নিত্যপণ্যের বাজার যে সরাসরি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত তা বিভিন্ন সময় ইশারা ইঙ্গিতে আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে বলেছেন। বাজারে দ্রব্যমূল্যের আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ আর অর্থ বিত্তের পুকুরে সাঁতার কাটছে সরকারের লোকজন। আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে এখন থেকেই সরকারের সিন্ডিকেট চক্র জনগণের পকেট কাটতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব তো পড়েইনি, উল্টো গত ১০ দিনে রমজানসংশ্লিষ্ট কয়েকটি পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। শুল্ক কমানোর পরে ঐ ৪টি পণ্যের দাম কেজিতে ৪০ টাকা কমার কথা, কিন্তু কমেনি তো বটেই বরং এই চারটি পণ্যের দাম কেজিতে ১০/২০ টাকা বেড়ে গেছে। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৪ টাকা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে ১৩২ টাকায় বিক্রি হতো। এখন খুচরা বাজারে খোলা চিনির কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ এবং প্যাকেটজাত চিনি ১৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এখনও সেই দরে কিনতে হচ্ছে চিনি।’
তিনি বলেন, ‘গ্যাস নেই, রাস্তায় যানজট, বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং, দুর্গন্ধময় ওয়াসার পানি, বাজারে আগুন। আওয়ামী সিন্ডিকেট চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে ছাত্রলীগ গড়ে তুলেছে নারীর শ্লীলতাহানিসহ সন্ত্রাস আর নৈরাজ্যের অভয়ারণ্য। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন রক্তাক্ত এবং নারীদের জন্য বিপজ্জনক স্থান। সরকারী দলের প্রশ্রয়ে শহর, নগর, বন্দরে দাপিয়ে বেড়ানো কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হামলা ও খুনাখুনিতে মানুষ আতঙ্কিত। সব মিলিয়ে কেবল এই রাজধানী ঢাকা নয়, পুরো দেশটাকেই যাতনাময় বিষাদলোকে পরিণত করেছে সরকার।’
রিজভী বলেন, ‘রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন বন্দুক নির্ভর দলে পরিণত হয়েছে। এই দলটির সব পর্যায়ের নেতাদের কথাবার্তায়, আচার-আচরণে জনগণের প্রতি অশ্রদ্ধা, অবহেলা ফুটে ওঠেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবের বলার আর করার কিছু নেই। তিনি আওয়ামী লীগের জড় পদার্থে পরিণত হয়েছেন। যেভাবে চালানো হয় তিনি সেভাবেই চলেন। তিনি দখলদার মাফিয়া টিমের মুখপাত্র।’
এএম/