থ আমরা তাদের অস্ত্রোপচার করতে পারছি না।

গেল বছর ভারতে করোনার প্রথম সংক্রমণের সময় ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের কয়েকটি ঘটনা জানা গেলেও এবার ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে এর সংক্রমণের তীব্রতা ও ব্যাপকতা দেখে চিকিৎসকরা বিস্মিত।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ভারতে | ভয়ংকর | ছত্রাকের | আক্রমণে | করোনা | রোগীরা