বিশ্বের সমুদ্র দূষণের অন্যতম উৎস পলিথিন। এবার পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন ধ্বংস করে দিতে পারে এমন ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণের সন্ধান পেয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এমন দাবি করেছে চীনের পূর্বাঞ্চলের স্যাংডং প্রদেশের কিংডাওতে চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের গবেষকরা।
চীনা গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ইতিমধ্যে ব্যাকটেরিয়ার প্লাস্টিক খাওয়ার গুণাবলী বিজ্ঞানীদের কাছে ভালোভাবেই পরিচিত। এবার প্রথম পলিথিন-ধ্বংসের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে। ২৩ এপ্রিল এ সম্পর্কে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়ালসে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া সান চাওমিন বলেন, ব্যাকটেরিয়ার একটি মিশ্রণ আবিষ্কার করেছে তারা যা কেবল পলিয়াথিলিন টেরেফথালেটই ধ্বংস করতে পারে না, পলিথিনও পারে। পলিয়াথিলিন টেরেফথালেট বা পিইটি দিয়ে প্লাস্টিকের বোতল তৈরি করা হয় আর ব্যাগ তৈরিতে পলিথিন ব্যবহার হয়।
পলিয়াথিলিন টেরেফথালেট-ধ্বংসকারী ব্যাকটেরিয়া ও এনজাইমের ওপর গবেষণার সঙ্গে তুলনা করে বিজ্ঞানীরা জানায়, পলিথিনের ক্ষয় অনেকটা ধীর গতিতে হয়।
পিইটি ও পলিথিনের নমুনায় ব্যাকটেরিয়া যুক্ত করেছে বিজ্ঞানীরা। কয়েকবার পরীক্ষায় এটি প্রমাণিত হয়েছে, তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার একটি বিশেষ সমন্বয়ে পলিথিন ফিল্মের স্পষ্ট ক্ষয় হয়েছে। এতে প্রচুর ছিদ্র ও গর্ত তৈরি হয়েছে।
প্রতি বছর সাগর ও মহাসাগরে ৫০ লাখ টনের মতো প্লাস্টিকের আবর্জনা ফেলা হয়। এই দূষণ থেকে মুক্ত হতে পরিবেশবান্ধব উপায় খোঁজার চেষ্টা করছে বিজ্ঞানীরা।
প্লাস্টিকের দূষণ বছরে ১০ লাখ পাখি ও ১০ হাজার সামুদ্রিক প্রাণির মৃত্যুর কারণ। এর মধ্যে পলিথিন ও পলিয়াথিলিন টেরেফথালেট হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতিকর। প্লাস্টিকের বিভিন্ন ধরণ ক্ষয় করার মতো ৪৩০টি অণুজীব শনাক্ত করেছে বিজ্ঞানীরা।
জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ওলফগ্যাং স্ট্রেট বলেন, এই গবেষণা খুবই চমৎকার একটি কাজ। কীভাবে পিইটি ক্ষয় হয় তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের ভালো বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। পিইটির ক্ষেত্রে আমাদের এনজাইম রয়েছে। তবে পলিথিনের জন্য ক্ষয় করতে পারার মতো এমন কোনো এনজাইম ছিল না।
তিনি আরো বলেন, ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণে পলিথিন ক্ষয় করার ক্ষমতা যা চীনের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছে তা আমার দেখা সবচেয়ে ভালো উপায়।
এসএন