রংপুর
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধ্বসে যাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৩০০ মিটার ধ্বসে যাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ১০টি গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক। বামনাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানী ঘাট এলাকায় ধ্বসে যাওয়া বাঁধ দিয়ে দুধকুমার নদীর পানি হুহু করে লোকায় ঢুকছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে দশটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে আমন বীজলা, পাট ও সবজিখেত। বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ছে নদীর পানি। বুধবার ভোরে বাঁধটি ধ্বসে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগুলো হচ্ছে বামনডাঙ্গা, তেলিয়ানী, মালিয়ানী, বড়মানি, ধনিটারী, অন্তাইপাড়, সেনপাড়া, পাটেশ্বরী, বোয়ালেরডারা ও পুর্ব সানজুয়ারভিটা।
বড়মানি গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন (৫৭) বলেন, তার ২০ শতাংশ জমির আমন বীজতলা পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হলে তিনি ৬ বিঘা জমিতে আমন :ধান চাষ করতে পারবেন না। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুধকুমার নদীর পানি ধ্বসে যাওয়া বাঁধ দিয়ে প্রবেশ করছে তাদের বাড়িঘরে। বৃহস্পতিবার দুপুর পযর্ন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থধা গ্রহণ করেনি।
একই গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া (৬০) বলেন, তার তিন বিঘা জমির পাট ও দুই বিঘা জমির সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ধ্বসে যাওয়া বাঁ দিয়ে দুধকুমার নদীর পানি হুহু করে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। নদীর পানি আসা বন্ধ করা না হলে তারা খুবই ক্সতিগ্রস্থ হবেন। বন্যার আগে বাঁধটি সংস্কার করা হলে আমাদেরকে দুর্দশায় পড়তে হতো না।
তেলিয়ানী গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৫৫) বলেন, নদীর পানির সাথে বিপুল পরিমানে বালু এসে জমাট হচ্ছে তাদের আবাদি জমিতে। পানি কমে গেলেও বালুর কারনে তারা এসব জমিতে চাষাবাদ করতে পারবেন না। বাঁধটি ধ্বসে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। “পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে কিন্তু এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বলো জানান।
বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি জানান, ধ্বসে যাওয়া বাঁধ দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় তার ইউনিয়নে ১০টি গ্রামে সহস্রাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। পানির গতিরোধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ইসমত ত্বোহা বলেন, বাঁধটি ২০১২-২০১৩ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এরপর এটির কোন মেরামত করা হয়নি। ধ্বসে যাওয়া বাঁধে পানির স্রোত থাকায় এই মুহুর্তে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলানো যাচ্ছে। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিউ টিউব প্রস্তুত করা হয়েছে। পানির স্রোত কমলেই জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলানো হবে। এখানে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা জাহান বলেন, নদীর পানির গতিরোধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুতি নিয়েছে। দ্রুত বাঁধটি মেরামত করা হবে। পুরো বিষযটি তিনি নজরদারী করছেন।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, প্রধান নদ-নদী ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ ২৬টি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। এখনো কোথাও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হযনি। তবে নদীরবুকে চরাঞ্চলে কিছু মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
জনদুর্ভোগ
বাড়ছে তিস্তার পানি, চর-নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা অববাহিকায় পানি বাড়ছে। এর প্রভাবে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এতে হু হু করে পানি ঢুকে চর ও নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে রয়েছে নদীপাড়ের মানুষ।
শনিবার (১৫ জুন) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের ফসলি জমি। সদর উপজেলার কালমাটি, বাগডোরা, খুনিয়াগাছ, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, গোবর্ধনসহ কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। অন্তত ৫০০ ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে। বাড়িঘর-রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় রান্নাবান্নাসহ চলাচলে বিপাকে পড়েছেন লোকজন।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার মহসিন আলী জানান, চর এলাকায় তিস্তার পানিতে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। হাতীবান্ধা উপজেলার চরসিন্দুর্না গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তার পানিতে আমার বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। অনেক বাদাম গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।
সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ গণমাধ্যমে বলেন, ইউনিয়নের চর এলাকায় কিছু কিছু ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বলেন, উজানে বৃষ্টিপাতের কারণে ভোর থেকে তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। তবে বিকেল থেকে আবার কমতে শুরু করেছে।
এএম/
অপরাধ
মাদকসহ এক নারী কারবারি গ্রেপ্তার
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে হ্যাপি গোল্ড ও কিং ফিসার ৭৭ বোতল বিদেশি মদসহ মাদক কারবারি জান্নাতী বেগমকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই নারীর বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে অভিযুক্ত ওই নারীকে কুড়িগ্রাম কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপ কুমার সরকার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের ভায়ালটারী গ্রামের মাদক কারবারি জান্নাতী বেগমের বসতঘরের খাটের নিচে লুকানো হ্যাপি গোল্ড ও কিং ফিসার নামের ৭৭ বোতল বিদেশি মদসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. রুহুল আমিন বলেন, গ্রেপ্তার মাদক কারবারির নাগেশ্বরী থানায় একটি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করা রয়েছে। সেই সাথে কুড়িগ্রাম জেলায় মাদক নির্মূল করার লক্ষ্যে আমাদের এই মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এএম/
রংপুর
পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়ছে তিস্তার
তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হওয়ায় শঙ্কায় রয়েছেন নদী তীরবর্তী মানুষ।
শনিবার (১৫ জুন) সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার মাত্র তিন সেন্টিমিটার নিচে। ডালিয়া পয়েন্টেও মাত্র তিন সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল বিকেল ৩টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার ২৮ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার নিচে। শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুর ১২টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার ২৮ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে।
কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, ‘গতকাল ভোর থেকে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়ছে। বর্ষার আগে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় বন্যা হলে নদীপাড়ের মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নদী তীরবর্তী আবাদি জমিগুলো তলিয়ে গেলে বাদাম ও শাক-সবজির ক্ষতি হবে।’
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহিদুল হক বলেন, ‘কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেয়া আছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সব সময় নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখতে বলা হয়েছে।’
টিআর/
- বাংলাদেশ5 days ago
উত্তরের পথে ১৩ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনে ধীরগতি
- টুকিটাকি5 days ago
৩শ’ টাকার গয়না ৬ কোটিতে কিনলেন তরুণী, অতপর…
- দেশজুড়ে6 days ago
রাজনীতিতে আসছেন এমপি আনারের মেয়ে ডরিন
- বাংলাদেশ7 days ago
এমপি আজীম হত্যাকাণ্ড : সেপটিক ট্যাংকে পাওয়া মাংসের টুকরো মানুষের
- চট্টগ্রাম7 days ago
এক দিনে ভেসে এলো দুই মরদেহ
- ক্রিকেট3 days ago
বাংলাদেশ সুপার এইটে গেলে যারা থাকবে প্রতিপক্ষ
- ঢাকা7 days ago
সিঁধ কেটে আড়াই মাসের শিশু চুরি
- ক্রিকেট2 days ago
গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার ঝাঁঝ মেটালো নিউজিল্যান্ড
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন