৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

ইতিহাস:  ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং কর্মক্ষেত্রে বৈরী পরিবেশের প্রতিবাদ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সুতা কারখানার একদল শ্রমজীবী নারী। তার ৫১ বছর পর ১৯০৮ সালে কর্মঘন্টা কমানো, মুজুরি বাড়ানো আর ভোটের অধিকারের দাবিতে নিউইয়র্কে সোচ্চার হয়ে বিক্ষোভ করে ১৫ হাজার নারী। এক বছর পর ১৯০৯ সালে আমেরিকার সোস্যালিস্ট পার্টি প্রথম জাতীয় নারী দিবস ঘোষণা করে। 

১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের এক সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণার প্রস্তাব দেন, ক্লারা জেটকিন নামে এক জার্মান নারী। ওই সম্মেলনে অংশ নেয় বিশ্বের ১৭টি দেশের ১০০ জন নারী। তারা সবাই এই প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। পরের বছর ১৯১১ সালে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানী ও সুইজারল্যান্ডে দিনটি আন্তর্জাতিক ভাবে সর্বপ্রথম পালিত হয় । জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে দিনটি নারী দিবস হিসেবে উদযাপন করছে। 

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবে। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

“বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের ফলে নারী উন্নয়ন আজ সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, বিচারবিভাগ, প্রশাসন, কূটনীতি, সশস্ত্রবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শান্তিরক্ষা মিশনসহ সর্বক্ষেত্রে নারীর সফল অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, এদেশের নারী পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টায় বিনির্মাণ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর সম অধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেছেন।

“নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে করেছে সমঅংশীদারিত্ব। আর তাই সারা বিশ্বে বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি।”

৮ মার্চ এর কর্মসূচি:

নারী দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে ‘আমরাই পারি’ জোট শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ‘আঁধার ভাঙার’ শপথ।

পাশাপাশি জোটের জাতীয় কমিটির সদস্য, জেলা জোটের সদস্য, মানবাধিকারকর্মী, সিভিল সোসাইটির বন্ধু সজ্জন, আইন অধিকারকর্মীসহ অনেকে যুক্ত থাকবেন অনলাইন প্ল্যাফর্মে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে জাতীয় পর্যায়ের ৫ জনকে ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা’ সম্মাননা দেবে সরকার। সকাল সাড়ে ১০টায় শিশু একাডেমি মিলনায়তনে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের হাতে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ।

বিকাল ৪টায় ৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে অনলাইনে আলোচনা সভা হবে। 

রাইদুল শুভ

Recommended For You