Connect with us

স্বাস্থ্য

১০ দিনে ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু

Avatar of author

Published

on

ডেঙ্গু

চলতি জুন মাসের প্রথম ১০ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৫০ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী। আর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ১০৩ জন।

সোমবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গেলো ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) পাঁচ মাস পর সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগীর রেকর্ড হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭ জন রোগী। এর আগে এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী ভর্তির রেকর্ড ছিল গত ১০ জানুয়ারি। সেদিন ভর্তি হয়েছিল ৫৯ জন রোগী।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে চলতি বছর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভর্তি হয়েছে জানুয়ারিতে ১ হাজার ৫৫ জন। এরপর মে মাসে ৬৪৪ জন, এপ্রিলে ৫০৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৩৯ জন ও মার্চে ৩১১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।

এখন পর্যন্ত জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন। মে মাসে মারা গেছেন ১২ জন। মার্চ মাসে ৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ এবং এপ্রিলে মারা গেছেন ২ জন।

Advertisement

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১০৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৮৮০ জন ও নারী ১ হাজার ২২৩ জন।

কেএস/

Advertisement

রোগব্যাধি

স্ট্রোক এর কারণ ও লক্ষণ, প্রতিরোধ জেনে নিন

Published

on

স্ট্রোক শব্দটি আমাদের খুব পরিচিত, তাই না? প্রায়ই আমরা পরিচিত মানুষের মাঝে কেউ স্ট্রোক করেছে শুনতে পাই। এই রোগটি সম্পর্কে কতটা জানেন? স্ট্রোক কী, কেন হয়, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি কিংবা আপনার পরিবারের প্রিয় মানুষটিকে খুব সহজেই বাঁচাতে পারবেন। আসুন জেনে নেই এই রোগের আদ্যোপান্ত।

স্ট্রোক আসলে কী?

এটি একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যা। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাঁধা পেলে বা ব্যাহত হলে, যখন রক্ত জমাট বেধে ধমনীকে ব্লক করে দেয়, তখন অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষগুলো ডেড হয়ে যায় এবং মস্তিষ্কের কার্যকরী ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এটিই হচ্ছে স্ট্রোক।

স্ট্রোক এর কারণ

স্ট্রোক কোথায় হচ্ছে, মস্তিষ্কের কতটুকু আক্রান্ত হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থাপনা। এই ঘটনাটি যেকোনো বয়সের যেকোনো মানুষের সাথে হতে পারে। নারীদের তুলনায় পুরুষরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। মাইল্ড স্ট্রোক অর্থাৎ স্ট্রোকের পরিমাণ যদি কম হয়, তবে শুধুমাত্র হাত ও পায়ে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু স্ট্রোকের পরিমাণ বেশি হলে শরীরের একাংশ প্যারালাইসিস বা অবশ হয়ে যেতে পারে। এই সময় রোগী কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। এবার কখনও কখনও এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

Advertisement

স্ট্রোক এর প্রকারভেদ

স্ট্রোক এর দু’টি প্রাথমিক প্রকার রয়েছে-

১. ইস্কেমিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে রক্ত সঞ্চলনে ব্যাহত হওয়ার কারণে যে স্ট্রোক দেখা দেয় তা হলো ইস্কেমিক স্ট্রোক। সাধারণত এই ধরনের স্ট্রোক বেশি হতে দেখা যায়। এক গবেষণায় জানা গেছে প্রায় ৮৭% ক্ষেত্রেই ইস্কেমিক স্ট্রোক হয়।

২. হেমোরেজিক স্ট্রোক: এই ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্তনালী ফেটে যেয়ে রক্তক্ষরণ হলে তাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এই ধরনের স্ট্রোক সাধারণত কম হলেও এটি কিন্তু বেশ গুরুতর। এটি যখন ঘটে তখন রক্তপাত মস্তিষ্কের টিস্যুকে সংকুচিত করে এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে।

স্ট্রোক এর কারণ

Advertisement

১. উচ্চ রক্তচাপ: অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের প্রধান ঝুঁকির কারণ। এটি রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করে এবং এগুলোর ব্লকেজ বা ফেটে যাওয়ার জন্য আরও সংবেদনশীল করে তোলে।

২. ধূমপান: ধূমপান রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করে এবং রক্ত জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

৩. ডায়াবেটিস: রক্তনালী ও স্নায়ুর সম্ভাব্য ক্ষতির কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।

৪. উচ্চ কোলেস্টেরল: এলডিএল কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা ধমনীতে প্লাগ তৈরি করতে পারে এবং ব্লকেজ এর ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন: অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের মতো অনিয়মিত হার্টের ছন্দের কারণে হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে, যা মস্তিষ্কে পৌঁছে স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

Advertisement

৬. স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো পরিস্থিতি তৈরি করে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

 

৭. পারিবারিক ইতিহাস: স্ট্রোক বা হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কিছুটা হলেও ঝুঁকি থাকে।

৮. এছাড়াও অতিরিক্ত মানসিক চাপ, হতাশা, ডিপ্রেশনের কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।

স্ট্রোক এর লক্ষণ

Advertisement

স্ট্রোক এর লক্ষণগুলো শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগ নির্ণয়ে ‘FAST’ সাহায্য করতে পারে-

F: Face (মুখ)- মুখের একপাশে হঠাৎ দুর্বলতা বা ঝুঁকে পড়া

A: Arm (হাত)- উভয় হাত বাড়াতে বা উঁচু রাখতে অক্ষমতা

S: Speech (কথা বলা)- কথা জড়িয়ে যাওয়া অথবা সুসংগতভাবে কথা বলতে অসুবিধা

T: Time (সময়)- যদি কেউ এই লক্ষণগুলো অনুভব করে থাকে, অবিলম্বে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে

Advertisement

অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- গুরুতর মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, হাঁটার ভারসাম্য বা সমন্বয় নষ্ট হওয়া এবং হঠাৎ করে দৃষ্টি সমস্যা বা চোখে ঝাপসা দেখা।

রোগ নির্ণয়

স্ট্রোকের ক্ষতি কমানোর জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং দ্রুত চিকিৎসা অপরিহার্য। চিকিৎসকরা স্ট্রোকের ধরন ও তীব্রতা নির্ধারণ করতে বিভিন্ন পরীক্ষা ও ইমেজিং কৌশল ব্যবহার করেন।

১. সিটি স্ক্যান: একটি কম্পিউটেড টমোগ্রাফি (CT) স্ক্যান দ্রুত মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং মস্তিষ্কের ক্ষতির পরিমাণ শনাক্ত করতে পারে।

২. এমআরআই: ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) মস্তিষ্কের বিশদ চিত্র প্রদান করে, ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা নির্ণয় করতে সাহায্য করে।

Advertisement

চিকিসা পদ্ধতি

স্ট্রোকের চিকিৎসা নির্ভর করে এটি ইস্কেমিক স্ট্রোক (রক্ত জমাট বাঁধার কারণে) নাকি হেমোরেজিক স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তপাতের কারণে), সেটার উপরে।

ইস্কেমিক স্ট্রোক

১. উপসর্গ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রোগী হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক শিরায় থ্রম্বোলাইটিক্স (টিপিএ-এর মতো ক্লট-বাস্টিং ওষুধ) দিতে পারে।

২. কিছু ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে ক্লট অপসারণের জন্য থ্রম্বেক্টমি করতে পারেন।

Advertisement

৩. ভবিষ্যতে জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করার জন্য অ্যান্টিপ্লেটলেট বা অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট ওষুধ নির্ধারিত করে দিতে পারেন।

৪. উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হাই কোলেস্টেরল থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ এর মেডিসিন

হেমোরেজিক স্ট্রোক

১. রক্তপাত বন্ধ করতে, জমাট বাঁধা অপসারণ বা ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালী রিপেয়ারের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।

Advertisement

২. রক্তপাত রোধ, খিঁচুনি কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে হবে।

৩. নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে।

উভয় ধরনের স্ট্রোকের ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজন অনুসারে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি ও অকুপেশনাল থেরাপি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যদি স্ট্রোকের লক্ষণগুলো অনুভব করেন, যেমন হঠাৎ অসাড়তা, বিভ্রান্তি, কথা বলতে সমস্যা, দৃষ্টি সমস্যা, তীব্র মাথা ব্যথা, বা হাঁটতে সমস্যা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য। মস্তিষ্কের ক্ষতি কমাতে স্ট্রোকের চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফিজিওথেরাপি

Advertisement

স্ট্রোকের রোগীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলে রোগী দ্রুত উন্নতির পথে আসতে পারে। স্ট্রোকের ধরন ও মাত্রা, বয়স, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্যারামিটারের উপর নির্ভর করে কোন রোগী কতদিনে ভালো হবে। কিছু রোগী ভালো কন্ডিশনে থাকেন। যেমন- কথা বলতে পারেন, নিজে খেতে পারেন। অনেকে কোনো একদিকের হাত-পা নাড়াতে পারেন না, এক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিস্ট দিয়ে ব্যায়াম করাতে হবে অথবা তাদের কাছ থেকে ব্যায়াম শিখে নিতে হবে।

স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায় কীভাবে?

বিশেষ করে যদি ঝুঁকির কারণ বা স্ট্রোকের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, সেক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা মেনে চলা উচিত। স্ট্রোক এর কারণ তো আমরা আগেই জেনে নিয়েছি। ঝুঁকি কমাতে নিচের পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারেন।

স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন

ফল, সবজি, শস্যদানা, লো স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও সোডিয়াম সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।

Advertisement

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন

নিয়মিত আপনার রক্তচাপ পরীক্ষা করুন এবং উচ্চ রক্তচাপ ব্যবস্থাপনার জন্য আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে মেডিসিন গ্রহণ করুন।

ধূমপান ত্যাগ করুন

ধূমপান পরিত্যাগ স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও থাকে এক্ষেত্রে। তাই এই অভ্যাস বাদ দিতে হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন

Advertisement

প্রয়োজনে খাদ্য, ব্যায়াম ও ওষুধের মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

সঠিক ওজন ধরে রাখতে ও ফিট থাকতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন।

প্রয়োজনীয় মেডিসিন গ্রহণ করুন

উচ্চ রক্তচাপ অথবা হাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দেশিত মেডিসিন গ্রহণ করুন। অনেকে আছেন ঠিকমতো ওষুধ সেবন করেন না, গাফিলতি করেন! এই অভ্যাস পরিহার করুন।

Advertisement

অনেকেই স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাককে সেইম মনে করেন। আসলে স্ট্রোক হলো ব্রেনের অসুখ আর হার্ট অ্যাটাক হৃৎপিণ্ডের সাথে রিলেটেড। স্ট্রোক এর কারণ আজ জেনে নিলেন। ধরন অনুযায়ী চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ভিন্নতা আছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রোগীর জীবন বাঁচাতে সহায়তা করুন। স্ট্রোক এর ঝুঁকির কারণগুলো প্রতিরোধ করে, হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারেন। আসুন সবাই সচেতন হই, সুস্থ থাকি।

জেএইচ

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

স্বাস্থ্য

আবারও ঢামেক থেকে ভুয়া চিকিৎসক আটক

Published

on

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের গাইনি বিভাগ থেকে রিপা আক্তার (২০) নামে চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া এক তরুণীকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চিকিৎসক নন বলে স্বীকার করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের গাইনি বিভাগ থেকে তাকে আটক করা হয় বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢামেকের উপ-পরিচালক (অর্থ ও স্টোর) ডা. মো. খালেকুজ্জামান খান।

ডা. মো. খালেকুজ্জামান খান জানান,  অভিযুক্ত ওই তরুণী হাসপাতালের ২১২নং ওয়ার্ডের গাইনি বিভাগে সন্দেহজনকভাবে এপ্রোন পরা অবস্থায় ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নারী আনসার সদস্যরা তাকে আটক করে প্রশাসনিক ভবনে নিয়ে যায়। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়।

ঢামেক হাসপাতালের আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) মো. মিজানুর রহমান  অভিযুক্ত ওই তরুণী স্বীকার করেন তিনি চিকিৎসক নন। তিনি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। আটকের পর জানিয়েছেন নিউমার্কেট থেকে তিনি এই এ‍্যাপ্রোন কিনেছেন।

উল্লেখ্য, আটক রিপা আক্তারের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল থানার বউলতলী গ্রামে। তিনি বর্তমানে কামরাঙ্গীর চর এলাকায় থাকেন।

Advertisement

আই/এ

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

রোগব্যাধি

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস বা মেরুদণ্ডের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কী, এ রোগের চিকিৎসা

Published

on

বর্তমানে আমাদের জীবনযাপন এমন হয়ে গেছে যে আমাদেরকে এখন অনেকটা সময় বসে কাটাতে হয় কম্পিউটারের সামনে। হঠাৎ এই বসা থেকে উঠতে গেলে বা শোয়া থেকে বসতে গেলে অনেকেই প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করেন কোমরে ও হাঁটুতে। এটি কি সাধারণ ব্যথা নাকি অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস? এই রোগে আক্রান্ত হলে কী কী লক্ষণ দেখা দেয়, তা জানা না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়। তবে খেয়াল করলে দেখবেন, এই দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন।

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস কী?

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস হলো এক ধরনের আর্থ্রাইটিস যা পিঠের অংশকে বাঁকা করে দেয়, মেরুদণ্ডে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পিঠ, পাঁজর, ঘাড় শক্ত ও ব্যথাক্রান্ত হয়ে থাকে। গবেষকেরা এখনো জানাতে পারেননি, ঠিক কী কী কারণে অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস হয়ে থাকে। তারা ধারণা করেন কিছু ক্ষেত্রে এটি জিনগত, তবে পিতামাতার কাছ থেকে তাদের সন্তানদের মধ্যে সরাসরি যায় না। বংশের অন্য কারো থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এই রোগে কারা আক্রান্ত হতে পারে?

২০ থেকে ৪৫ বছরের পুরুষদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার ১৬ বছরের নীচে কিশোরদের মধ্যেও এই রোগের কিছু লক্ষণ দেখা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রেও এই রোগ হতে পারে, তবে ছেলেদের তুলনায় কম। যাদের শরীরে এইচএলএ-বি ২৭ নামের জিন আছে, তাদের অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে সবথেকে বেশি।

Advertisement

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের লক্ষণ কী কী?

প্রাথমিক পর্যায়

১. ভোরবেলা পিঠের নীচের অংশ আড়ষ্ট হয়ে থাকে এবং ব্যথা হতে থাকে যা কমপক্ষে ৩০ মিনিট স্থায়ী হয় এবং পরবর্তীতে ব্যথা কমে যায়।

২. অসহনীয় ব্যথায় রোগীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।

৩. কোমড়ের নিচের অংশে এবং কখনও কখনও উরুর পেছনে ব্যথা হতে পারে।

Advertisement

এই অবস্থাকে কখনও কখনও রোগী সাধারণ পিঠে ব্যথা হিসেবে ভুল করতে পারে। সাধারণ পিঠে ব্যথা স্বল্প সময় থাকে কিন্তু অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়। এই ব্যথা ঘাড়, কাঁধ, কোমরের নিচের অংশে বা উরুতে ছড়িয়ে পরে, যা পরবর্তীতে আরও বাড়তে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, দীর্ঘ সময় ধরে ডেস্কে বসে থাকলে পিঠ, কোমর, হাঁটু বা গোড়ালিতে ব্যথা হওয়া ও ফোলাভাব দেখা দেওয়া।

অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে-

গোড়ালি বা পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা

পায়ের আঙুলে ব্যথা ও ফোলাভাব

স্পাইনাল কড ও বুকে ব্যথা

Advertisement

অল্প পরিশ্রমেই রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে এবং কাশি বা হাঁচির সময়ে অস্বস্তি হতে পারে

তীব্র ক্লান্তি, বিষণ্নতা, চোখের প্রদাহ, কখনও কখনও চোখ লাল হয়ে যাওয়া

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ত্রের সমস্যা হতে পারে যা প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ (IBD) বা কোলাইটিস নামে পরিচিত। যদি দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া হয়, তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

কী ধরনের জটিলতা হতে পারে?

যাদের দীর্ঘদিন ধরে অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস থাকে, তাদের সামান্য আঘাতে পিঠের হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই রোগে আক্রান্ত কিছু ব্যক্তির অস্টিওপোরোসিস হয়, এটি এমন একটি অবস্থা যার ফলে হাড় নাজুক হয়ে যায় এবং এই কারণে ফ্র্যাকচার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

Advertisement

রোগীর যদি অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস বা কোনো ধরনের স্পন্ডাইলো আর্থারাইটিস থাকে, তাহলে এটি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। ওষুধ সেবনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ধূমপান না করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা- অর্থাৎ হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করলে এই ঝুঁকি কমে যায়।

কীভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়?

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের লক্ষণগুলো অন্যান্য সাধারণ পিঠের সমস্যার মতো হতে পারে, বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ে। আপনার অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস আছে বলে সন্দেহ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এমন কোনো পরীক্ষা নেই যা নিশ্চিতভাবে দেখাতে পারে যে আপনার অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস আছে। HLA-B27 জিন আছে কিনা তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন। অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে HLA-B27-এর জন্য টেস্ট সাজেস্ট করা হয়। এই রোগ নির্ণয় বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে করা হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে-

রোগের ইতিহাস এবং যে লক্ষণগুলো অনুভব করেছেন সেগুলো খতিয়ে দেখা

Advertisement

রক্ত পরীক্ষা করা

এক্স-রে ও MRI

এ রোগের চিকিসা

১. মেডিসিন

ব্যথানাশক, যেমন প্যারাসিটামল এবং নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) সাধারণত অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসের ট্রিটমেন্টে দেওয়া হয়। অ্যান্টি-রিউম্যাটিক ড্রাগস (DMARDs) নামে পরিচিত ওষুধগুলো শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। মেডিসিন কখনও কখনও কার্যকর হতে কয়েক সপ্তাহ বা মাস সময় নিতে পারে। যখন কার্যকর হয়, তখন ব্যথা ও আড়ষ্টতা কমে আসে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা। স্টেরয়েড স্বল্পমেয়াদী চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো সাধারণত ফোলা জয়েন্টে বা পেশীতে ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া হয়।

Advertisement

ফিজিওথেরাপি অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস ট্রিটমেন্টের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বিভিন্ন ব্যায়াম রোগীকে শেখাবেন যা সে ঘরে বসেই করতে পারেন। কার্যকর ব্যায়াম পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে স্ট্রেচিং, কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম, ব্যাকবোনের গতিশীলতার ব্যায়াম ইত্যাদি। এগুলো আপনার ব্যথা উপশমের জন্য বেশ ইফেক্টিভ।

২. যোগব্যায়াম

এই ব্যায়াম ধীর গতির মাধ্যমে দেহের শক্তি ও ভারসাম্য বাড়ায়। পেটের ও পিঠের পিছনের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করা হলে ব্যথা কমতে থাকে।

৩. স্ট্রেচিং

এটি এমন ব্যায়াম যা আপনি ওয়েট লিফটিং ছাড়াই করতে পারেন। সাধারণত রোগী যখন নড়াচড়া করেন তখন ব্যথার কারণে অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে এবং পেশী আরও শক্ত হয়ে যেতে পারে। নড়াচড়ার অভাবও অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের মেরুদণ্ডের হাড়গুলোকে অসাড় করে দেয়, যার ফলে ব্যক্তির হাঁটা চলাফেরা কঠিন হয়ে যায়। স্ট্রেচিং শরীরের আড়ষ্টতা দূর করে।

Advertisement

৪. ব্রেথিং এক্সারসাইজ

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের মাঝে মাঝে ডিপ ব্রেথ নিতে অসুবিধা হতে পারে। এমনকি দৈনন্দিন কাজকর্মের সময়ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে পারেন। ব্রেথিং এক্সারসাইজ আপনার শরীর ও মনকে প্রশান্ত রাখে। প্রতিদিনের ব্যায়াম ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এই ব্যায়ামগুলো ব্যথার মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

এই সাধারণ অনুশীলনটি চেষ্টা করতে পারেন ঘরে বসেই-

১) বসে বা শুয়ে শুরু করুন এবং একটি ধীর কিন্তু গভীর শ্বাস নিন। আপনার পেট ও বুক সম্পূর্ণভাবে প্রসারিত হতে দিন।

২) ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন এবং শ্বাস ছাড়ার সাথে সাথে আপনার পেটের পরিবর্তন অনুভব করুন।

Advertisement

৩) বেশ কয়েকবার গভীর শ্বাসের মাঝে মাঝে নিয়মিত শ্বাস নিন।

সার্জারি

অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না। যদি জয়েন্টগুলোর অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে জীবনযাত্রায় সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে চিকিৎসক হাঁটু প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এতে রোগী ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং সাধারণ চলাফেরা করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

সবশেষে বলতে চাই, এখন এই রোগের অনেক ধরনের চিকিৎসা আছে। তাই অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস বা মেরুদণ্ডের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার সমস্যা থাকলে সঠিক চিকিৎসা নিন। নিয়মিত শারীরচর্চা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে সাধারণ জীবনযাপনে ফিরে আসা সম্ভব।

জেএইচ

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত