ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোল দখলে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। এই শহরটির মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত মারিউপোলে আটকে থাকা এক লাখ বেসামরিক নাগরিকের ভাগ্য এখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে। এসব মানুষের সাথে কী ঘটবে তা পুতিন একাই ঠিক করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, উপগ্রহ থেকে পাওয়া মারিউপোলের একটি গণকবরের ছবি দেখা গেছে। রাশিয়ার সেনারা নিহতের সংখ্যা লুকাতে মরদেহ এখানে কবর দিচ্ছে।
মেয়র বলেন, অবরুদ্ধ শহর মারিউপোলে রাশিয়ার ধবংসযজ্ঞ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেবিন ইয়ারে নাৎসি জার্মানির দ্বারা পরিচালিত গণহত্যার সমান।
ভাদিম বয়চেঙ্কো বলেন, মারিউপোল হলো ‘একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় যুদ্ধাপরাধের দৃশ্য’। এটা নতুন বেবিন ইয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার যেমন ইহুদি, রোমা এবং স্লাভদের হত্যা করছিলেন, তেমনই এখন পুতিন ইউক্রেনীয়দের নির্মূল করছেন। তিনি ইতিমধ্যে মারিউপোলে কয়েক হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছেন।
এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে স্থানীয় সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ হাজার ২৬৪ বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে গেলো ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই হাজার ৩৪৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন দুই হাজার ৯১৯ জন।
এর আগে মারিউপোলকে টানা প্রায় দুই মাস অবরুদ্ধ করে রাখার পর ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় এই বন্দরনগরী দখলের দাবি করেন পুতিন। দুই মাসের এই রুশ অবরোধ ও প্রচণ্ড বোমাবর্ষণে শহরে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। ফলে যেসব বাসিন্দা পালিয়ে যাননি তারা বিদ্যুৎ, গরম বা পানি সংকটে ভোগান্তিতে পড়েন।
মারিউপোলের মেয়র বলেন, আজ আমাদের কেবল একটি কথাই বলার আছে, আর সেটি হচ্ছে- আমাদের একটি যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হাতে বন্দি মারিউপোলের এক লাখ বাসিন্দাকে পুরোপুরি বের হওয়ার সুযোগ দিতে এবং আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় থাকা আমাদের সকল মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।