তারেকের সঙ্গে কথোপকথন ফাঁস, মুখ খুললেন মোসাদের এজেন্ট মেন্দি

ইসরাইলি লিকুদ পার্টির সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিবীড় যোগাযোগের তথ্য ফাঁস হলেও বিষয়টি নিয়ে মুখে খুলছেন দলের নেতারা। এটি নিয়ে কোনো ধরণের মন্তব্য করেননি বিএনপির কোনো স্তরের নেতাই।

তবে এবার মুখ খুললেন মোসাদের এজেন্ট খোদ মেন্দি এন সাফাদি। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া ইঙ্গিতপূর্ণ একটি পোস্টে তিনি নিজের কথা তুলে ধরেন। এতে সরকারের বিরুদ্ধে তার প্রচেষ্টা ও সেজন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথাও স্বীকার করেন এই ইসরাইলি মোসাদের এজেন্ট।

সম্প্রতি ওই পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য জনগণের ইচ্ছায় সরকারের নিপীড়ন থেকে মুক্তি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনগণের ইচ্ছার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আমি যে কোনো রাজনৈতিক কর্মীকে সহায়তা করা অব্যাহত রাখব।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপপ্রচার যাই হোক আমি শেখ হাসিনার সরকারের বিরোধীদের পাশে থাকবো।’

তিনি বিরোধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন জানিয়ে পোস্টে বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারী নিপীড়ন ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য সংগঠিত হতে হবে। এজন্য সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হবে।’

মেন্দি এন সাফাদি এমন এক সময়ে এই পোস্ট করলেন যখন তার সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান ও গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন।

তার এই পোস্টকে বাংলাদেশের শীর্ষ দুই সরকার বিরোধীর পক্ষে অবস্থান নেয়া বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা তারেক রহমান দেশের বিরুদ্ধে ও সরকারের বিরুদ্ধে নানা ফন্দি আঁটছেন। সে অনুযায়ী তিনি মেন্দি এন সাফাদিসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সম্প্রতি তারেক রহমানের প্রতিনিধির সঙ্গে মেন্দির বৈঠক ও তারেক রহমানকে মেন্দির দেয়া একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

ওই সময় আলোচনায় আসে তারেক রহমান নিজে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করা ছাড়াও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন মেন্দি এন সাফাদি। এছাড়া বিরোধী অন্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে তার।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে একটি অস্থিরতা সৃষ্টি করে ফায়দা নিতেই মেন্দি এন সাফাদি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এতে তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তারেক রহমান ও তার সঙ্গীরা।

সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমান ও তার সঙ্গীদের ইসরাইলি যোগাযোগের একাধিক তথ্য প্রকাশ্যে আসে।

সবশেষ যে ভিডিও ফাঁস হয় তাতে দেখা যায়, মেন্দি এন সাফাদি তারেক রহমানকে তার বার্তা দিচ্ছেন। তার পাশে দাঁড়িয়ে বিএনপির কৃষি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ কৃষিবিদ চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল ফারুক।

ভিডিওতে মেন্দি এন সাফাদি তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শুভ সকাল মিস্টার তারেক রহমান। আমি মেন্দি। আপনার টিমের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি মনে করি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিয়ে আমি কাজ করছি। যেসব তথ্য আমি চেয়েছি, এবং যেগুলো পেয়েছি সব বিষয়েই আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমাদের মিশন সম্পর্কে কথা হয়েছে।

তারেক রহমানকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সাফাদি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমার পেছনে যে টীম রয়েছে। তারা আমাদের মিশন সফল করার জন্য কাজ করছে। এ টিম বাংলাদেশের মানুষের মুক্ত জীবন ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করবে।

বিএনপির এই নেতাকে দেশে ফেরানোর আশ্বাস দিয়ে ইসরাইলি গোয়েন্দা বলেন, আমি আশা করি, এ টিম আপনাকে বাংলাদেশের নেতা হিসেবেও প্রত্যাবর্তন করাবে। লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সাফাদি বলেন, ধন্যবাদ। আশা করি, আপনার সঙ্গে খুব শিগগিরই লন্ডনে দেখা হবে।

এই ভিডিওটি কবে ধারণকৃত সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

এছাড়া মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর চিঠি চালাচালিসহ যোগাযোগের তথ্য প্রকাশ্যে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ফেসবুক পেজে ওই চিঠির একটি ছবি প্রকাশ হয়।

এতে দেখা যায়, ওই চিঠিতে মেন্দি এন সাফাদির প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে ব্যাংককে আমন্ত্রণ করা হয়। এরই জেরে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ দুই কেন্দ্রীয় নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ আরও দুইজন বর্তমানে ব্যাংককে অবস্থান করছেন।

বিএনপির ওই নেতা নিজেকে দেশপ্রেমিক দাবি করে বলেন, আমি খালেদা জিয়ার রাজনীতি করি। তারেক রহমানের নয়। আমি তারেক রহমানের নির্দেশে দেশকে ইসরাইলের হাতে তুলে দেয়ার প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকতে চাই না। যা আমীর খসরুকে জানিয়ে দিয়েছি।

ফাঁস হওয়া ওই চিঠিতে সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে সাফাদির যোগাযোগের বিষয়টিও উঠে আসে।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গী দাবি করা গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরও ইসরাইলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের কথা প্রকাশ্যে এলে শুরুতে নুর সেটি নাকচ করেন ও এটি মিথ্যা প্রচার বলে দাবি করেন। পরবর্তীতে তিনি নিজেই বৈঠকের কথা স্বীকার করেন।

এমনকি নিজের বৈঠকের কথা স্বীকার করার সঙ্গে সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে সাফাই দেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব।

নুর বলেন, বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর অন্য কোনো মামলা আছে কিনা আমি সেটা জানি না। কিন্তু পত্রপত্রিকায় যেটি আলোচিত হয়েছে তিনি ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার কথিত এই লোক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করার অপরাধে সরকার তাকে কারাগারে রেখেছে। সে মিটিং করেছে কি করেনি, সেটা কিন্তু আমরা জানি না।

তিনি আরও বলেন, ‘আসলাম চৌধুরীর মতো একজন নেতা বিএনপির মতো একটি দল যারা একাধিকবার ক্ষমতায় ছিল তাদের দলের একটা যুগ্ম মহাসচিব লেভেলের লোক। তার সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার মিটিং হতেই পারে।’

এর আগেও ২০১৬ সালে নয়াদিল্লিতে সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোম্যাসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনের প্রধান মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আসলাম চৌধুরী।

ওই সময় তাদের মধ্যে সরকারকে সরিয়ে দেয়া ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে সেটি জনসমক্ষে আসে। এনিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

সেসময় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের প্রশ্নই উঠতে পারে না।

অথচ পরবর্তীতে এসব বৈঠকের কথা গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেন আসলাম চৌধুরী। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এরপরেও নিয়মিত যোগাযোগের অংশ হিসেবে তারেক রহমান ও তার প্রতিনিধিরা ইসরাইলের সঙ্গে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি নেতারা।

এছাড়া বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা জাহিদ এফ সাদী ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ জ্যাকব মিল্টন এদের মধ্যে দুইজন। লন্ডন প্রবাসী এই দুই ব্যক্তির সঙ্গেও রয়েছে ইসরাইলের নিবিড় যোগাযোগ।

লন্ডনে নানা অপকর্মের কারণে সমালোচিত বিএনপির এই দুই নেতা।

যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জাল করে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিবৃতি বানিয়েছিল সাদী।

‘এর বাইরেও ফ্লোরিডাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতারণা, জালিয়াতি, ধাপ্পাবাজির ঘটনায় গত এক দশকে কমপক্ষে ২৯ বার জেল খেটেছে সে।’

‘আর মিল্টন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে ঠিকাদারি করার সময় দুর্নীতির দায়ে অপসারিত হয়েছিল; নিউ ইয়র্কে একটি মর্টগেজ কোম্পানির নামে প্রবাসীদের সর্বনাশ করে কয়েক বছর জেলেও ছিল।’

সাদী-মিল্টন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার সময়ও ‘প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন’ বলেও জানা যায়।

বিদেশে বসেই সাদী-মিল্টন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে।

সূত্র বলছে, মূলত বিএনপির প্রধান তারেক রহমানের পরিকল্পনায় এসব ঘটনা ঘটে থাকে। সম্প্রতি দেশে অস্থিরতা তৈরির জন্য তারেক রহমান বিএনপির রাজনৈতিক কর্মীদের ছাড়াই এমন একটি বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে সরাসরি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

বিএনপির এই ইসরাইল কানেকশন নিয়ে এরইমধ্যে নাগরিক সমাজে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

২০১৬ সালে আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে ইসরাইলের যোগাযোগের তথ্য ফাঁস হলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করে বলেন, সম্প্রতি ইসরায়েল ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কিছু খবর বেরিয়েছে। ওই সব খবরের প্রতিবাদ জানান বিএনপির মহাসচিব।

সম্প্রতি এক বিএনপি নেতার ইসরাইল ভ্রমণ নিয়ে যে বিতর্ক হয়েছে তা নিয়েও কথা বলেন তিনি। ফখরুল বলেন, বিএনপির সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। বিএনপি ফিলিস্তিনের পক্ষে আছে, থাকবে।

তবে এর কিছুদিনের মধ্যে আসলাম নিজের স্বীকারোক্তি দিলে মির্জা ফখরুল চুপ হয়ে যান। এবার সাম্প্রতিক যোগাযোগের বিষয়েও চুপ এই নেতা।

এ কারণে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে নানা মহলে। অনেকের প্রশ্ন, একাধিক ব্যক্তিকে দিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। এ কারণেই বারবার তাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয় প্রকাশ্যে এলেও বিএনপি মুখে কুলুপ এঁটেছে।

ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, ‘তার নাম মেন্দি সাফাদি না, তার আসল নাম মুনজের সাফাদি। তিনি গুলেন হায়েস্তের একজন সিরীয়। ওই জায়গাটা ১৯৬৭ সালে ইসরাইল দখল করে নেয়।’

‘মোসাদে যোগ দেয়ার কারণে মেন্দি সাফাদিকে তার বাবা-মা ও ভাই-বোনও তাকে ছেড়ে চলে যায়। কারণ তিনি নিজের পরিবারের সম্মানহানি করেছেন। এতে গুলেন হায়েস্ত ছেড়ে তেল-আবিবে চলে যেতে হয় তাকে।’

রামাদান একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লাভের পর থেকে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে এসেছে। অন্যদিকে একজন ‘গণতন্ত্রকামী’ নেতা হিসেবে নুরের এমন আচরণ বাংলাদেশের ৯০ ভাগ জনগণের মতের বিরুদ্ধে যায়। এই ৯০ শতাংশ মানুষের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে কেউ তো গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।

বাংলাদেশ ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং কূটনৈতিক কোনো সম্পর্কও নেই। ফিলিস্তিন-ইসরাইল দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ সব সময় ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কিছুদিন আগেও জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ইসরাইলি গোয়েন্দা ও ইসরাইলের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন কিনা, সে প্রশ্নও উঠেছে।

Recommended For You

Leave a Reply