Connect with us

দুর্ঘটনা

অগ্নিকাণ্ডের বড় কারণ নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, খতিয়ে দেখছে দুদক

Avatar of author

Published

on

দেশে গেলো কয়েক বছরে যেসব অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগই বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে ২৪ হাজার ১০২টি অগ্নিদুর্ঘটনার ৩৮ শতাংশ ক্ষেত্রে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বিদ্যুতের মাধ্যমে। এতে প্রায় ৩৪৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বিদ্যুতের তার দিয়ে সক্ষমতার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন, নিম্নমানের তার ও সরঞ্জাম ব্যবহার, অবহেলা ও নিয়মিত তদারকি না করাই অগ্নি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাম্প্রতিক সময়ে সিদ্দিকবাজার, বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেটে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের পর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ খাতে বড় ধরনের লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় করে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনে নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপক ঘাটতিকে সময় অসময়ে দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) বিদ্যুৎ খাতের কেনাকাটাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ দাখিলের হারও বেড়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে দুদক বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে শুরু করেছে। চলছে অভিযোগের যাচাই-বাছাই ও গোয়েন্দা কার্যক্রম। শিগগিরই সরকারি কেনাকাটার দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশেষ টিম গঠন হচ্ছে বলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

একই ধরনের তথ্য দিলেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজাম্মেল হক খান। তিনি বলেন, এই যে অগ্নিকাণ্ড ঘটছে, এখনো এর পেছনের কারণ উদঘাটিত হয়নি। এটা নাশকতা কিংবা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণেও হতে পারে। তবে দুদকের প্রধান বিবেচ্য বিষয় দুর্নীতি হয়েছে কী না? বিষয়টি আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দেবো। এ বিষয়ে আমাদের কাছে কিছু কিছু তথ্য আসা শুরু হয়েছে। আমরা যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাই, যেখানে বিদ্যুৎ লাইনে নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের কারণে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারের আর্থিক অপচয় হয়েছে। বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে দুদক কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

Advertisement

ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্যানুসারে, ২০২২ সালের অগ্নিদুর্ঘটনাগুলোতে প্রায় ৩৪৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিদুর্ঘটনার কারণগুলো নতুন করে সামনে আসে ঢাকায় কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের পর। এর মধ্যে গত ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে ভয়াবহ আগুনে সেখানকার চারটি মার্কেটের ২ হাজার ৯৬১টি দোকান পুড়ে গেছে। এছাড়া মহানগর মার্কেটের ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের ৫৯টি এবং বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সের ৩৪টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদন্তে আগুনের কারণ হিসেবে জ্বলন্ত সিগারেটের টুকরা অথবা মশা দূর করার জ্বলন্ত কয়েলকে দায়ী করা হয়েছে। যদিও ফায়ার সার্ভিসের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া ১৫ এপ্রিল ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ২৫০টি দোকান পুড়ে গেছে। ওই আগুনের কারণ এখনো জানা যায়নি।

মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) বাধ্যতামূলক পণ্যের তালিকায় থাকা ২২৯টি পণ্যের মধ্যে বিদ্যুতের তার ও সরঞ্জাম রয়েছে। অর্থাৎ এসব পণ্য বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মান মেনে উৎপাদন ও আমদানি হচ্ছে কী না সেটা বড় প্রশ্ন। অসাধু কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোগো ও সিল ব্যবহার করে নিম্ন মানের তার উৎপাদন করে বাজারে ছেড়ে দেন। স্বাভাবিকভাবে অনেক সময় ওই তার দেখে বোঝার উপায় থাকে না সেটি আসল, নাকি নকল। ঢাকায় ১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস সাড়া দিয়েছে এমন অগ্নিদুর্ঘটনা ছিল ১৬টি। এর মধ্যে সাতটির কারণ জানা গেছে। যার চারটিই ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে। দুটি ঘটনা ঘটে গ্যাসলাইনের মাধ্যমে নির্গত হওয়া গ্যাস জমে।

ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন বলছে, বিদ্যুতের তার দিয়ে সক্ষমতার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন, নিম্নমানের তার ও সরঞ্জাম ব্যবহার, অবহেলা ও নিয়মিত তদারকি না করাই অগ্নিদুর্ঘটনার প্রধান কারণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাদের মতে, বিদ্যুতের তার দিয়ে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হলে তাপে সেটি অনেক বেশি প্রসারিত হয়। তখন তারের ওপরে থাকা প্লাস্টিক আবরণ গলে স্ফুলিঙ্গ হয়। সেখান থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস অগ্নিদুর্ঘটনার আরও কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, আগুনের ঘটনার দ্বিতীয় বড় কারণ বিড়ি ও সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা। ২০২২ সালে ১৬ শতাংশের কিছু বেশি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে এ কারণে। প্রায় ১৪ শতাংশ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে চুলা থেকে। সেটি বৈদ্যুতিক, গ্যাস বা মাটির চুলা হতে পারে। গ্যাস সরবরাহ লাইনও আগুনের ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ। ২০২২ সালে ৩ শতাংশের কিছু বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে গ্যাস সরবরাহ লাইন থেকে।

বৈদ্যুতিক গোলযোগ, বিড়ি ও সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা, চুলা ও গ্যাসের লাইন থেকে ৭১ শতাংশ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে ২০২২ সালে। এর বাইরে ছোটদের আগুন নিয়ে খেলা, উত্তপ্ত ছাই বা জ্বালানি, খোলা বাতির ব্যবহার, যানবাহনের দুর্ঘটনার আগুন ইত্যাদি অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ। সব মিলিয়ে কারণ পাওয়া গেছে ১৯টি। তবে ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে ৪ হাজার ৯১টি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কারণ অজ্ঞাত বা অন্যান্য উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

তিন বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৩৯০ কোটি টাকার দুর্নীতি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গবেষণায়ও ভয়াবহ দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। গত বছরের ১১ মে বাংলাদেশে কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্প : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে কয়লাভিত্তিক তিন বিদ্যুৎ প্রকল্পে শুধু ভূমি ক্রয়, অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদানে মোট ৩৯০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে বরিশাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্নীতির পরিমাণ ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার, বাঁশখালী এস এস বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২৫৫ কোটি ও মাতারবাড়ী এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আত্মসাৎ হয় ১১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ওই প্রতিবেদনও গুরুত্ব দিয়ে যাচাই-বাছাই করছে বলে জানা গেছে।

Advertisement
মন্তব্য করতে ক্লিক রুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন

রিপ্লাই দিন

দুর্ঘটনা

মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দিয়ে টেনে নিয়ে গেলো বাস

Published

on

রাজধানীর বনানীতে বিনিময় পরিবহনের একটি বাস এক মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দিয়ে বাসটি কিছুদূর টেনে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন চালক।

শনিবার (১৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানের ঢাকা গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী সাহান হক।

তিনি বলেন, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে একটি মোটরসাইকেল বনানীর ২৭ নম্বর থেকে ইউটার্ন নিয়ে উত্তরার দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ বিনিময় পরিবহনের বাসটি মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিয়ে কিছুদূর টেনে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।

ওসি কাজী সাহান হক বলেন, বিনিময় পরিবহনের বাসটি ট্রাফিক সিগন্যান অমান্য করে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে পেছন থেকে ওই মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে বাইকের চালক বাসের নিচে চলে যান।

Advertisement

নিহতের নাম আক্কাস। তার বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাজপাতালে নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, নিহত আক্কাস আগে সরকারি চাকরি করতেন। বর্তমানে এসকিউ ক্যাবলসে টার্ন্সপোট নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

ঢাকা

গরু-মহিষ বোঝাই দু’টি ট্রলার ডুবি

Published

on

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় দু’টি ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২০টি গরু ও ২টি মহিষ নিয়ে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ট্রলারে থাকা ২টি গরু নিখোঁজ থাকলেও বাকি গরু-মহিষসহ ট্রলার চালক ও ব্যাপারীরা সবাই জীবিত উদ্ধার হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল রউফ সরকার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার আরিচা লঞ্চ ঘাটের দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে যমুনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে মো. আফজাল হোসেন তার ট্রলারে ২০টি গরু ২টি মহিষ নিয়ে কাজিরহাট থেকে আরিচায় নদীপথে রওনা করেন। নদীর মাঝ পথে হঠাৎ গরু বোঝাই ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সে কারণে নদীর স্রোতের সঙ্গে ট্রলারটিকে চালিয়ে কিনারে আসতে থাকে। আরিচা লঞ্চ ঘাট থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে যমুনা নদীতে হঠাৎ সামনের দিক থেকে আসা আরেকটি খালি ট্রলার রাতের অন্ধকারে গরু বোঝাই ট্রলারের সঙ্গে সজোরে সংঘর্ষ হয়। এবং খালি ট্রলারের সামনের অংশের বেশি পরিমাণ গরু বোঝাই করা ট্রলারের ওপর উঠে যায়।

সংবাদ পেয়ে শিবালয় থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, গরু-মহিষ ও ট্রলারে থাকা মানুষদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ২টি গরু নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান ব্যাপারীরা।

শিবালয় থানার (ওসি) আব্দুল রউফ সরকার বলেন, নিখোঁজ দু’টি গরুর সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছে না ব্যাপারীরা। আমরা তাদের কথা অনুযায়ী গরু ২টির উদ্ধারের চেষ্টা করছি।

Advertisement

এএম/

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

দুর্ঘটনা

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু

Published

on

সৌদি আরবে এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি ৩ যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরের দিকে দেশটি আল আলিফ শহরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে জানা গেছে নিহতদের নাম পরিচয়। তাদের নিবাস বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলায় বলে জানা গেছে।

নিহতদের পরিবার চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় বসবাস করেন। নিহত তিন যুবক হলেন; এই উপজেলার ৩নং দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামের ইসমাইল ছৈয়ালের ছোট ছেলে সাব্বির, একই ইউনিয়নের বর্ডারফুল এলাকার জামাল চৌকিদারের ছেলে সবুজ চৌকিদার এবং ২নং আলগী দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রিফাত।

জানা যায়, সৌদি আরবের আল আলিফ শহরে এই ৩ যুবক কর্মরত ছিলেন। সেখানেই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তারা। নিহতদের মরদেহ দেশে আনার জন্য উপযুক্ত স্থানে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

 

এম/এইচ

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত