আর্কাইভ থেকে বিএনপি

সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে যা বললেন ফখরুল

সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে যা বললেন ফখরুল
জাতীয় সংসদে চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বিল পাস দেশের একটি নিকৃষ্ট কালো আইন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। পূর্বের ডিজিটাল অ্যাক্টের চেয়েও সাইবার আইনে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও তল্লাশি এই আইনকে বিরুদ্ধমত দমনে এক বিপজ্জনক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিতর্কিত ধারাগুলো সাইবার নিরাপত্তা বিলে প্রায় সব একইভাবে রাখা হয়েছে। এটি নতুন বোতলে পুরাতন মদ রাখার মতো। এই বিলটি পাসের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনে গভীর উদ্বেগ রয়েই গেলো। বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে পুলিশকে। এছাড়া ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য-উপাত্ত অপসারণ ও ব্লক করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সুতরাং এই আইনের অপপ্রয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এটির অপপ্রয়োগের সাজা সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। মূলত ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর লুণ্ঠন, সম্পদপাচার ও নিপীড়ন-নির্যাতন আড়াল করার জন্যই এই কালো আইন করা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, কোনো ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মানহানিকর তথ্য প্রচার করলে তা হবে অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানা। কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল মাধ্যমে কিছু প্রকাশ করেন যা বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টি বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে বা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা ঘটানোর উপক্রম হয়, তা হবে অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। তিনি বলেন, এই আইন বিরোধী দল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিকৃত ব্যবহার হতে পারে। যেকোনো মুক্তচিন্তা ও সত্য প্রকাশের জন্য প্রতিটি নাগরিককে অন্তত ২৫ লাখ টাকা মজুত এবং গ্রেফতার, হয়রানি ও কারাদণ্ডের ঝুঁকি নিতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, সত্য প্রকাশের দায়ে প্রতিমুহূর্তে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমকে কেবল নিষেধাজ্ঞার খড়গের নিচেই থাকতে হবে না পাশাপাশি সাধারণ মানুষও নানাভাবে হয়রানি ও জুলুমের শিকার হবে। গণতন্ত্র আরও বেশি সংকুচিত করার জন্যই এই আইন পাস করা হয়েছে। ম্যান্ডেটবিহীন আওয়ামী সরকার গোটা জাতিকে বোবা বানানোর জন্যই একের পর এক গণবিরোধী কালো আইন প্রণয়ন করছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের ন্যায় কণ্ঠরোধের এই আইন ব্যাপকভাবে গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। অবৈধ সরকার ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে ওঠার শঙ্কায় নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের ন্যায় জুলুমের আইন তৈরি করেছে। ফখরুল আরও বলেন, আমি এই কালো আইনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোসহ অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সাইবার | নিরাপত্তা | আইন | নিয়ে | ফখরুল