Connect with us

জাতীয়

‘শীর্ষ ধনী’ এখন দেশ চীন

Published

on

মহামারি করোনর কারণে সারা বিশ্বে বড় পরিবর্তন এসেছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। করোনার হানায় অস্বস্তিতে পড়েছে তথাকথিত বিত্তশালী দেশগুলোও। গত দু’বছরে বেকারত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনি স্বাস্থ্যসহ জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে সরকারগুলো। 

করোনাকালীন সংকটের কথা বাদ দিলে গত দুই দশকে বিশ্বের অর্থসম্পদ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। আর সেই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী দেশ এখন চীন।

বিশ্ব অর্থনীতির ৬০ শতাংশের বেশি দখলে রাখা শীর্ষ ১০ ধনী দেশের আয়-ব্যয় তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়েছিল আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকিনসে অ্যান্ড কোম্পানি। গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে সেই সমীক্ষার ফল।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০০০ সালে বৈশ্বিক ধনসম্পদের পরিমাণ ছিল যেখানে ১৫৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, দুই দশক পরে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৪ ট্রিলিয়ন ডলারে। আর এই সময়ে অর্থনৈতিক শক্তি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চীনের। গত বিশ বছরে গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ সম্পদ বেড়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশই চীনাদের অবদান।

সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগ দেওয়ার আগে ২০০০ সালে চীনের সম্পদ ছিল মাত্র সাত ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ ট্রিলিয়ন ডলারে।

Advertisement

তবে একাধিক নতুন নীতির কারণে প্রতিযোগিতায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত দুই দশকে মার্কিনিদের সম্পদ দ্বিগুণের বেশি বাড়লেও চীনের তুলনায় তা বেশ কম। ২০২০ সালে তাদের অর্থসম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ ট্রিলিয়ন ডলার।

তবে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশেই একটি জায়গায় অভাবনীয় মিল। উভয় দেশেই দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সম্পদ রয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ ধনী পরিবারের হাতে এবং তাদের অংশ ক্রমেই বাড়ছে।

ম্যাকিনসে অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্ব অর্থনীতিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে মূলত রিয়েল এস্টেট বা আবাসন বাণিজ্য। এর প্রভাব পড়ছে গোটা পৃথিবীতে। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মতো শীর্ষ অর্থনীতির দেশেও মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে বাড়ি বা জমির দাম। ফলে সেখানে গৃহহীনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

Advertisement

জাতীয়

আজ মধ্যরাত থেকে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ সাগরে

Published

on

মাছ-ধরা-বন্ধ-সাগরে

সাগরে মাছের উৎপাদন ও প্রজনন বাড়াতে রোববার (১৯ মে) মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞা পালনে ইতোমধ্যে কুয়াকাটা উপকূল এলাকাসহ মৎস্য বন্দর আলিপুর-মহিপুরের জেলেরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। কিছু জেলে নির্ধারিত সময়ের আগেই সাগরে মাছ শিকার করছেন না।

সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘোষিত ৬৫ দিনের সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে রোববার রাত ১২টায়। এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে রোববার (২৩ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত।

বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন সমুদ্রে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়াতে জেলেরা পড়বেন অস্তিত্ব সংকটে। একদিকে বছরে দুই বার নিষেধাজ্ঞা। অপরদিকে এই বছর ভরা মৌসুমে সাগরে মাছের আকাল পড়েছে। ঋণের বোঝা এবং ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে জেলেরা রয়েছে চরম বিপাকে। এদিকে দীর্ঘদিন কর্মহীন সময় পার করবেন তারা। তবে সরকার এই ৬৫ দিনের অবরোধের জন্য জেলে প্রতি ৫৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ করেছে।

সমুদ্রে বর্তমানে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজননকাল হওয়ায় বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদীর মোহনায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমানায় সব ধরনের মৎস্য শিকার, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণায় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

উপকূলীয় জেলেরা জানান, সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সমুদ্রে মাছ শিকার করা যাবে না। এতে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সুরক্ষিত থাকলেও উপকূলে এই পেশার সঙ্গে জড়িত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ থাকবে দীর্ঘ দুই মাস।

Advertisement

উপকূলের জেলে মো. ইউনুস আলী বলেন, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। এনজিওর লোন নিয়ে মানসিক দুশ্চিন্তায় আছি। আর মহাজনের দাদনের টাকা কেমনে পরিশোধ করবো।

ট্রলার মাঝি একলাস গাজী বলেন, ট্রলারে কাজ করে অনেক টাকা ঋণ হয়েছে, তা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। আবার ৬৫ দিনের অবরোধ আসলে এই ঋণ পরিশোধতো দূরের কথা ঋণের বোঝা আরও বেড়ে যাবে।

অনেক জেলে অভিযোগ করে বলেন, অবরোধকালীন সময়ে প্রতিবছর ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমানায় মাছ ধরলেও কোনো ভূমিকা দেখা যায় না প্রশাসনের। তা না হলে আমাদের জালে চাহিদানুযায়ী মাছ ধরা পড়ত। তারা আরও দাবি করে বলেন, সরকার দু’বছরের স্থলে বছরে একবারসহ ভারতের সময়সীমার সঙ্গে যেনো নিষেধাজ্ঞা (অবরোধ) দেয়া হয়।

বাবা-মায়ের দোয়া ফিস পান্না মিয়া হাওলাদার বলেন, পটুয়াখালীর সবচেয়ে বড় দুটি মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর। এখান থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ চালান হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে গেলো কয়েক বছর যাবৎ বছরে দু’বার নিষেধাজ্ঞা, বৈরি আবহাওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে এই পেশা এখন হুমকির মুখে।

ট্রলারের মালিক আবুল হোসেন বলেন, জমিজমা বিক্রি করে ট্রলারের ব্যবসা শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখিনি। বর্তমানে এই ট্রলার বিক্রি করে মানুষের ধার দেনা দিয়েছি। এখন মাছের ব্যবসা ছেড়ে নিজের অল্প কিছু জমি আছে তাতে কৃষিকাজ করি।

Advertisement

মহিপুর আড়ৎদার মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ রাজা বলেন, সরকার সমুদ্রে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি ও জেলেদের স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। তবে সেটা যদি মৎস্য পেশাকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে তাহলে অতি সম্প্রতি এই পেশায় সংকট দেখা দিবে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রজনন সময় এখনও থেকে দেড় মাস বাকি। তাই আমাদের দাবি এই ৬৫ দিনের অবরোধ একমাস পিছিয়ে দেওয়া মাছের প্রজননের সঠিক সময় দেওয়া হোক।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলেদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলেদের ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও চলছে।

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

জাতীয়

মেট্রোরেলের ৫ স্টেশন হবে উত্তরা-টঙ্গী রুটে

Published

on

মেট্রোরেল

রাজধানীর দ্রুতগামী গণপরিবহণ মেট্রোরেল বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করছে। মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ রুটটি বর্তমানে মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এখন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত কাজ সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বর্ধিত এমআরটি লাইনে উত্তরা উত্তর স্টেশনের পরে আরও ৫টি স্টেশন হবে।

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ডিএমটিসিএল আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্র্যান্ডিং সেমিনারে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এ রুটের কাজ শেষ হলে মেট্রোরেল অতিরিক্ত ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। উত্তরা উত্তর থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত এ রুটের দৈর্ঘ্য হবে ৭.৫ কিলোমিটার। এ রুটে নতুন ৫ স্টেশন হবে— দিয়াবাড়ী বাজার, সোনারগাঁও জনপদ রোড পূর্ব, পশ্চিম, টঙ্গী বাজার, টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন।

মেট্রোরেলের এমডি দাবি করেছেন, এমআরটি রুট অ্যালাইনমেন্ট বরাবর যানজট কমে গেছে।

এর আগে, মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত মেট্রোরেল বর্ধিত করতে সমীক্ষা চলমান রয়েছে। মূলত টঙ্গী রেলস্টেশন ও সড়ক জংশনকে সংযুক্ত করতে পারলে ওই অঞ্চলের মানুষের সুবিধা বাড়বে। এই পথ চালু হলে টঙ্গী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাত্রাপথ হবে ৪৮ মিনিটের।

Advertisement

ভ্যাট বসানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর আগে মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো হয়েছিল। তখন কথা বলে জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন সেটা আবার ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা বলা হচ্ছে। যদি ভ্যাট দিতে হয় তাহলে এটি যাত্রীর দিতে হবে। তাই এটি রিভিউ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানের জানানো হয়, মেট্রোরেল চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম তিনবার বেড়েছে। কিন্তু মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এখন ভ্যাট যুক্ত হলে ভ্যাটের টাকা যাত্রীদেরকে দিতে হবে মেট্রোরেলের পক্ষে সেটি বহন করা সম্ভব না। ফলে মেট্রোরেলের ভাড়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে।

সেমিনার উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরি প্রমুখ।

 

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

জাতীয়

এভারেস্টের চূড়া ছুঁয়েছেন যেসব বাংলাদেশি

Published

on

বাংলাদেশি

নেপালের পর্বতারোহী তেনজিং নোরগে এবং এডমন্ড হিলারি ১৯৫৩ সালের ২৯ মে যৌথভাবে সর্বপ্রথম এভারেস্ট পর্বত জয় করেন।

তবে ধারণা করা হোক বা না হোক, বাংলাদেশিরাও এভারেস্ট জয় করেছেন। একে একে ছয়জন বাংলাদেশি এভারেস্টের চূড়া ছুঁয়েছেন। তাদের এ কীর্তি দেশের জন্য গর্বের ইতিহাস।

মুসা ইব্রাহিম

মুসা ইব্রাহিম পেশায় একজন সাংবাদিক ও পর্বতারোহী। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। ২০১০ সালের ২৩ মে বাংলাদেশ সময় সকাল ৫টা ১৬ মিনিটে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন এবং লাল-সবুজ পতাকা ওড়ান। তার হাত ধরেই পর্বতবিজয়ী দেশের তালিকায় উঠে আসে বাংলাদেশের নাম।

পর্বতবিজয়ী মুসা ইব্রাহীমের জন্ম ১৯৭৯ সালে লালমনিরহাট জেলার মোগলহাটে। তিনি ঠাকুরগাঁও চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। পেশাগত জীবনে মুসা ইব্রাহীম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে কাজ করেছেন।

Advertisement

পর্বত আরোহণ ও অ্যাডভেঞ্চার বিষয়ক নানান আয়োজনে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ বাড়াতে তিনি ২০১১ সালে এভারেস্ট একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশ নামক পর্বতারোহণ ক্লাবের মহাসচিবও তিনি। এছাড়া মুসা ২০১১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমাঞ্জারোর চূড়া জয় করেন।

নিশাত মজুমদার

২০১২ সালে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন নিশাত মজুমদার। তার জন্ম ১৯৮১ সালের ৫ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরে। তিনি ঢাকার ফার্মগেটের বটমূলী হোম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজ এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন।

নিশাত ২০১২ সালের ১৯ মে শনিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এভারেস্ট জয় করেন। তার এ বিজয়ের মাধ্যমে নারীদের শক্তি ও অর্জন হিমালয় উচ্চতায় স্থান পায় বলে প্রতীয়মান হয়। ২০০৩ সালে এভারেস্ট বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া কেওক্রাডং জয় করেন নিশাত।

২০০৬ সালের মার্চে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে বিএমটিসি আয়োজিত বাংলাদেশের নারী অভিযাত্রী দলের সঙ্গে আবার কেওক্রাডং চূড়ায় ওঠেন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে বিএমটিসি আয়োজিত নারী অভিযাত্রী দলের সঙ্গে তিনি এভারেস্ট বেস ক্যাম্প (১৭ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা) ট্র্যাকিংয়ে অংশ নেন।

Advertisement

এরপর ২০০৭ সালের মে মাসে বিএমটিসির অর্থায়নে দার্জিলিংয়ের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নেন। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে হিমালয়ের মেরা পর্বতশৃঙ্গ (২১ হাজার ৮৩০ ফুট) জয় করেন। এভারেস্ট অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে পরের বছরের মে মাসে হিমালয়ের সিঙ্গুচুলি পর্বতশৃঙ্গে (২১ হাজার ৩২৮ ফুট) ওঠেন।

একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ভারতের উত্তর কাশীর গঙ্গোত্রী হিমালয়ের গঙ্গোত্রী-১ পর্বতশৃঙ্গে (২১ হাজার ফুট) বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অভিযানে অংশ নেন। নিশাত ২০০৯ সালের এপ্রিলে পৃথিবীর পঞ্চম উচ্চতম শৃঙ্গ মাকালুতে (২৭ হাজার ৮৬৫ ফুট) ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অভিযানে অংশ নেন। এছাড়া তিনি বিএমটিসি আয়োজিত হিমালয়ের চেকিগো নামের একটি শৃঙ্গেও সফল অভিযানে যান।

এম এ মুহিত

মোহাম্মদ আবদুল মুহিত সবার কাছে পর্বতজয়ী এম এ মুহিত নামে পরিচিত। ১৯৭০ সালের ৪ জানুয়ারি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুরে তার জন্ম। তিনি ঢাকার পোগোজ স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এম এ মুহিত ২০১১ সালের ২১ মে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন।

মুহিত ২০১০ সালেই এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সে সময় ব্যর্থ হন। পরের বছর বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের সদস্য হিসেবে এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে আবারও যাত্রা করেন। অবশেষে ২০১১ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে অভিযানে সফল হন।

Advertisement

১৯৯৭ সালে অক্টোবরে সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যান। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ১৮০০ ফুট উচ্চতায় উঠে পর্বতারোহণ নেশায় মগ্ন হন তিনি। সেই নেশাই পরবর্তীতে তাকে অনুপ্রেরণা দেয়। ২০০৪ সালে এভারেস্ট বেসক্যাম্প ও কালাপাথার ট্রেকিংয়ে অংশ নেন তিনি। এরপর ভারতের দার্জিলিংয়ের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে মৌলিক পর্বতারোহণ এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০০৫ সালে উচ্চতর পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নেন।

এছাড়া প্রস্তুতি হিসেবে বিভিন্ন সময় হিমালয়ের চুলু ওয়েস্ট (মে ২০০৭), মেরা (সেপ্টেম্বর ২০০৭), বিশ্বের অষ্টম উচ্চতম শৃঙ্গ মানাসলুর (মে ২০০৮), সিংগু ও লবুজে শৃঙ্গে আরোহণ করেন তিনি। এভারেস্ট জয়ের আগে মুহিত ২০০৯ সালে এভারেস্ট থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বিশ্বের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ চো ওয়ো (৮,২০১ মিটার) জয় করেন। বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এ সাফল্য অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি দুইবার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ তাজিনডংয়ে আরোহণ করেছেন।

ওয়াসফিয়া নাজরীন

ওয়াসফিয়া নাজরীন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। ২০১২ সালের ২৬ মে শনিবার সকাল পৌনে ৭টায় বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার স্কলাসটিকা স্কুল ও যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় এগনেস স্কট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্টুডিও আর্ট বিষয়েও তিনি স্কটল্যান্ডে কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন।

ওয়াসফিয়া নাজরীন বাংলাদেশের প্রথম পর্বতারোহী হিসেবে সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় (সেভেন সামিট) করেছেন। ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া অঞ্চল দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার (ওশেনিয়া) সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কারস্তনেজ পিরামিড জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে সাতটি পর্বত জয়ের রেকর্ড করেন।

Advertisement

২০১১ সালে ওয়াসফিয়া বাংলাদেশ অন সেভেন সামিট কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেভেন সামিট অভিযান শুরু করেন। সেভেন সামিটের অংশ হিসেবে ওশেনিয়া অঞ্চলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কারস্তনেজ পিরামিড (স্থানীয় নাম পুনাক জায়া, ১৬ হাজার ২৪ ফুট উচ্চতা) চূড়া জয় করেন।

এছাড়া ২০২২ সালের ২২ জুলাই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কে২-ও জয় করেন। দুঃসাহসী অভিযানের জন্য ওয়াসফিয়া নাজরীনকে ২০১৪ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির বর্ষসেরা অভিযাত্রীর খেতাব দেয়া হয়।

খালেদ হোসেন

এভারেস্টজয়ী খালেদ হোসেন বেশি পরিচিত সজল খালেদ। এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে মৃত্যুবরণকারী প্রথম বাংলাদেশি তিনি। ১৯৭৯ সালে তার জন্ম। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার আটপাড়া ইউনিয়নের সিংপাড়া হাসারগাঁও গ্রামে। শিক্ষাজীবনে তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে স্নাতক এবং ফিল্ম স্টাডিজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।

২০১৩ সালের ১০ এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো এভারেস্ট অভিযানে বের হন। নেপালের সাউথ ফেস দিয়ে ২০ মে সকাল আনুমানিক ১০টায় এভারেস্ট জয় করেন। এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়া জয় করে নেমে আসার পথে সাউথ সামিটে (উচ্চতা প্রায় ২৮,৭৫০ ফুট) পৌঁছার পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। ৮ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থানকালে মৃত্যুবরণ করেন।

Advertisement

এর আগে তিনি ২০১১ সালের মে মাসে তিব্বতের নর্থ ফেস ধরে এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছিলেন। সেবার প্রায় ২৩ হাজার ফুট পর্যন্ত উঠেছিলেন। কিন্তু ফুসফুসে পানি জমে যাওয়ায় তাকে নেমে আসতে হয়। খালেদ এর আগে সিকিমের ফ্রে পর্বত (২০০৬), নেপালের মাকালু (২০০৯), হিমালয়ের বাংলাদেশ-নেপাল ফ্রেন্ডশিপ পিক (২০১০), অন্নপূর্ণা রেঞ্জের সিংগুচুলি পর্বত (২০১১) জয় করেন।

পর্বতারোহণ নিয়ে এডমন্ড ভিস্টর্সেলের লেখা ‘পর্বতের নেশায় অদম্য প্রাণ’ বইটি অনুবাদ করেছেন। চলচ্চিত্রকার হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। খ্যাতিমান সাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস অবলম্বনে তিনি নির্মাণ করেন ‘কাজলের দিনরাত্রি’ নামের চলচ্চিত্র।

বাবর আলী

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে চট্টগ্রামের বাবর আলী এভারেস্ট জয় করেছেন। আজ রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে তিনি পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গে সফলভাবে আরোহণ করেন। সেখান থেকে নেমে তিনি লোৎসে পর্বত আরোহণের পথে রয়েছেন।

বাবর আলী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ৩৩ বছর বয়সী এ যুবক লেখাপড়া শেষে শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে তাতে থিতু হতে পারেননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। এভারেস্ট জয়ের আগে বাবর আলী সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মিটার), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মিটার), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মিটার), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মিটার), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মিটার), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মিটার), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মিটার) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ৫৯ মিটার) পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন এ যুবক।

Advertisement

এছাড়া বাবর আলী গত বছরের ১৩ এপ্রিল কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে সাইকেলযাত্রা শুরু করেন। এক মাসের চেষ্টায় প্রায় চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়িয়ে দিয়ে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী গিয়ে থেমেছিলেন। পথে ভারতের ১৩টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত বিভিন্ন অঞ্চল পাড়ি দেন। তারও আগে ২০১৯ সালের পরিবেশ রক্ষার ব্রত নিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় হেঁটে ভ্রমণ করেন তিনি।

কেএস/

 

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত