বাংলাদেশের এক অন্যতম সমস্যা শব্দ দূষণ। পেশাগত দিক থেকে সবচেয়ে বেশি কানে শোনার সমস্যায় ভুগছেন রিক্সাচালকরা। তাদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশের এ সমস্যা রয়েছে। এর পরেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা ট্রাফিক পুলিশের, ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া লেগুনার চালকদের ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ ভুগছেন কানে শোনার সমস্যায়।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজপথে শব্দদূষণ এবং শব্দদূষণের কারণে রাজপথে কর্মরত পেশাজীবীদের শ্রবণ সমস্যা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সাইকা নিজামের গবেষণায় উঠে এসেছে এ চিত্র।
গবেষণায় ৫টি সিটি করপোরেশনে (ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং সিলেট) শব্দদূষণের মাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে। এসব এলাকায় রাজপথে কর্মরত ৬৪৭ জন পেশাজীবীর (ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্ট, বাসচালক ও হেলপার, পিকআপ চালক, সিএনজিচালক, লেগুনাচালক, দোকানদার, মোটরবাইকচালক, রিক্সাচালক এবং সেডান/এসইউভি চালক) শ্রবণশক্তি পরিমাপ করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সিটি করপোরেশন বিবেচনায় কানে শোনার সমস্যা সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায়, প্রায় ৫৫ শতাংশ। সিলেটে ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ, ঢাকায় ২২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং রাজশাহীতে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
সিটি করপোরেশনগুলোর রাজপথে শব্দের মাত্রা ছিল ৮৪ থেকে ৯৯ ডেসিবল, যা অনুমোদিত মাত্রার (৬০ ডেসিবল) চেয়ে বেশি। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতি চারজনে একজন (২৫.৪%) কানে কম শোনার সমস্যায় ভুগছেন। এদের ৭ শতাংশেরই এই মুহূর্তে হিয়ারিং এইড ব্যবহার জরুরি।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৪৩২ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কানে শোনার সমস্যায় ভুগছেন যাদের চিকিৎসার পাশাপাশি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করা প্রয়োজন। এদের ৮০ শতাংশই উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করেন এবং এর অর্ধেকের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা এড়ানো যেত।