আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর শরীরে কয়েলের ছ্যাঁকা

যৌতুকের জন্য গৃহবধূর শরীরে কয়েলের ছ্যাঁকা
যৌতুকের জন্য গৃহবধূ রিক্তা বেগমের শরীরে কয়েলের ছ্যাঁকা ও নির্যাতন মামলার আসামি স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। আজ রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা শহরের গানাসাস মার্কেটের সামনে এ মানববন্ধন পালন করেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার পশ্চিম কোমরনই দশানী এলাকাবাসী। বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালে পশ্চিম কোমরনই দশানী এলাকার মৃত ইমদাদুল হক ইদুর মেয়ে রিক্তা খাতুনের সঙ্গে উত্তর গিদারী ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল আলিম মন্টুর ছেলে বাবলু মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই বাবলু মিয়া পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। যৌতুকের টাকা না দেয়ায় তার মা লাইজু বেগম, বড় ভাই লাবলু ও অনিক হাসান লেবুদের সহযোগিতায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রায়ই মারধর করতেন। এ ঘটনায় গিদারী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ইদু বিষয়টি নিয়ে সালিশ বৈঠক করে দেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে বাবলু মিয়া ব্যবসা ও বাড়ি করার অজুহাতে রিক্তার বাবার কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু তারপরও যৌতুকের টাকার জন্য বাবলু ও তার পরিবারের লোকজন রিক্তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান। গেলো ২৩ আগস্ট রিক্তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে বাবলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন পরিকল্পনা করে রিক্তার হাত বেঁধে মশা মারার কয়েলের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দেন। এতে রিক্তা অসুস্থ হয়ে পড়লে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর রিক্তা খাতুন বাদী হয়ে সদর থানায় বাবলু মিয়া, তার মা লাইজু বেগম, ভাই অনিক হাসান লেবু ও লাভলু মিয়াকে আসামি করে একটি মামলা করেন এবং বাবার বাড়িতে চলে যান। এদিকে মামলা করার পর থেকেই বাবলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য রিক্তা ও তার ছোট ভাই নাহিদসহ পরিবারের লোকজনকে হত্যাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান। ফলে আসামিদের ভয়ে রিক্তা খাতুনের পরিবার চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আসামিরা নানাভাবে হুমকি দেয়ার পর নিজ এলাকায় ঘোরাঘুরি করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। তাই বক্তারা আসামিদের অবিলম্বে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রিক্তু প্রসাদ, সদর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুজন প্রসাদ, সাম্যবাদী আন্দোলন নেতা সবুজ মিয়া, সুরবানী সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাবু, সাংস্কৃতিক কর্মী মানিক বাহার, কামরুজ্জামান চান, নির্যাতিতা রিক্তা খাতুন, রিক্তা খাতুনের মেয়ে নাজনীন আক্তার বৈশাখী, রিক্তার ভাই নাহিদ হাসান, আনোয়ারুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, ভুট্টু মিয়া, মুকুল মিয়া, জোবায়ের হোসেন, মেহেদী হাসান, কনা বেগম, মোছা. দুলালী বেওয়া প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন যৌতুকের | জন্য | গৃহবধূর | শরীরে | কয়েলের | ছ্যাঁকা