আর্কাইভ থেকে শিল্প

অনিশ্চয়তা নিয়েই বাড়িমুখী পোশাক শ্রমিকরা

অনিশ্চয়তা নিয়েই বাড়িমুখী পোশাক শ্রমিকরা

ঈদের ছুটির আগেই তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধের জোর দাবি জানিয়েছিল শ্রম মন্ত্রণালয়সহ শ্রমিক সংগঠনগুলো। ইতোমধ্যে কারখানাগুলো প্রায় শতভাগ বেতন-বোনাস পরিশোধ করেই শ্রমিকদের ছুটি দিয়েছে। যদিও শ্রমিক নেতারা বেতন-বোনাস নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, অন্য ঈদের চেয়ে এবার বেশি সংখ্যক কারখানায় বেতন-বোনাস হলেও তা শতভাগ নয়।

এদিকে অনেক কারখানা ২৫ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। ঈদের ছুটি পেলেও অনিশ্চয়তা নিয়েই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন শ্রমিকরা। তারা জানেন না, ছুটি শেষে যদি লকডাউনে যানবাহন বন্ধ থাকে তবে কীভাবে কারখানায় ফিরবেন। মালিক পক্ষ বলছে, শ্রমিকরা কীভাবে কাজে ফিরবেন এর দায় সরকারকে নিতে হবে। তারা শ্রম আইন মতেই ছুটি নিশ্চিত করেছেন।

বিজিএমইএ বলছে, চলমান কারখানাগুলোর মধ্যে স্টাইল ক্র্যাফট ছাড়া সব কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ সম্পন্ন হয়েছে। ওই কারখানাটির শ্রমিকরা যাতে বেতন পান এ নিয়ে কাজ চলমান। বিকেএমইএ বলছে, তাদের সদস্যভুক্ত শতভাগ কারখানা মালিক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করেই ছুটি দিয়েছে।

শিল্প পুলিশের একটি তথ্য বলছে, সারাদেশে মোট ৭ হাজার ৮২৪টি বিভিন্ন কারখানার মধ্যে জুন মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কারখানা। বোনাস পরিশোধ করেছে ৫৫ শতাংশ কারখানা। হিসাব বলছে, এখনো ৪৫ শতাংশ কারখানা বোনাস দেয়নি আর ৫ শতাংশ কারখানায় বেতন হয়নি।

এর আগে চলতি মাসের ১৩ তারিখ শ্রম ভবনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ১৯ জুলাইর মধ্য বেতন দিতে হবে মালিকপক্ষকে। যেসব কারখানা মালিক বেতন-বোনাস পরিশোধে ব্যর্থ হবেন তাদের বিষয়ে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে।

পোশাক মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর মতে, চলমান শতভাগ কারখানা মালিক-শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে।

বিকেএমইএ বলছে, কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই তাদের শতভাগ কারখানার মালিক বেতন এবং বোনাস পরিশোধ করেছেন। এ বিষয়ে বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘আমাদের শতভাগ কারখানায় বেতন ও বোনাস হয়েছে। বেতন-বোনাস পরিশোধ করেই স্ব স্ব মালিক ছুটি দিচ্ছেন কয়েক দিন ধরে।’

ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউনে খাদ্যপণ্যের মিল-কারখানা, পশুর চামড়া ও ওষুধ উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি কারখানা ও গণপরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার, এ সময় তাহলে কীভাবে পোশাক কারখানা চলবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখন প্রচুর কাজের অর্ডার আছে কারখানায়। সময় মতো পণ্য ডেলিভারি না হলে বায়ার চলে যাবে। তাছাড়া কারখানা খোলা থাকলে শ্রমিক নিরাপদে থাকেন। বাইরে থাকলে সংক্রমণের শঙ্কা থাকে।’

ছুটির বিষয়ে শ্রমিক নেতা প্রকাশ দত্ত বলেন, কারখানা ২৫ কিংবা ২৭ তারিখ পর্যন্ত ছুটি হবে আর শ্রমিকরা বাড়ি যাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তারা কীভাবে ফিরবেন এর দায়িত্ব মালিককে নিতে হবে। মালিকের মনোভাবের কারণে তারা শ্রমবান্ধব হতে পারেনি। পরিবহন নিয়ে মালিকপক্ষের কথা সমন্বয়হীনতা।

শুভ মাহফুজ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন অনিশ্চয়তা | নিয়েই | বাড়িমুখী | পোশাক | শ্রমিকরা