দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ ঋণ নিয়েছে ব্রিটেন

করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতি চাঙা রাখতে প্রচুর ঋণ করতে হচ্ছে ব্রিটিশ সরকারকে। এ ঋণের পরিমাণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি।

ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, গেল মাসে সরকারের কর থেকে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য পৌঁছেছে ৩০ হাজার ৩০০ কোটি পাউন্ডে। এর আগের বছরের সঙ্গে ঋণের পার্থক্য প্রায় ২৫ হাজার কোটি পাউন্ড। শুধু মার্চেই ঋণ ছিলো দুই হাজার ৮০০ কোটি পাউন্ড। যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। 

ইনস্টিটিউট অফ ফিসক্যাল স্টাডিজের পরিচালক পল জনসন বলেন, রেকর্ড পরিমাণ ঋণের পরও বার্ষিক ঋণের পরিমাণ এক মাস আগের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো। ঋণের পরিমাণ গেল বছরও ছিল ২৫ হাজার কোটি পাউন্ড। গেল বছরের মন্দা এর একটি কারণ হলেও বড় কারণ হলো, গেল বছর দেশের অর্থনীতিকে সহায়তা করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে সরকার।

বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়, একই সঙ্গে ৩০ হাজার ৩০০ কোটি পাউন্ড ঋণ নিতে চাইছে সরকার, এটি একটা রেকর্ড। পাশাপাশি মানুষকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত। কারণ মহামারিতে সাধারণ মানুষকে আরো বেশি সহায়তা করতে চাইছে ব্রিটিশ সরকার।

মার্চের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর দেওয়ার হার তুলনামূলক কম। তবে মূল্য সংযোজন কর, জ্বালানি শুল্ক আর ব্যবসার দর কমেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল মাসে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসার সহায়তায় জন্য সরকারের খরচ হয়েছে ২০ হাজার ৩২০ কোটি পাউন্ড। একই সময়ে কর ও বীমা বাবদ জমার পরিমাণ কমেছে তিন হাজার ৪৯০ কোটি পাউন্ড। যা গেল বছরের তুলনায় পাঁচ শতাংশ কম।

ব্রিটেনের অর্থনীতিতে দ্রুত উন্নয়নের আশা দেখিয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। সেখানে বলা হয়েছে, চলতি মাসে লকডাউন শিথিল করায় ব্রিটেনের ব্যবসা খাতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। আইএইএস মারকিটের করা জরিপে দেখা গেছে, এপ্রিলে লকডাউন শিথিল ও বিলাসদ্রব্যের বাজার খুলে দেওয়ায় অর্থনীতি দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০১৩ সালের পর বেসরকারি খাতে এটা ছিল সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।

মহামারী শুরুর পর থেকে এই মুহূর্তে পরিষেবা খাতের চেয়ে এগিয়ে গেছে উৎপাদন খাত। জরিপে দেখা যায়, চলতি মাসে বিলাসদ্রব্যের বাজার খুলে দেওয়া এর বড় কারণ।

আইএইচএস মারকিটের চিফ বিজনেস ইকোনমিস্ট ক্রিস উইলিয়ামসন বলেন, মে-জুন মাসের মধ্যে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে গেলে ব্যবসার কর্মকাণ্ড বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। চাকরির বাজারে সুখবরও শোনালেন তিনি। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

এসএন

Recommended For You