আবহাওয়া
চট্টগ্রামে প্রস্তুত সহস্রাধিক আশ্রয়কেন্দ্র, ধারণক্ষমতা ৫ লাখ
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলা এবং জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে মিটিং করে জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৫ লাখ এক হাজার ১১০ জন।
জেলা প্রশাসন জানায়, উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে সন্দ্বীপ, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই ও কর্ণফুলী। এরমধ্যে বাঁশখালীতে সবচেয়ে বেশি ১২২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলোতে আশ্রয় নিতে পারবে ৯৭ হাজার ৬০০ জন। সন্দ্বীপ উপজেলায় ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৯২ হাজার ৮০০ জন।
জেলায় ৮ হাজার ৮৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা আবহাওয়ার বার্তা প্রচার করছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের রেসকিউ বোট ও মেডিকেল টিম। পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রাথমিক চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় ত্রাণ হিসেবে চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার সঙ্গে এবং জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের নম্বরে যোগাযোগ করার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খুলেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এখান থেকে জরুরি হটলাইন নম্বরে ( ০২৩-৩৩৩-৬৩০-৭৩৯) ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য ও সেবা পাবেন চট্টগ্রামবাসী। পাশাপাশি শহরে জান-মালের ক্ষতি কমাতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৯৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমদ বলেন, ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা ও নাগরিকদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি আরবান মেডিকেল টিম, আরবান ভলান্টিয়ার ও উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় যানবাহন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সড়কবাতি নির্বিঘ্ন রাখার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দর। তবে আপাতত বন্দরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যদি আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেয়, তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে মূল কার্যক্রম শুরু করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, সংকেত ওপরে উঠলে আমরা নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করব। ৪ নম্বর সংকেত দেখাতে বললে বন্দরে স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং হবে এবং অন্যান্য বিভিন্ন কমিটিকে অ্যালার্ট করা হবে। সংকেত ৫-এ গেলে জেটিতে থাকা জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তবে আপাতত আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করছি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ ১০ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়- দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (শুক্রবার) ভোর ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
আবহাওয়া
উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ অগ্রভাগ
বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের অগ্রভাগ। রোববার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ১১টার মধ্যে বাংলাদেশের খেপুপাড়া ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের উপকূলীয় এলাকা হয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে রেমাল। সবশেষ অবস্থান অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
রোববার (২৬ মে) বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ (নয়) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরকে ৪ (চার) নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এএম/
আবহাওয়া
গতি বাড়িয়ে ১৩ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে রেমাল, তাণ্ডবের আশঙ্কা
বাংলাদেশের উপকূলের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। রাতে এটি বাংলাদেশের খেপুপাড়া ও পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি অঞ্চল দিয়ে মোংলার পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে।
রোববার (২৬ মে) দুপুরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১২) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
একই সঙ্গে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বহাল রয়েছে।
‘রেমাল’র অগ্রভাগের প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা বাতাস বইছে, সঙ্গে আছে বৃষ্টি। বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকাতেও।
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’এর উপকূলের দিকে গতি বাড়াচ্ছে। আগে এটি ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছিল। সর্বশেষ এটি ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ)-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে।
এতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
‘কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।’
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমির বেশি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ওমর ফারুক।
তিনি আরও জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।
আবহাওয়া
আবহাওয়ার কোন সংকেতের কী মানে
দেশের উপকূলে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। ইতিমধ্যে এর প্রভাবে বইছে দমকা বাতাস, সঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এটি রোববার (২৬ মে) বিকেল থেকে মধ্যরাতের মধ্যে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে দেয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত রয়েছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে। সংকেতগুলোর বিস্তারিত কি রয়েছে জেনে নেই-
১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত
জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারিসংকেত
গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।
৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত
বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারিসংকেত
বন্দর ঘূর্ণিঝড়–কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি।
৫ নম্বর বিপদসংকেত
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৬ নম্বর বিপদসংকেত
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৭ নম্বর বিপদসংকেত
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে।
১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্নসংকেত
আবহাওয়ার বিপৎসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।
নদীবন্দরের জন্য চারটি সংকেত
১ নম্বর নৌ সতর্কতাসংকেত
বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝোড়ো আবহাওয়ার কবলে নিপতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিবেগের কালবৈশাখীর ক্ষেত্রেও এই সংকেত প্রদর্শিত হয়। এ সংকেত আবহাওয়ার চলতি অবস্থার ওপর সতর্ক নজর রাখারও তাগিদ দেয়।
২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারিসংকেত
বন্দর এলাকায় নিম্নচাপের সমতুল্য তীব্রতার একটি ঝড়, যার গতিবেগ ঘণ্টায় অনূর্ধ্ব ৬১ কিলোমিটার বা একটি কালবৈশাখী, যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিলোমিটার বা তদূর্ধ্ব। নৌযান এদের যেকোনোটির কবলে নিপতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট নৌযানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
৩ নম্বর নৌ বিপদসংকেত
বন্দর এলাকা ঝড়ে কবলিত। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ একটানা ৬২-৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড় শিগগিরই বন্দর এলাকায় আঘাত হানতে পারে। সব নৌযানকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
৪ নম্বর নৌ মহাবিপদসংকেত
বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত এবং শিগগিরই বন্দর এলাকায় আঘাত হানবে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তদূর্ধ্ব। সব ধরনের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
-
অপরাধ4 days ago
পাঁচ কোটি টাকার চুক্তি, ২০ মিনিটের কিলিং মিশনে ছিলেন ৫ জন
-
জাতীয়6 days ago
রামপুরার সড়ক ছেড়েছে রিকশাচালকরা
-
আইন-বিচার7 days ago
এবার “রিচার্জ” এনার্জি ড্রিংকসকে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ
-
বাংলাদেশ3 days ago
এমপি আজিম হত্যা: ট্যাক্সি চালককে আটক করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
-
টুকিটাকি3 days ago
কাউন্সিলিংয়ের নামে ছাত্রকে ৩০ বার ধর্ষণ
-
অপরাধ3 days ago
এমপি আজীম হত্যা: মূল মাস্টারমাইন্ড কে এই শাহীন
-
অপরাধ1 day ago
চামড়া ছাড়িয়ে ৮০ টুকরো করা হয় এমপি আজীমের দেহ
-
ঢাকা5 days ago
নিরাপত্তা জোরদারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন