পুকুরে মিললো বিরল প্রজা‌তির কাছিম

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মাছ চাষের পুকুর থেকে ১২ কেজির একটি কাছিম শিকার করা হলেও ৮ ঘন্টার পর সংকটাপন্ন কাছিমটি উদ্ধার করে রাতে বন কর্মকর্তা ধরলায় অবমুক্ত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুর ১২ টার দিকে বড়ভিটা ইউনিয়নের চর বড়লই হাজিটারি গ্রামের খামারি আবুল হোসেনের পুকুর থেকে কয়েক জেলে কাছিমটি শিকার করে। বিকালে ওই খামারি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খামারি আবুল হোসেন জানান, তার প্রায় তিন বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে তিনি মাছ চাষ করেন। গত কয়েকদিন থেকে পুকুরে জাল ফেললে কাছিমটি জাল কামড়ে ধরতো। গতকালও (বুধবার) একই ঘটনা ঘটেছে। জালে বড় কিছু আটকাচ্ছে এটা বুঝুতে পেরে জেলেরা কাছিমটি ধরার পরিকল্পনা করে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়ভিটা বাজারের পাশের কয়েকজন জেলে জাল নিয়ে এসে পুকুর থেকে কাছিমটি ধরে করে নিয়ে যান। কাছিমটি প্রায় ১২ কেজি ওজনের ছিল।

এই খামারি বলেন, ‘আমরাতো কাছিম খাই না। জেলেরা হিন্দু সম্প্রদায়ের। তারা বললেন এটা মাছ জাতীয়। এটা তারা খাবেন। পরে স্বপন বিশ্বাস নামের জেলেসহ কয়েকজন মিলে কাছিমটি নিয়ে যান। আমি তাদের কাছে কোনও টাকা পয়সাও নেই নাই।

কাছিমটি কি ভাবে আপনার পুকুরে প্রবেশ করলো, এমন প্রশ্ন করলে আবুল হোসেন জানান, সম্ভবত ’২০১৭ সালের ভয়বহ বন্যায় পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। তখন ধরলার পানি প্লাবিত হয়ে কাছিমটি পুকুরে ঢুকে থাকতে পারে। এতোদিন ছোট থাকায় হয়তো আমরা বুঝতে পারি নাই। গত বছর এলাকার ছেলেরা পুকুরে কাছিম থাকার কথা বলেছিল কিন্তু আমি বিশ্বাস করি নাই। কিন্তু এ বছর পুকুরের মাছ খাওয়ায় এবং জালে সমস্যা করার কারণে জেলেরা বিষয়টা ধরতে পারছে।

জেলে স্বপন বিশ্বাস জানান, দেড় ঘণ্টায় আমরা কয়েকজন জেলে এই কাছিমটি পুকুর থেকে শিকার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। ১২ কেজি ওজনের কাছিমটি পুকুরে পাবো প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। মাছ জাতীয় কাছিমটি আমাদের হিন্দু সম্প্রদায় মানুষদের প্রিয় খাবার। অনেক অনেক বছর পর এতো বড় খেতে পারবো তাই কাছিমটি খাওয়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু সে আমার আমাদের পুরণ হলো না। কাছিম নিয়ে আসার খবর বন কর্মকর্তা পেয়ে রাত ৮ টায় এসে কাছিমটি নিয়ে গিয়ে বাড়ির সামনে ধরলা নদীতে অবমুক্ত করেন। একটু মন খারাপ হলে বন কর্মকর্তা কাজটি ভালই করেছেন। আমরা অনেক বড় পাপ থেকে রক্ষা পেলেলাম।

ফুলবাড়ি উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা নবির হোসেন জানান, দিনের বেলা খবর পাইনি। সন্ধায় খবর পেয়ে দ্রুত কাছিমটি উদ্ধারের জন্য খামারি আবুল হোসেনের বাড়ি গেলে কাছিমটি পাওয়া যায়নি। পরে বিভিন্ন ভাবে খবর নিয়ে নিশ্চিত হই কাছিমটি জীবিত অবস্থায় জেলে পাড়ার এক বাড়িতে আছে। খামারি আবুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে রাত ৮ টার দিকে কাছিমটি উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান কাছিম প্রায় ১২ কেজির জনের হলেও এটি একটি বিরল প্রাণি।

 

 

Recommended For You

About the Author: Abdullah Mamun

Leave a Reply