মানুষ যখন করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কথা প্রায় ভুলতে বসেছে, তখনই হঠাৎ করে আবার জেএন.১ নামের এক উপধরন ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে এই ধরন পার্শ্ববর্তী ভারতসহ বিশ্বের ৪১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশে নতুন ধরনের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকারের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। যদিও নতুন এ ধরনে বাংলাদেশে কেউ এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়নি।
নতুন ধরনের সংক্রমণ মোকাবেলায় আবারও হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ সকল স্থানে মাস্ক ব্যবহারসহ চার দফা পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির ৬৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সকলের পরামর্শের আলোকে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়। সেগুলো হলো—
১। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে যেমন হাসপাতাল/চিকিৎসা কেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি— যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের সতকর্তা হিসেবে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হলো। কমিটি মনে করে কোভিড-১৯ ছাড়াও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে এটি সহায়ক হবে।
২। সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য বৈশ্বিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও দেশে নজরদারি জোরদার করার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে কোভিড পরীক্ষা ও আইসিইউসহ দ্রুত চিকিৎসার সকল প্রস্তুতি রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং এর প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৩। কোভিড ভ্যাকসিন বিষয়ে নিয়মিত বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণসাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মোতাবেক উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৪। সভায় অস্ত্রোপচার অথবা অন্য কোনো রোগের চিকিৎসার আগে কোভিড পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কমিটি কেবলমাত্র কোভিডের লক্ষণ/উপসর্গ থাকলে কোভিড পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে ইতিমধ্যে একে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনটি অতিদ্রুত ছড়াচ্ছে।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ওমিক্রনের উপধরন হলো জেএন.১। রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে ফাঁকি দেওয়ায় জেএন.১ আরও অনেক বেশি কার্যকর। ফলে সংক্রমণের হার বেশি। তবে ঝুঁকি কম।