কুষ্টিয়ার ডিসিকে সতর্ক, এসপিসহ চারজনকে ফের আসতে হবে হাইকোর্টে

১৩৩ কোটি টাকার বেশি মূল্যের সম্পত্তি মাত্র ১৫ কোটি টাকায় নিলামে তোলার ঘটনায় কুষ্টিয়ার ডিসিকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া তলবের পরেও না আসা করোনা আক্রান্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) চারজনকে ফের আসতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্যে আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত।

সোমবার (২২ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১১ আগস্ট ৫ জনকে তলব করেন হাইকোর্ট। তলবের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ আগস্ট) সকালে সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছাড়া আদালত অবমাননার অভিযোগে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ আদালতে হাজির হয়েছিলেন। পরে এ বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

সেদিন আদালতে হাজির হয়েছিলেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. খাইরুল আলম, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসাইন ও নিলামকৃত সম্পত্তি গ্রহণকারী ব্যবসায়ী রশিদ অ্যগ্রো ফুড লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী মো. আবদুর রশিদ। তাদের সোমবারও আদালতে হাজির থাকতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিতকায় আজ ডিসিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। আর বাকি ৪ জনকে ২৪ অক্টোবর উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেদিন তাদের উপস্থিতিতে আদেশ দেয়া হবে।

এর আগে গেলো ১১ আগস্ট হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও ১৩৩ কোটি টাকার বেশি মূল্যের সম্পত্তি মাত্র ১৫ কোটি টাকায় নিলামে তোলায় কুষ্টিয়ার ডিসি-এসপিসহ পাঁচজনকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

গেলো ২৪ মার্চ ওই সম্পত্তি (প্রতিষ্ঠান) নিলামে তুলতে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই নিলামের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্স, ভিআইপি রাইস মিলস এবং ভিআইপি অটো রাইস মিলস লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শফিকুল ইসলাম। ২ আগস্ট নিলাম স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এর পরেও গত ৫ আগস্ট ব্র্যাক ব্যাংক নিলাম ক্রয়কারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে রাতে জমি দখল করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালে কুষ্টিয়ার পোড়াদহের আইলচারা বাজারে অবস্থিত মো. শফিকুল ইসলামের ধান, চাল, আটা ও ভুষি উৎপাদনের তিনটি প্রতিষ্ঠান বন্ধক (মর্টগেজ) রেখে ব্র্যাংক থেকে ৩৬ কোটি টাকা, পরের বছর তা বাড়িয়ে ৪২ কোটি ঋণ গ্রহণ করেন। তারপর থেকে তিনি নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে আসছিলেন। তবে করোনা মহামারির কারণে প্রতিষ্ঠান তিনটি দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় একটা সময় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন শফিকুল ইসলাম।

এই কারণে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ শফিকুল ইসলামকে খেলাপি দেখিয়ে তার বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে তুলতে গত ২৪ মার্চ দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় এবং ১৮ এপ্রিল নিলাম আয়োজন করে ১৩৩ কোটি টাকা মৃল্যের সম্পত্তি মাত্র ১৫ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়।

Recommended For You