ফুটবলপ্রিয় মানুষের কাছে দিয়েগো ম্যারাডোনা এক অপার বিস্ময়ের নাম। প্রিয় এই তারকার সঙ্গে সাক্ষাৎ, ছবি তোলা কিংবা একটা অটোগ্রাফের নেশা থাকাটা স্বপ্নের মতোই। তবে সবার হয়তো সে ভাগ্য হয় না।
দূর থেকেই ভালোবেসে যেতে হয়েছে সমর্থকদের। কারো কারো হয়তো তাকে স্বচক্ষে দেখতে না পারার আফসোসটুকুও রয়ে গেছে। আফসোস থাকাটাই যে স্বাভাবিক। কারণ তিনি তো সাধারণ নন। তিনি ছিলেন ফুটবল ঈশ্বর।
ম্যারাডোনা চলে গেছেন। কিন্তু তার মরদেহকে ঘিরে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার কমতি ছিলো না ভক্তদের। জীবদ্দশায় তাকে দেখার শখ বা ছবি তোলার বাসনা অনেকেরই ছিলো। কিন্তু সেই সুপ্ত বাসনা পূরণ করলেন সৎকারকর্মী মোলিনো। ম্যারাডোনার মরদেহের সঙ্গে ছবি তুলে হয়েছেন সমালোচিত। শুধু সমালোচিতই নন, একেবারে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাকে।
ম্যারাডোনার কফিনের সঙ্গে ছবি তোলা এই ব্যক্তি মূলত প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে নিয়োজিত মৃতদেহ সৎকারকর্মী।
ম্যারাডোনার মতো কিংবদন্তীকে কাছে পেয়ে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারেননি তিনি। মরদেহের কফিন খুলে পোজ দিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারও করেছেন তিনি। স্বভাবতই ম্যারাডোনা ভক্তরা এই ছবি দেখে সমালোচনার ঝড় তোলেন।
ম্যারাডোনার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা এই ছবি তোলায় ভীষণ চটেছেন। এমনিতেই ফুটবল কিংবদন্তির আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা তার মৃত্যুতে চিকিৎসকদের দিকে আঙুল তুলেছেন। এরমধ্যে মরদেহের সঙ্গে ছবি তোলার ঘটনায় নিজের সব রাগ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। এমন অসম্মানজনক কাজ কেউ কীভাবে করতে পারে, বুঝতে পারছেন না মোরলা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা পোস্টে তিনি শাস্তি দাবি করেছেন, লিখেছিলেন, ‘আমি বন্ধুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে, আমি তখনই শান্ত হবো, যখন এই ঘৃণ্য কাজ যে করেছে, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।’
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর, ছবিটি যিনি তুলেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন, তার নাম ডিয়েগো মোলিনো। ইতিমধ্যে তাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে এই শাস্তিতেও হয়তো শেষরক্ষা হচ্ছে না ওই কর্মীর। কারণ ম্যারাডোনা ভক্তরা শান্ত হননি। সামাজিক যোগামাধ্যমগুলোতে ওই কর্মীর আরও বড় শাস্তির দাবি তুলেছেন তারা।
বুধবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রায় একাই বিশ্বকাপ জেতানো কিংবদন্তি। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছিল তার। হাসপাতাল ছেড়ে ফিরেছিলেন নিজ বাড়িতে। কে জানতো, পৃথিবীতে তার জন্য অপেক্ষা করছিল আর কয়েকটা দিন। মাত্র ৬০ বছর বয়সে কোটি ফুটবলভক্তকে কাঁদিয়ে অন্য পারের বাসিন্দা হলেন বাঁ পায়ে অসংখ্য মুহূর্তের জন্ম দেয়া ফুটবল ঈশ্বর।
এস