আইন-বিচার
মানবতাবিরোধী অপরাধ: ময়মনসিংহের ৫ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
![](https://bayanno.com/wp-content/uploads/2023/01/News-Image-1-57.jpg)
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদসহ পাঁচ আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। অপর দুই সদস্য বিচারপতি হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের এ মামলায় রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর এই মামলায় রাষ্ট্র ও আসামি উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ রাখা হয়।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম।
প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, এ মামলায় আসামি আটজন। এরমধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনজন মারা গেছেন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আব্দুল হান্নান, তার ছেলে মো. রফিক সাজ্জাদ (৬২) ও মিজানুর রহমান মিন্টু (৬৩)। গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন- মো. হরমুজ আলী (৭৩), মো. আব্দুস সাত্তার (৬১) ও খন্দকার গোলাম রব্বানী (৬৩)। আর দুইজন আসামি পলাতক। তারা হলেন- ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদ (৬৯) ও মো. ফখরুজ্জামান (৬১)।
আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থার আনা অভিযোগ
প্রথম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাই লেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণ, নির্যাতনের পর জিপের পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুম।
দ্বিতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ২ অগাস্ট ত্রিশাল থানার বৈলর হিন্দুপল্লী ও মুন্সিপাড়ায় অগ্নিসংযোগ, সেন্টুকে গুলি করে হত্যা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের দুজনকে গুলি করে আহত, শহীদ আবদুর রহমানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও গুলি করে হত্যার ঘোষণা।
তৃতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ৭ থেকে ৯ অগাস্টের মধ্যে বৈলরের আ. রহমান মেম্বারকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও লাশ গুম।
চতুর্থ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে খন্দকার আব্দুল আলী রতনকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও লাশ গুম।
পঞ্চম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে মো. আবেদ হোসেন খানকে আটক, নির্যাতন ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর। এ ছাড়া ৭ থেকে ১০ আগস্টের মধ্যে কে এম খালিদ বাবুকে অপহরণ, আটক ও নির্যাতন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা ময়মনসিংহ শহরের জেলা পরিষদের ডাক বাংলো, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল, অভিযুক্ত এম এ হান্নানের রামবাবু রোডের ৫৯ নম্বর বাড়িকে ‘টর্চারসেল’ হিসেবে ব্যবহার করতেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আইন-বিচার
অর্থ আত্মসাত মামলার অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. ইউনূস
![আদালতে-ড.-ইউনূস](https://bayanno.com/wp-content/uploads/2024/05/আদালতে-ড.-ইউনূস.jpg)
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আবেদনে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়েছে।
সোমবার (০৮ জুলাই) ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন এ আবেদন দায়ের করেন।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হবে।
গেলো ১২ জুন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ১৫ জুলাই এ বিষয়ে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ আদেশ দেন।
এর আগে গেলো ২ জুন অভিযোগ গঠনের ওপর উভয় পক্ষের শুনানির পর আদেশের জন্য রেখেছিলেন আদালত। ড. ইউনূসসহ আসামিদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
পরে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হবে। এজন্য সাক্ষ্যগ্রহণ দুই মাস পেছাতে আবেদন করেছিলাম। আদালত এক মাস সময় দিয়ে ১৫ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ রেখেছেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হবে।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গেলো বছরের ৩০ মে মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, ইউনূস ও নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকম বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। তবে ব্যাংকে হিসাব খোলা হয় একদিন আগেই। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট চুক্তি হয় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল। সেটেলমেন্ট চুক্তিতেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। ‘ভুয়া’ সেটেলমেন্ট চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় স্থানান্তর করা হয় ২০২২ সালের ১০ মে।
পরে ২২ জুন অনুষ্ঠিত ১০৯তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামান, মাইনুল ইসলাম ও ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা করে স্থানান্তর করা হয়।
একইভাবে আইনজীবী মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দি সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ ও আইনজীবী মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।
দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সেটেলমেন্ট চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে উক্ত অর্থ আত্মসাত করেছেন।
এসি//
আইন-বিচার
১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কোকা-কোলাকে লিগ্যাল নোটিশ
![কোকাকোলা,-আইনি-নোটিশ](https://bayanno.com/wp-content/uploads/2024/07/কোকাকোলা-আইনি-নোটিশ.jpg)
বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেডকে এবং দ্যা কোকা-কোলা কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রোববার (০৭ জুলাই) আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের ডাকযোগে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে এ নোটিশটি পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গেলো ৯ জুন প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের দ্বারা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়নি, পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছে কোকা-কোলা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনে বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ২৯৫ক এবং সাইবার সিকিউরিটি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৮ ও ৩৫ এর অধীনে কোকা-কোলা কোম্পানি অপরাধ করেছে।
নোটিশে দাবি করা হয়, কোক স্টুডিও বাংলা বহুজাতিক কোম্পানি কোকা-কোলা কর্তৃক রোপিত একটি বিষবৃক্ষ। এই বিষবৃক্ষের বিষফল কয়েক বছর পরেই আমরা সরাসরি পেতে শুরু করব। এটি জাতীয়তাবাদের ভিত নড়বড়ে করার পাঁয়তারা। বিভিন্ন কালজয়ী সৃজনশীল মৌলিক শিল্পকর্মকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে আসছে কোক স্টুডিও বাংলা, তথা কোকা-কোলা। এর ফলে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৩কে পদদলিত করা হচ্ছে। কোকা-কোলা কোক স্টুডিওর মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪০ ও ৪৩ এরও লঙ্ঘন করে চলছে প্রতিনিয়ত। এতে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০ সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষের সংস্কৃতি ও অস্তিত্ব বিরাট হুমকির মুখে নিপতিত হয়ে আছে। প্রত্যেক ভূ-খণ্ডের নিজস্ব সংস্কৃতি ও স্বকীয়তা থাকে, থাকে নিজস্ব দাবি। কৃষ্টি-কালচার ও সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বাংলার রয়েছে নিজস্বতা। বাংলা সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী। জগাখিচুড়ি সংস্কৃতির আবহ গড়ে তোলা এবং বিজাতীয় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে আকৃষ্ট করানোর মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জাতীয়তাবাদ ও নিজস্ব রুচিশীলতায় পরিবর্তন আনার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে কোকা-কোলা। অথচ বাংলা সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ ভান্ডার ও অর্জনের মানহানি করে, শিল্প গুণাগুণ নষ্ট করে ও শৈল্পিক অর্জনকে বিকৃত করে কোকা-কোলা কোম্পানি সামগ্রিকভাবে অপরিসীম ক্ষতি করে আসছে বিগত দুই বছর ধরে।
এর ক্ষতিপূরণ টাকার অঙ্কে কোটির উপরে। সমৃদ্ধশালী, রুচিসম্মত শিকড়কে আঁকড়ে ধরা বাংলা সংস্কৃতিকে মনে ধারণ করলে দেশে সংবিধান ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, প্রজন্ম হয়ে উঠবে দেশপ্রেমিক। পাশাপাশি কোকা-কোলার মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় নামবে ধস। দেশের মানুষ সচেতন হয়ে উঠবেন, মানুষের অস্তিত্বের ভিত আরও মজবুত হবে, পরের প্রজন্ম বাংলাকে করবে আরও সমৃদ্ধশালী।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে এবং সংবিধানের মূলনীতিকে আঘাত দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহিতা করছে কোকা-কোলা।
নোটিশে কোক স্টুডিও বাংলার কার্যকলাপ কোকা-কোলা অনতিবিলম্বে বন্ধ না করলে কেন সংবিধান ও আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে।
আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের বলেন, বিভ্রান্তিকর এই বিজ্ঞাপন দেখে আমার পরিবারের সদস্যসহ বাংলাদেশের আপামর জনতার অনেকেই গেলো ৯ জুনের পরে কোক ক্রয় করে পান করেছেন, যা ভোক্তার সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রতারণা করার শামিল। এ ধরনের ঠকবাজির ফলে জনগণের সাংবিধানিক প্রতিবাদ কর্মসূচিকে যেমন নস্যাৎ করার চক্রান্ত করা হয়েছে ঠিক একইভাবে সাধারণ মানুষের মূল্যবোধ ও চেতনাকে আঘাতপ্রাপ্ত করা হয়েছে। কোকা কোলার অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণমূলক অপপ্রচারের ফলে অসামান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের জনগণের, যার সমস্ত দায়ভার কোকা কোলা কোম্পানির। আমার, আমার মক্কেলগণ, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ অগণিত মানুষের অর্থনৈতিক, বিশ্বাসমত ও সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানা হয়েছে, যার মূল্যমান কোটি কোটি টাকার বেশি।
এ আইনজীবী আরও বলেন, আমি নিজে বিইউপি আইন অ্যালামনাই সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে পৃথিবীব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ অন্তত ১০টি দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং অ্যালামনাই সংগঠনের (বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন) নেতৃবৃন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের কাছে চিঠি লিখেছি। আমার পাঠানো চিঠির পাণ্ডুলিপি লিগ্যাল নোটিশের সঙ্গে সংযুক্তি আকারে দেয়া হয়েছে।
লিগ্যাল নোটিশ অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনগণ সংবিধানের ৩৭, ৩৮, ৩৯ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সরাসরি প্রয়োগ ঘটানোর মাধ্যমে কোকা কোলাকে বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। যে সিদ্ধান্ত দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫ এর সঙ্গেও সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ। কোকা-কোলা বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের সাংবিধানিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ সুপ্রয়োগ ঘটাচ্ছেন বাংলাদেশের জনগণ। কিন্তু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার মাধ্যমে কোকা কোলা কার্যত বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। যে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই সেই দেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম ফিলিস্তিনের উপর অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলকভাবে চাপানো যুদ্ধে অবৈধ ইসরাইলের পক্ষ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী অপরাধ করেছে, যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। প্রচলিত দণ্ডবিধি অনুযায়ী বাংলাদেশে কোকা কোলা জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গসহ আরও বেশ কিছু অপরাধ সংঘটন করেছে।
গেলো ৯ জুন প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে কোকা কোলার বিজ্ঞাপনে মিথ্যা তথ্য প্রদান স্পষ্টরূপে পরিষ্কার। জনগণের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোকা-কোলা আর্থিকভাবে লাভবান হতে চেয়েছিল। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে দেশে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে সে দেশের মানুষের মূল্যবোধ, চেতনা এবং বিশ্বাসকে আঘাত দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর পাঁয়তারা বরদাস্তযোগ্য নয়। পাশাপাশি যে দেশকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকার করে না সেই দেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এবং সংবিধান লঙ্ঘন করে ও প্রচলিত আইনে নানা ধরনের গুরুতর অপরাধ করে কোকা-কোলা কোনোভাবেই বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে না।
গেলো ৯ জুন থেকে কোকা-কোলার যেকোনো ধরনের মুনাফা করা অনৈতিকই শুধু নয়, অবৈধও বটে। বন্ধুপ্রতিম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং বন্ধুপ্রতিম দেশের বিরুদ্ধাচরণ বাংলাদেশের সংবিধান এবং প্রচলিত ফৌজদারি আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। কোকা-কোলা বাংলাদেশের সংবিধান এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী। এই প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।
একদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে ব্যবসায় মুনাফা করার লক্ষ্যে বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট করার অপচেষ্টা করেছে কোকা-কোলা; অন্যদিকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের বিরুদ্ধে সুস্পষ্টভাবে ন্যক্কারজনক অবস্থান দেখা যাচ্ছে। গত ৯ জুনের পর কোকা-কোলা যত পণ্য বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি করেছে তার সম্পূর্ণ অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। এই বিজ্ঞাপন না সরালে কেন কোকা কোলার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে না তা জানানোর জন্য দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি এবং কোকা-কোলা কোম্পানির বাংলাদেশি প্রতিনিধি কোম্পানি কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেডকে ৭ দিন সময় দেয়া হচ্ছে।
নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এর ধারা ৪১ মোতাবেক কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্য উপকরণ বিপণন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত বিজ্ঞাপনের শর্তাদি লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্তিকর বা অসত্য তথ্য প্রদান করে অথবা মিথ্যা নির্ভরতামূলক বক্তব্য প্রদান করে ক্রেতার ক্ষতিসাধন করতে পারবেন না। অথচ কোকা কোলা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন বানিয়ে বাংলাদেশের ক্রেতা সাধারণের অসামান্য ক্ষতি সাধন করেছে, এই ক্ষতিপূরণের মূল্যমান কোটি টাকার বেশি।
এসি//
আইন-বিচার
পরিবহনে বিজ্ঞাপনের জন্য ফি নিতে পারবে না বিআরটিএ : হাইকোর্ট
![হাইকোর্ট](https://bayanno.com/wp-content/uploads/2024/02/mkmkmk-1.jpg)
পরিবহনের গায়ে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিবহনের মালিকের কাছ থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কোনো ফি নিতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে চলতি বছর শুরুর দিকে আইন ও বিধির অসামঞ্জস্যতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট করেন কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহিন শাহপার হাসান।
রোববার (৭ জুলাই) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী আহসানুল করিম জানান, সংবিধানের ৮৩ অনুচ্ছেদে উল্ল্যেখ আছে আইন বা কর্তৃত্ব ছাড়া কোনো কর আরোপ বা সংগ্রহ করা যাবে না। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর কোথাও বিজ্ঞাপন ফি’র উল্লেখ না থাকলেও ২০২২ সালে বিধিমালা দিয়ে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। তাই বিআরটিএ বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য গাড়ির মালিকের কাঝ থেকে কোনো ফি আদায় করতে পারবে না। তবে বিআরটিএ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে জানিয়েছেন বিআরটিএর আইনজীবী রাফিউল ইসলাম।
আই/এ
- ঢাকা6 days ago
গোপালগঞ্জে শিক্ষকের মাথায় পচা ডিম ভাঙ্গলো ছাত্ররা!
- জাতীয়7 days ago
হাতিরঝিল এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পেল যে বাহিনী
- ঢালিউড6 days ago
দীঘির বিয়ে? যা বললেন অভিনেত্রীর বাবা সুব্রত
- আন্তর্জাতিক7 days ago
জেলের মধ্যেই কয়েদির সাথে শারীরিক সম্পর্ক, বিপাকে নারী কর্মকর্তা
- অন্যান্য6 days ago
এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা
- ফুটবল5 days ago
নির্ধারিত হলো কোপার কোয়ার্টার ফাইনালের দল ও সময়
- অপরাধ6 days ago
মেয়ের পরিকল্পনায় খুন হন সাবেক এমপির স্ত্রী: পিবিআই
- ক্রিকেট4 days ago
বিসিবির কোচ হিসেবে নিয়োগ পেলেন তিন সাবেক ক্রিকেটার
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন