রুশ ফৌজের আয়ত্তে থাকা ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তের দোনেৎস্ক অঞ্চল ছিনিয়ে নিতে নতুন করে অভিযানে নেমেছে ইউক্রেন সেনা। রাজধানীর কিভে ধারাবাহিক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হানার মধ্যেই বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দোনেৎস্কে প্রত্যাঘাত করেছে ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী। সেখানে ইউক্রেন সেনার গোলাবর্ষণে গুরুতর জখম হয়েছেন রুশ প্রশাসনের দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্তান টাইমস’র এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দোনেৎস্কের একটি হোটেলে বৈঠক করছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম উপদেষ্টা তথা সে দেশের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি রোগোজিন। সে সময় হঠাৎ ইউক্রেন সেনার গোলা আছড়ে পড়ে। গুরুতর জখম হন রোগোজিন এবং মস্কো স্বীকৃত ‘সার্বভৌম’ দোনেৎস্ক পিপল্স রিপাবলিকের মুখ্য প্রশাসক ভিতালি খোটসেঙ্কো।
বুধবারই (২১ ডিসেম্বর) রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিভিন্ন দেশকে অস্ত্র-সাহায্যের আবেদন জানাতে আমেরিকা সফরে গিয়েছেন জেলেনস্কি। তার অনুপস্থিতির মধ্যে ইউক্রেন সেনার এই প্রত্যাঘাত সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। রুশ ফৌজের আয়ত্তে দোনেৎস্ক অঞ্চলের সামরিক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী রোগোজিন।
গেলো ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার আগেই রুশ জনগোষ্ঠী-গরিষ্ঠ দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক (একত্রে এই দুই অঞ্চলকে ডনবাস বলা হয়) অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন পুতিন। গত কয়েক বছর ধরে সেখানে মস্কো-পন্থী সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলি সক্রিয়। কিন্তু এখনও ডনবাসে নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি মস্কো।
সেপ্টেম্বরের গোড়ায় ইউক্রেনের ডনবাসের পাশাপাশি জাপোরিজিয়া ও খেরসনের অধিকৃত অঞ্চলে গণভোট করিয়ে সেগুলিকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির ঘোষণা করেছিল পুতিনের সরকার। মস্কোর দাবি, ইউক্রনের ১৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ওই চারটি অঞ্চলেরই ৮০ শতাংশের বেশি অধিবাসী রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তিকরণের পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
২০১৪ সালে দক্ষিণ ইউক্রেনের ক্রাইমিয়াতে একই কায়দায় গণভোট করিয়ে দখল নিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে অনেকটাই। ইউক্রেন ফৌজের তীব্র প্রত্যাঘাতে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে খেরসন ছেড়ে পিছু হটেছে রুশ ফৌজ।