বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী এপ্রিল মাসে। এর আগেই ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। ইতোমধ্যে এর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে। সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ যাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনীত করবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন। তাই রাষ্ট্রপতি পদে ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন, সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয়।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে রাষ্ট্রপতি পদে পাঁচটি নাম বেশি আলোচনায় রয়েছে।
তারা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। এর মধ্যে যে কেউ বসতে পারেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে।
এ ছাড়া শুরুর দিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নাম আলোচনায় ছিল। তবে এখন সেই আলোচনা অনেকটাই কমে গেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও বিভিন্ন ব্যক্তির মতামত নিচ্ছেন। যেসব নাম নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে, সেগুলো খসড়া বলা চলে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, যে নামগুলো আলোচনায় আছে, তা দলীয় সভাপতিরও বিবেচনায় আছে। তিনি এখনও নিজের পছন্দের কথা প্রকাশ করেননি। চলতি মাসের শেষের দিকে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম জানা যাবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে কে আসতে পারেন, এ বিষয়ে কাজ করছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি করা হবে। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, (১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে আগামী ২৪ এপ্রিল শেষ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ। সেই হিসেবে আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে এই নির্বাচন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া আমরা ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। যথাসময়ে নির্বাচন হবে। আইন অনুযায়ী স্পিকারের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নির্বাচন প্রসঙ্গে আলাপ হবে।
এর আগে, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। ওই সময় ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত হন মো. আবদুল হামিদ।