বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সকাল থেকেই নৌযান চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে। তবে বৃষ্টির বাধা মাথায় নিয়েই ঈদের ছুটি কাটাতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পদ্মা ও যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে নাড়ির টানে ঘরে ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের হাজারও মানুষ।
বুধবার (২৮ জুন) সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ঘরমুখো মানুষের যাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে। বাড়ি ফেরায় বাড়তি দুর্ভোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে, বৈরী এই আবহাওয়া। ঈদ যাত্রার শেষ মুহূর্তে তাই বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষ।
তবে বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে পদ্মা নদী পার হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে দৌলতদিয়া ঘাটে বাস টার্মিনাল এলাকায় ভিড় লেগেই থাকছে।
জানা গেছে, এই পথে লঞ্চ ভাড়া জন প্রতি ৩০ টাকা সরকারিভাবে নির্ধারিত হলেও বৈরী আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে গত দুইদিন ধরে লঞ্চ ও ট্রলার মালিকরা যাত্রীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করছেন।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে দেখা যায়, পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে। বৈরী আবহাওয়ায় অনেকেই পরিবার নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে আসছেন। লঞ্চঘাট থেকে নেমে বৃষ্টিতে ভিজে টার্মিনাল পর্যন্ত যাচ্ছে যাত্রীরা।
দৌলতদিয়া ঘাটে নেমে এক যাত্রী জানালেন, আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে ছুটি পেয়েছি। সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে আশুলিয়া থেকে পরিবার নিয়ে ভিজেই রওনা দিয়েছি। বৃষ্টির কারণে অনেক কষ্ট হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার ঈদ। তাই আজ যত কষ্টই হোক, বাড়ি গিয়ে পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলে আনন্দ লাগবে।
বিআইডব্লিউটিএ-এর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন জানান, সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় লঞ্চগুলোতে যাত্রী কম। অধিকাংশ যাত্রী ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। তবে যাত্রী কম হলেও পাটুরিয়া ঘাটে লঞ্চে কিছুটা চাপ আছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে ১৮টি লঞ্চ চলাচল করছে।
এদিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্পিড-বোট দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাবনায় যাচ্ছে অনেকেই। পদ্মার ঢেউয়ে বেশিরভাগ যাত্রীই ভিজে পাবনা থেকে আসা দৌলতদিয়া ঘাটে নামছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, প্রশাসনের ব্যাপক তদারকির মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে দৌলতদিয়া ঘাট। যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে।
লঞ্চে ও বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, পুলিশ, র্যাব, আনসার, ফায়ার সার্ভিস ও ভ্রাম্যমাণ আদালত একযোগে কাজ করে যাচ্ছে দৌলতদিয়া ঘাটে।