এসব হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত, বৃহত্তর মাস্টার প্ল্যানেরই অংশ : রিজভী

যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধোনীকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে কুড়িগ্রামের শফিকুল ইসলামকে। এসব হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত, এক বৃহত্তর মাস্টার প্ল্যানেরই অংশ। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, মানুষ যেন সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করার সাহস না পায়, এসব হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে সে মরণবার্তা দিচ্ছে সরকার। পায়ের তলায় মাটি নেই বুঝতে পেরে সরকার সারাদেশে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। সরকারের নির্দেশেই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

তিনি বলেন, সমাজ থেকে ন্যায়বিচার উচ্ছেদ করা হয়েছে, দলীয়করণের মাধ্যমে প্রশাসনকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে, বিচার বিভাগ এখন সরকারের অবৈধ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের যন্ত্রে পরিণত। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে কেড়ে নেয়া হয়েছে মানুষের বাকস্বাধীনতা। ভোটের অধিকার নেই, মুক্তভাবে কথা বলার অধিকার নেই, দেশের সব সেক্টরে এখন নৈরাজ্য চলছে।

তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি বর্তমানে বাংলাদেশেও বিদ্যমান। এই যখন দেশের অবস্থা তখন বাংলাদেশের জনগণ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে কি না সে আতঙ্ক থেকে বিরোধী দল নিধনে কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবেই যুবদল নেতা বদিউজ্জামানকে হত্যা।

রিজভী বলেন, পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়া টের পেয়ে আওয়ামী সরকার দেশে এখন মৃত্যুদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বজন পোষণ এবং বিলাসী জীবনযাপন এবং অবৈধভাবে অর্জিত বিপুল সম্পত্তি সংকটাপন্ন হবে ভেবেই ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে তারা এখন মরণ কামড় দিচ্ছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তারা উন্মাদ হয়ে গেছে। তাই সহিংস রক্তপাতের মধ্য দিয়ে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডেরই বিচার হবে বাংলাদেশের মাটিতে। সময় আর বেশি নাই। এ সরকারের পতন আসন্ন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী শাসন পুরনো বাকশালী শাসনেরই পুনর্মুদ্রণ। নব্যবাকশালী আওয়ামী শাসন যন্ত্রের কাছে এদেশের সংগ্রামী জনগণ কখনো মাথা নত করবে না। জনগণের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে যে কোনো সময়। বর্তমান বিপন্ন সময়ে দাঁড়িয়ে জনগণ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। জনগণ এ অপশক্তির কাছে কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না।

এসময় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গেলো মঙ্গলবার দুপুরে যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের কাছে নিজ বাড়ির সামনে জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান ধোনীকে (৫২) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের।

মির্জা রুমন

Recommended For You