পরামর্শ
যে খাবারগুলো খেলে কমবে পিঠের ব্যথা
পিঠে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকাল বেশিরভাগ মানুষই পিঠের ব্যথায় ভোগেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং শরীরে পুষ্টির অভাব সব মানুষের সমস্যা বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা পিঠে ব্যথা উপশম করতে বিভিন্ন টিপস দেন। ব্যায়াম তার মধ্যে অন্যতম। এটি শুধু পেশিকে শিথিল করে না, শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ তাই নিয়মিত ব্যায়াম করাটা দরকারি।
তবে ব্যায়ামের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ করলে ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেলে এই সমস্যা কমানো যায়। এবার দেখা যাক, যে কোন ধরনের খাবার খেলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমানো যায়।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ : ঘন ঘন পিঠে ব্যথা হলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। বাদাম, আখরোট, চিয়া বীজ, শ্লেষের বীজ এবং মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। রান্নায় সরিষার তেল ও অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি খাবার : অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি খাবারগুলি ব্যথা কমাতেও সহায়তা করতে পারে। আপনি আপনার রান্নাঘরে এমন অনেক মশলা খুঁজে পেতে পারেন, যা এই ধরনের সমস্যা কমাতে কাজে লাগতে পারে। দারুচিনি, গোলমরিচ এবং আদার মধ্যে এই জাতীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। হলুদ এমন একটি মশলা যা জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার : শরীরের প্রোটিনের অভাব প্রায়ই ব্যথা সৃষ্টি করে, তাই আপনাকে আপনার ডায়েটে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কোমরের ব্যথা কম করতে ডিম খাওয়া যেতে পারে।
সবুজ শাকসবজি : ফুলকপি, ব্রকোলি, পালং শাক ও বাঁধাকপির মতো সবুজ শাকসবজিও খেতে পারেন। এগুলিতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে কম থাকে। এগুলিতে সালফোরাফেন নামে একটি যৌগ রয়েছে যা ব্যথা উপশমকারী হিসাবে কাজ করে। এগুলো পিঠে ব্যথার জন্য উপযোগী।
মূল জাতীয় সবজি : ব্যথা কমাতে বিটরুট, গাজর সহ মূল জাতীয় সবজিও খেতে পারেন, এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ব্যথা উপশমে সহায়তা করে। এগুলি নিয়মিত খেলে কোমরের ব্যথা কমে যেতে পারে।
তাজা ফল : ব্যথা উপশম ছাড়াও, আপনার স্বাস্থ্যের ভালোর জন্য প্রতিদিন তাজা ফল খান। আনারস, আপেল, চেরি, বেরি, সাইট্রাস ফল, আঙুর ইত্যাদি আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
জেএইচ
পরামর্শ
প্রযুক্তির বেড়াজাল থেকে নিজেকে উদ্ধার করবেন যেভাবে
ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমিয়ে পড়া পর্যন্ত হাতে ফোন থাকেই! প্রযুক্তিময় জীবনটাই বেশ পছন্দ করে সবাই। কখনো কি মনে হচ্ছে প্রযুক্তি আপনাকে জীবনের মূলধারা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসছে অনেকটাই? যদি সেটা পাল্টাতে চান তো সচেতন হন এখনই। অল্প কিছু অভ্যাস একটু একটু করে পাল্টে নিন। কীভাবে? চলুন জেনে নেই প্রযুক্তির বেড়াজাল থেকে নিজেকে উদ্ধার করার কিছু কার্যকরী পদ্ধতি সম্পর্কে।
প্রযুক্তির বেড়াজাল থেকে নিজেকে উদ্ধার করার পদ্ধতি
১. ডায়রি লিখুন
সারাদিন সামাজিক সাইটগুলোতে ঘোরাঘুরি কমিয়ে আনুন অল্প অল্প করে। দিন জুড়ে স্ট্যাটাস আপডেট করার চাইতে বরং রাতের বেলা প্রিয় ডায়রিতে নিজের দিনটাকে বন্দী করে রাখবেন। এমনটাও হয়, আমরা খুব একটা উপভোগ করছি না কিন্তু তাও ফেসবুকেই সময় কাটাচ্ছি। বিষয়টা এমন যে অন্য কিছু করার ইচ্ছেটাই কাজ করছে না তখন আর তাই ফেসবুক ওই মুহূর্তে ভালো না লাগলেও সেটাই আমাদের সঙ্গী। এই অভ্যাসটা বাড়তে দেয়া কখনোই ভালো কিছু নয়!
২. ছুটির দিনে শহর ঘুরে দেখুন
নিজের শহরটাকে পুরো ঘুরে দেখার পরিকল্পনা নিন, শুরু করুন, আপনার সময় যে দারুণ কাটবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ভ্রমণপ্রিয় হলে তো কথাই নেই, একা ঘুরতেও দিব্যি ভালো লাগবে তখন। সারাদিন মুভি দেখা, রেস্টুরেন্টে চেক-ইন দেয়া ইত্যাদি পরিকল্পনায় ভরা ছুটির দিনটা পাল্টে নিন পুরোপুরি। না দেখা কোন জায়গাকে জানার জন্য বেড়িয়ে পড়ুন। দিন খারাপ যাবে না আপনার।
৩. বই পড়ুন
ই-বুক, পিডিএফ পারতপক্ষে এড়িয়ে চলুন। কাগজের বই যে নির্মল আনন্দ দিতে পারে তার বিকল্প আর কিছুতে নেই। দরকারের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্যই করবেন, বই পড়ার ক্ষেত্রেও তেমন হতেই পারে কিন্তু ই-বুকের কারণে কাগুজে বই ভুলে যাবেন, এটা শুভ কিছু নয়।
৪. ঘুরে বেড়ানো
সময় পেলে ঘুরতে বেড়িয়ে যান। দলবল নিয়ে বা কখনো একা, ঘুরে বেড়ান কাছের-দূরের জায়গাগুলোতে। আপনি নিজে ঘরকুনো হতেই পারেন, আপনার ঘুরে বেড়াতে ভালো নাই লাগতে পারে কিন্তু সঙ্গের মানুষটা হয়তো ঘুরতে চাচ্ছে, বন্ধুরা আনন্দ নিয়ে প্ল্যান করেছে বেড়ানোর, তাদের সঙ্গে বেড়িয়ে পড়ুন।
৫. প্রিয়মুখগুলোকে সময় দিন
সময়ের এতোটাও অভাব হয় না যে মাসে দুই-একবার আপনি প্রিয়মুখগুলোর জন্য সময় করতে পারবেন না। মূল সমস্যা অনাগ্রহ, আলসেমি যা আপনাকে প্রিয় মানুষদের থেকেই দূরে নিয়ে যাচ্ছে। এক শহরে আছেন যারা, যতোটা পারা যায় একসাথে সময় কাটান। প্রত্যক্ষ সাক্ষাতে সম্পর্কের সজীবতা অটুট থাকে। মেসেজে-স্কাইপে খোঁজ নিয়ে কাজ সারার চল এবার বন্ধ দিন।
৬. পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান
প্রতিদিন রাতে খাবারের পর পরিবারের সঙ্গে ছোট একটা আড্ডা জমান। সবাই নিজেদের গল্প ভাগাভাগি করুন। কিছু অসাধারণ সময় জমা হবে আপনার ঝুলিতে। এই সময়গুলিই বহু বছর বাদে মনে পড়বে, মুখে হাসি এনে দিবে।
জীবনটাকে তার আসল রূপেই উপভোগ করুন। প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই থাকবে, সেটা সাথেই নিয়েই চলুন কিন্তু তাতে হাড়িয়ে যাবেন না। একটি সতেজতায় ভরপুর জীবন আপনার অপেক্ষায় আছে। সেটা প্রযুক্তির বেড়াজালে আটকে যেতে দিবেন না। পৃথিবী, প্রকৃতি আমাদের দু’হাত ভরে দিয়েছে, সেই স্বাদ-বর্ণ-ঘ্রাণ উপভোগ করুন যতোটা পারা যায়।
কেএস/
পরামর্শ
সন্তানকে আয়ত্বে আনতে কিছু টিপস জেনে নিন
সাম্প্রতিক সময়ে এটা যেন অনেক বড় একটা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে, প্রত্যেকটা শিশু কিশোরের বাবা-মায়ের মুখে একই সমস্যার কথা- ‘বাচ্চা দিন দিন আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে’। যেহেতু এখনকার সময়ে প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ হাতের মুঠোয় অনেককিছু পেয়ে যাচ্ছে তাই আগেকার দিনের বাচ্চা আর এখনকার দিনের বাচ্চাদের মধ্যকার তফাৎটা চোখে পড়ার মতো। সময়ের আগেই আজকাল বাচ্চারা অনেক কিছু বুঝে ও জেনে ফেলেছে। আর এটাই আমাদের মানতে সমস্যা হয় যে, বাচ্চারা থাকবে বাচ্চাদের মতো, বড়দের মতো আচরণ করবে কেন? এখান থেকেই এইসব সমস্যার সৃষ্টি, বাচ্চারা অকারণেই বেশি জেদ করছে।
মোট কথা বাচ্চা আয়ত্বের বাইরে যাচ্ছে কি না তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে যায়। তাই সন্তানকে আয়ত্বে আনতে কি করতে হবে তা জানতে হবে আমাদের। সন্তানকে আয়ত্বে আনতে কিছু টিপস জেনে নিন।
১. অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চান
আমরা যদিও সন্তানের চেয়ে বয়সে এবং বিবেক-বুদ্ধিতে বড়, তবুও এটা মানতেই হবে যে কোনো মানুষই ভুলের বাইরে নয়। আপনি যখন বুঝতে পারছেন আপনার কোনো ভুল হয়ে গেছে এবং আপনি সেটার জন্য অনুতপ্ত, কোনো দ্বিধা না করে সরাসরি ক্ষমা চেয়ে নিন। এতে আপনি যেমন আপনার সন্তানের নিকট স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ থাকবেন তেমনি আপনার সন্তানও আপনার কাছ থেকে এই মহৎ শিক্ষাটি পেয়ে যাবে। তখন পিতামাতা ও সন্তানের মধ্যে অহেতুক দূরত্ব বা ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না।
২. সবকিছু কে বয়স দিয়ে বিচার করা থেকে বিরত থাকুন
শুধু মাত্র বয়সে বড় বলে আপনি এটা অনুমান করবেন না যে আপনার সকল সিদ্ধান্ত বা কাজ সব সময় ঠিক এবং সন্তানের নিজের মতামত সবসময় ভুল। সন্তানকে সবসময় একজন আলাদা সত্ত্বার মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে তার নিজের পছন্দ-অপছন্দের গুরুত্ব দিন। তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করুন এবং তার মতামত যুক্তিসংগত হলে তা যদি আপনার মতের সাথে সাংঘর্ষিকও হয়, তবুও রিয়েক্ট না করে ঠান্ডা মাথায় মেনে নিন।
৩. প্রশংসা করুন ধন্যবাদ দিন
আপনার সন্তান যখন কোনো ভালো কাজ করবে তখন তার প্রশংসা করে তাকে ভালো কাজে উৎসাহিত করুন। পজেটিভ কাজের জন্য তাকে ধন্যবাদ দিন পারলে কাজের জন্য পুরষ্কার দিন। এতে করে তার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস যেমন বাড়বে তেমনি আরো বেশি ভালো কাজ করতে উৎসাহ পাবে।
৪. নিজের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার থাকতে শিক্ষা দিন
অনেক ছেলেমেয়ে বেড়ে উঠার সাথে সাথে মিথ্যে বলার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে বাবা মায়ের সাথে সম্পর্কের দূরত্ব। সন্তান যখন আপনাকে সরাসরি কোনো কিছু শেয়ার করতে ভয় পাবে তখনই তার মাঝে মিথ্যে বলে নিজের ভুলকে আড়াল করার প্রবণতা দেখা দেবে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই আপনার সন্তানকে নিজের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার থাকতে শিক্ষা দিন।
৫. সঠিক-ভুল ও উপকার-অপকার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিন
সঠিক কাজের জন্য যেমন তাকে পুরষ্কৃত করবেন তেমনি ভুল কোনো কাজ করলে কখনোই তাকে তিরষ্কার করবেন না। বরং অন্য সময় যেন এরকম ভুল না হয় সেটা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলুন। এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে তাকে সাহায্য করুন। দেখবেন যে কোনো ভুলে বা সমস্যায় পড়লে সে আপনাকেই সবার আগে বলবে এবং এর থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করবে। ফলে দ্বিতীয়বার একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না আর আপনিও থাকবেন নিশ্চিন্ত।
৬. সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিন, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখুন
অনেক ক্ষেত্রে বাবা মায়ের ব্যস্ততার কারণে সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া হয়ে উঠে না। ফলে সন্তান কি করছে না করছে, কার সাথে মেলামেশা করছে কোনো কিছুর খেয়াল থাকে না। এই সুযোগে সন্তান খারাপ পথে যাওয়ার সুযোগ পায়। বাবা-মাকে এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে যেন কোনো মতেই কমিউনিকেশন গ্যাপ না আসে। সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে তাদের পর্যাপ্ত সময় দিন। ছুটির দিনে বাইরে ঘুরতে যান, বাসায় নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ান। তাদের কথা শুনুন, খেলাধুলা করুন। সন্তানকে আয়ত্বে আনতে হলে অবশ্যই সন্তানকে বুঝতে হবে, বকাঝকা করে কঠোর হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে হিতের বিপরীত হতে পারে। সন্তানকে পারতপক্ষে ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে রাখুন, নিজের সাথে সম্পর্ক সহজ করে নিন।
সমস্যাকে কঠিন করলেই কঠিন, আবার সমস্যাকে আন্তরিকভাবে মোকাবেলা করলে সব সমস্যারই একটা সমাধান আছে। ভালো থাকুক আপনার সন্তান, ভালো থাকুক প্রতিটি পরিবারের সকল সদস্য।
জেএইচ
পরামর্শ
শিশুর অতিরিক্ত জেদ যেভাবে সামলাবেন
প্রতিটি শিশুই আলাদা। একেকজনের বেড়ে ওঠার পরিবেশ, আচরণ, মানসিক বিকাশ খুব স্বাভাবিকভাবেই আলাদা হবে। শিশুর বয়স যখন দুই বছরের কাছাকাছি চলে আসে, তখন তার বদমেজাজী হয়ে উঠা বা অল্পতেই রেগে যাওয়া খুব কমন একটি ব্যাপার। আপনার যদি দুই বছর বা তার কাছাকাছি বয়সের কোনো বাচ্চা থেকে থাকে, তাহলে ‘টেরিবল টু’ টার্মটির সাথে আপনি হয়তোবা পরিচিত। হুট করেই কি আপনার বাচ্চা রেগে যাচ্ছে, অতিরিক্ত জেদ করছে? কীভাবে সামলাবেন এই পরিস্থিতি? চলুন জেনে নেই আজ।
টেরিবল টু কি স্বাভাবিক বিষয়?
দুই বছর বা তার কাছাকাছি বয়সের বাচ্চাদের কিছু আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়। এটি শিশুর বিকাশের একটি স্বাভাবিক পর্যায়। এই বয়সী কোনো বাচ্চার ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন, সব কিছুতেই ‘না’ বলা ও ছোটখাটো বিষয়ে চিৎকার করা– এই বিষয়টিকেই শিশু বিশেষজ্ঞরা ‘টেরিবল ২’ নামে আখ্যায়িত করেছেন। এই ধাপটি খুব বেশিদিন স্থায়ী হয় না। তাই যারা বাচ্চার এই ফেজ নিয়ে চিন্তিত, তারা কীভাবে এই পরিস্থিতি সহজে সামলে উঠবেন তা নিয়েই আজকের আর্টিকেলে কিছু টিপস শেয়ার করবো।
এই ফেজ কখন শুরু হয়?
সাধারণত ১৮ মাস শুরু হওয়ার পর থেকে বাচ্চাদের মধ্যে টেরিবল ২ এর কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। বেশিরভাগ শিশু ২ থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যে আক্রোশ ও বিরোধীতা প্রদর্শন করতে শুরু করে। এই লক্ষণগুলো সাধারণত ৩/৪ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে পারে। অনেক বাবা-মা এই সময়ে বেশ হতাশ হয়ে যান, তবে মনে রাখতে হবে বাচ্চাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিরই একটি অংশ এটি।
টেরিবল টু এর লক্ষণ কী?
এর কমন লক্ষণ হলো যে আপনার বাচ্চাকে আপনি যা করতে বলবেন তাতে সে রিঅ্যাক্ট করবে, অকারণেই জেদ করবে। বাবা-মায়েরা খুব সহজেই এই আচরণগত পরিবর্তন চিহ্নিত করতে পারেন। জামাকাপড়/ ডায়পার চেঞ্জ না করতে চাওয়া, খেলনা ছুড়ে ফেলা, জোরে কান্নাকাটি, ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন, খেতে বা ঘুমাতে না চাওয়া, এমনকি বেশি রেগে গেলে কামড়ানো, আঘাত করা ইত্যাদি টেরিবল টু এর সাধারণ লক্ষণ। এই সময়ে বাচ্চারা নিজের মনের ভাব পুরোপুরি বোঝাতে পারে না, তাই খুব সহজেই তাদের মেজাজের পরিবর্তন ঘটে।
কীভাবে সামলাবেন?
১. ধৈর্য ধরুন
বাচ্চা যতই জেদ করুক না কেন, আপনাকে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। কারণ আপনিও যদি সেই সময়ে রেগে যান তাহলে বাচ্চা ভয় পাবে কিংবা আরও বেশি অ্যাগ্রেসিভ বিহেভ করবে। তাই ধৈর্য ধরতে হবে, এই সময়টা কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হবে না। বাচ্চা জেদ করলে ইগনোর করুন এবং অন্যদিনে তার মাইন্ড ডাইভার্ট করার ট্রাই করুন।
২. পজেটিভ থাকুন
সন্তানের সাথে সবসময় ইতিবাচক আচরণ করা উচিত। এতে সে পজেটিভ মাইন্ড নিয়ে বড় হয়। ভালো কিছু করলে প্রশংসা করা ও ভুল করলে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেয়া ইতিবাচক আচরণের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো আপনার সন্তানকে শেখাবে কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য ও কোনটি নয়। ছোট থেকেই সে পজেটিভ মেন্টালিটি নিয়ে বড় হবে।
৩. তাকে চয়েস অপশন দিন
বাচ্চার মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এটা বোঝাতে মাঝেমধ্যে তাকে ‘চয়েস অপশন’ বা যেকোনো দু’টি থেকে একটি বেছে নিতে বলুন। তাকে প্রায়োরিটি দিন, তবে এই বয়সে শিশুকে কোনো কিছুর উপর নিয়ন্ত্রণ দিবেন না, সিদ্ধান্ত আপনারই নিতে হবে।
৪. রুটিন সেট করুন
এই বয়সে বাচ্চারা নিয়ম-কানুন মেনে চলতে চায় না। কিন্তু বাবা-মায়ের উচিত তার রুটিন সেট করে দেয়া। খাওয়ার সময় খাওয়া, ঘুমের সময় ঘুম ও খেলার সময় খেলা। বাচ্চাকে অর্গানাইজড ওয়েতে বড় করার পারফেক্ট সময় এটি। রুটিনে যখন বাচ্চা অভ্যস্ত হয়ে যাবে, তখন আপনারই সুবিধা হবে।
৫. কাজে উৎসাহী করে তুলুন
শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে দুই বছর বয়সে বাচ্চারা তাদের ফিলিংস কন্ট্রোল করা শিখতে পারে যদি তাদের প্রোপার ট্রেইনিং দেয়া যায়। বাচ্চা যখন ভালো কাজ করবে, সঠিক আচরণ করবে; তখন তাকে পুরস্কৃত করুন ও বাহবা দিন। তাহলে সে এই কাজে আরও উৎসাহী হয়ে উঠবে। খেলনা গুছিয়ে রাখা, গাছে পানি দেয়া, নিজের হাতে খাওয়া, কাপড় ভাজ করে রাখা- এই ধরনের কাজে তাকে উৎসাহ দিন। এতে তার অস্থিরতা কমবে।
কখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিবেন?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেরিবল টু স্টেজ বাচ্চার জন্য একদম স্বাভাবিক বিষয় এবং আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা রয়েছে। তবে বাচ্চার কিছু অস্বাভাবিক আচরণ, যেমন – রাগের বসে মাথায় আঘাত করা, নিজেকে আঁচড় দেয়া বা দেওয়ালে আঘাত করা, ঘরের জিনিসপত্র ভেঙে ফেলা ইত্যাদি যদি বার বার করতে থাকে, তাহলে দ্রুত একজন চাইল্ড নিউরোলজিস্টের সাথে কনসাল্ট করুন। আপনার শিশুর যদি ডেভেলপমেন্টাল ডিলে থাকে, কমান্ড না ফলো করে, সেই সাথে চঞ্চলতা অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যায়, সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
টেরিবল টু আসলে বাচ্চার দৈহিক ও মানসিক বিকাশের একটি স্বাভাবিক ধাপ। তবে, বাচ্চার অতিরিক্ত জেদ প্রশ্রয় না দিয়ে ধৈর্য ধরুন। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানকে কোয়ালিটি টাইম দেয়া, স্ক্রিন টাইম কমিয়ে আনা, অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলার সুযোগ করে দেয়া। প্রতিটি শিশু যেন সুস্থ-স্বাভাবিক পারিবারিক পরিবেশে বড় হতে পারে, সেটিও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আজ তাহলে এই পর্যন্তই। ভালো থাকুন।
জেএইচ
- পর্যটন2 days ago
যে কারণে কক্সবাজারে বন্ধ প্যারাসেইলিং
- ইসলাম2 days ago
পা ছুঁয়ে সালাম করা কি ইসলামে জায়েজ?
- অপরাধ2 days ago
যৌতুকলোভী প্রেমিকের কাছে হেরে জীবন বিসর্জন দিলেন প্রেমিকা
- আবহাওয়া4 days ago
শুক্রবার থেকে টানা ৬ দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা
- টুকিটাকি3 days ago
লটারিতে ৩৭ কোটি টাকা পেয়ে হার্ট অ্যাটাক, অতপর…
- রংপুর3 days ago
চলন্ত ট্রেনের ছাদে সাপ, আতঙ্কে যাত্রীরা
- জাতীয়3 days ago
আনলকড দরজা, ছুটতে ছুটতে আবার রানওয়েতেই ফিরলো বিমান!
- ক্রিকেট2 days ago
বিশ্বকাপ ফাইনাল পণ্ড হলে যারা জিতবে শিরোপা