জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ উপায়ে অর্থ-সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ তদন্তে চাওয়া রিটের ওপর আদেশ না দিয়ে তা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি নিষ্পত্তির আদেশ দেন।
নিষ্পত্তিতে আদালতের দেয়া পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এ মুহূর্তে রিটের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। পরে প্রয়োজন মনে করলে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. মোতাহারা হোসেন সাজু। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. হেলাল উদ্দিন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক। গেলো ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টির প্যাডে লেখা অভিযোগটি দুদকে জমা দেন জাতীয় পুনর্গঠন প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টির চারজন মহিলা সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন কার্যক্রমে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন জি এম কাদের। উৎকোচের বিনিময়ে ওই চার নারীকে সংসদ সদস্যপদে মনোনয়ন দেয়া হয়। মসিউর রহমান রাঙ্গার মাধ্যমে ওই নারীদের জাতীয় সংসদের আসনে মনোনীত করার অঙ্গীকার ও অর্থ প্রদানের শর্তে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। এ বিষয়ে একজন মহিলা এমপির চুক্তির বিষয়টি এরই মধ্যে মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। তিনজন মহিলা সদস্যের কাছ থেকে ৫ কোটি করে মোট ১৫ কোটি এবং প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে জি এম কাদের গ্রহণ করেছেন, যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, দলীয় পদপদবি ব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর মসিউর রহমান রাঙ্গাকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা একটি নামসর্বস্ব প্যাডে এরশাদ সাহেবের দস্তখত তৈরি করেন।
সেটি তদন্ত শুরু না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন মো. ইদ্রিস আলী। তবে আইনি নোটিশ পাওয়ার পর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়। রিটের শুনানি শেষে সেটি নিষ্পত্তি করে দিলেন আদালত।