Connect with us

বাংলাদেশ

ব্যাংক রাজনীতির জায়গা না, জবাবদিহিও নেই

Published

on

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: ১৯৬৩ সালে আমি করাচিতে প্রশিক্ষণে ছিলাম। যোগ দিয়েছি হাবিব ব্যাংকে। প্রশিক্ষণে খেলাপি ঋণ নিয়ে তেমন কিছু পড়ানো হতো না। একেবারে শেষ দিকে এসে বলা হলো, খেলাপি ঋণ বলে একটা বিষয় আছে। তখন যা পড়ানো হতো তা বিকেলে শাখায় গিয়ে দেখানোর নিয়ম ছিল। এক ভদ্রলোককে দায়িত্ব দেওয়া হলো কোন শাখায় নেওয়া হবে, তা বের করার। সাধারণত আমাদের মাঝারি আকারের কোনো শাখায় নেওয়া হতো, যাতে ভিড় কম থাকে। ওই ভদ্রলোক মাঝারি আকারের সব শাখায় খবর নিয়ে জানলেন, কোনো খেলাপি ঋণ নেই। এরপর আমাদের একটা বড় শাখায় নেওয়ার জন্য ঠিক হলো। করাচির হাবিব ব্যাংকের ওই শাখা থেকে জানানো হলো, একটা ঋণ খেলাপি হয়েছে। তবে কথাবার্তা হয়ে গেছে, ঠিক হয়ে যাবে। দেখাতে হলে এখনই আসতে হবে। সেই প্রথম খেলাপি ঋণ সম্পর্কে জানতে পারলাম। এরপর প্রশিক্ষণ শেষ করে ঢাকায় ফিরে এলাম। ঢাকাতেও তেমন খেলাপি ঋণ দেখা গেল না। মনে হলো, এটা বইয়ে আছে তাই পড়ানো হয়েছে। কিন্তু এটা যে কী জিনিস, তা স্বাধীন হওয়ার পর হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। প্রথম দিকে তেমন খেলাপি ঋণ ছিল না, ধীরে ধীরে ঋণ খারাপ হওয়া শুরু করল। প্রথমে নিয়ম ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক খারাপ ঋণ খেলাপি করে দেবে। এরপর নিয়ম করে দেওয়া হলো, নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ আদায় না হলে খেলাপি হবে। আর এখন দেখা যাচ্ছে প্রায় সব ঋণই খেলাপি। বরং ভাগ্যক্রমে অল্প কিছু ভালো ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। এটা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা।

৯০ শতাংশ ব্যাংকমালিক ভালো। সরকার দুষ্টলোকদের পরিবর্তে যদি ভালো পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে ভালো পরামর্শ পাবে। আর সরকারকে চাঁদা দেওয়ার পরিবর্তে আমানতকারীদের নিরাপত্তার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা করতে হবে। সরকার চাইলে ব্যাংক খাত ঠিক হবে, এর বাইরে অন্য কোনো উপায় নেই।
স্বাধীনতার পরের অভিজ্ঞতা কেমন?

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: আগে হাবিব ব্যাংকে কাজ করেছি। দেশ স্বাধীনের পর তো অনেকগুলো ব্যাংকে কাজের সুযোগ হয়েছে। হাবিব ব্যাংকে অনেক প্রক্রিয়া মেনে ঋণ দেওয়া হতো। কর্মকর্তাকে স্বাক্ষর করতে হতো এমন একটি নথিতে, যেখানে লেখা থাকত সন্তুষ্ট হয়ে ঋণ দিয়েছি। যদি কোনো কারণে ঋণ খারাপ হয়ে যেত, তাহলে ওই কর্মকর্তার কাছে টাকা আদায়ের চাপ আসত। এমনকি কোনো কোনো সময় ঋণের একটি অংশ ওই কর্মকর্তার কাছ থেকে আদায় করা হতো। অর্থাৎ ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা যেন চলে গেল। কে অনুমোদন দিল, কে সুপারিশ করল, কে বিতরণ করল, সব হিসাব যেন উঠে গেল। কাউকে দায়ী করা হয় না। এমন পরিস্থিতি শুরু হলো ’৮০–এর দশকে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে। তখন বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হলো। বিশ্বব্যাংক তখন ইউরোপ ও আমেরিকার কর্মকর্তাদের নিয়ে একটা দল গঠন করল। প্রতিটি ব্যাংকে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলো। তারা পাঁচ বছর কাজ করে একটা দেশের ব্যাংকগুলোর অনেক উন্নতি করল। তারা যে–ই চলে গেলেন, আবার আগের অবস্থায় ফিরে এল খেলাপি ঋণ। এর মানে আমরা কোনো নিয়মের মধ্যে চলতে চাই না এবং সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ নিয়মের মধ্যে থাকতে চায় না। এখানেই মূল সমস্যা।

বিজ্ঞাপন

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
আপনার সব ধরনের ব্যাংকে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। খেলাপি ঋণ কমানো বা অনিয়ম প্রতিরোধে সফল ছিলেন?

Advertisement

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: আমি যখন সোনালী বা অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলাম, তখন খেলাপি ঋণ অনেক কমাতে পেরেছিলাম। এমডি ইচ্ছা করলেই পারে। যদি এমডির ওপর কোনো হস্তক্ষেপ না করা হয়। আমার সময়ে এ ধরনের চাপ সৃষ্টির প্রবণতা কম ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। এখনকার সরকার যেভাবে প্রত্যক্ষভাবে ব্যাংক খাতে হস্তক্ষেপ করছে, তখন এভাবে হস্তক্ষেপ করত না। তখনো তদবির হতো, তবে এখনকার মতো ওপর মহল থেকে না। এটা কোনো মাঝামাঝি পর্যায় থেকে হতো, আমরা তা ঠেকাতে পারতাম। আর যদি কেউ বাড়াবাড়ি করত, তাহলে আমরা সক্রিয় হতাম।

যেমন, লুৎফর রহমান সরকার যখন গভর্নর ছিলেন, আমি তখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগ দিই। একবার একজন বড় ব্যবসায়ী গভর্নরকে অপমান করেছিলেন, শার্টের কলার ধরেছিলেন। তিনি ক্ষমতার খুব কাছাকাছি ছিলেন। ওই সময় লুৎফর রহমান সরকার দৌড়ে আমার কক্ষে চলে এসেছিলেন। এর মধ্যেই ওই ব্যবসায়ী পালিয়ে যান। আমরা বিষয়টি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া সাহেবকে জানালাম। আরও কয়েকজনকে জানানো হলো। তারপরে ওই ভদ্রলোক সরকার সাহেবের কাছে এসে ক্ষমা চেয়ে গেলেন। এই যে আমরা সক্রিয় হলাম, এর ফলেই তাঁকে মাফ চাইতে হলো। আর কিবরিয়া সাহেব সরাসরি কথা বলার মানুষ ছিলেন। ওই ভদ্রলোক অবশ্য এখন আরও ক্ষমতাবান। তাঁকে ঠেকানোর সাধ্য গভর্নর কেন, কারও নেই। কে কতটা সক্রিয়, তার ওপর বিষয়টা অনেকটা নির্ভর করে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকে যাঁরা আছেন, তাঁদের কারও সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোনো বিষয়ে নালিশ করার সক্ষমতা নেই। এটা অন্যতম একটা কারণ।

তখন কিবরিয়া সাহেব ফোন করে বললেন, আপনারা পর্ষদ ভেঙে দিলেন। আমাকে একটু জিজ্ঞেস করলে কি খুব অসুবিধা হতো। তখন আমি বললাম, আপনাকে বললে পর্ষদ ভাঙা যেত না। আপনি রাজনীতি করেন। উনি জানতে চাইলেন, সিদ্ধান্ত স্থগিত করবেন নাকি। গভর্নর জানিয়ে দিয়েছিলেন, স্থগিত করা হবে না। তাহলে তো বাংলাদেশ ব্যাংক থাকে না।
আপনি গভর্নরের শার্টের কলার ধরার কথা বললেন। আপনাদের সময়েই একটি ব্যাংকের পর্ষদ দখল করার ঘটনা তো ঘটেছিল। আর এখন তো এমডিকে গুলি করার ঘটনাও ঘটছে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: আমি তখন ডেপুটি গভর্নর। হঠাৎ শুনলাম একটি ব্যাংকে পরিচালনা পর্ষদের সভায় গোলাগুলি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে বলা হলো, দেখা গেল ঘটনাটি সত্য। তখনকার গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বললেন, কারও সঙ্গে পরামর্শ না করে পর্ষদ ভেঙে দেন। আমরা আইন অনুযায়ী, আধা ঘণ্টার মধ্যে পর্ষদ ভেঙে দিলাম। তখন কিবরিয়া সাহেব ফোন করে বললেন, আপনারা পর্ষদ ভেঙে দিলেন। আমাকে একটু জিজ্ঞেস করলে কি খুব অসুবিধা হতো। তখন আমি বললাম, আপনাকে বললে পর্ষদ ভাঙা যেত না। আপনি রাজনীতি করেন। উনি জানতে চাইলেন, সিদ্ধান্ত স্থগিত করবেন নাকি। আমি গভর্নরের সঙ্গে কথা বলতে বললাম। গভর্নর জানিয়ে দিয়েছিলেন, স্থগিত করা হবে না। তাহলে তো বাংলাদেশ ব্যাংক থাকে না। একটি ব্যাংকের পর্ষদে মারামারি হবে, আর বাংলাদেশ ব্যাংক চেয়ে চেয়ে দেখবে, তা তো হয় না।

তাই বলি আমরা তো নানা কিছুই করেছিলাম, এতে তো কোনো অসুবিধা হয়নি। কারও চাকরিও যায়নি। কেউ কিছু বলেননি। তবে কেউ কেউ যে খুশি হননি, তা বুঝতে পারি।

Advertisement

এরপর তো কত ঘটনা ঘটেছে, বরং এর চেয়ে বড় ঘটনাও ঘটেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তো আর কোনো ব্যাংকের পুরো পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সাহস করল না। আমরা যা করেছি, তা এখনো করা সম্ভব। আমি বিশ্বাস করি, গভর্নরের কোনো সিদ্ধান্তকে কোনো রাজনৈতিক সরকার বাধা দেবে না।

সে সময়েই একবার এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আপনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের ব্যাংক খাত এখন মাফিয়াদের দখলে। কেন বলেছিলেন?

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: মূলত কিবরিয়া সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এভাবে বলেছিলাম। তখন আমি সোনালী ব্যাংকের এমডি। উনি একটু মন খারাপ করেছিলেন। পরে বলেছিলেন, এভাবে সামনাসামনি না বলে একা একা জানাতে পারতেন। পরে ওনার সঙ্গে যখন দেখা হলো, নিজেই বললেন, রাগ করেছেন নাকি। তখন আমি বলেছিলাম, বরং আপনি রাগ করেছেন নাকি। এরপর বললেন, আমি তো মন্ত্রী, একটু মন খারাপ লাগে। কথা তো আপনি ঠিকই বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। গত ২৪ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কেন্দ্রীয় কচি–কাঁচার মেলা কার্যালয়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। গত ২৪ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কেন্দ্রীয় কচি–কাঁচার মেলা কার্যালয়ে।ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
প্রকাশ্যে কেন এমন বলতে হয়েছিল?

Advertisement

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: তখন আমি সোনালী ব্যাংকের এমডি। তখনকার নির্বাচিত শ্রমিক ইউনিয়ন বা সিবিএ খুব খারাপ ছিল। সাবেক সচিব এম আসফ-উদ-দৌলা তখন চেয়ারম্যান। আতিউর রহমান, খুশী কবির পরিচালক। সিবিএ যখন-তখন পর্ষদে এসে নানা তদবির করত, ঝামেলা করত। এ জন্য বিরক্ত হয়ে এ কথা বলেছিলাম। তবে কাজ হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তখনকার সিবিএ মাফিয়ারা কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতি করাতে টাকা নিত। এখনকার মাফিয়ারা এত ছোট কাজে যুক্ত হয় না। এখনকার মাফিয়ারা কোটি কোটি টাকা ঋণ নেয়, তা ফেরত না দেওয়ার জন্য। ওই টাকার একটি অংশ ভাগ–বাঁটোয়ারা হয়। এ ধরনের মাফিয়া দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

লুৎফর রহমান সরকার তখন গভর্নর। একবার একজন বড় ব্যবসায়ী গভর্নরকে অপমান করেছিলেন, শার্টের কলার ধরেছিলেন। তিনি ক্ষমতার খুব কাছাকাছি ছিলেন। ওই সময় লুৎফর রহমান সরকার দৌড়ে আমার কক্ষে চলে এসেছিলেন। আমরা বিষয়টি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া সাহেবকে জানালাম।
বর্তমান সময়ে আসি। শুরু করি বেসিক ব্যাংক নিয়ে। হঠাৎ করে ব্যাংকটি খারাপ হয়ে গেল, কারও শাস্তিও হলো না। বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকও খারাপ করছে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ: সরকার কর্তৃক একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার পর ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে হলো ৮০ শতাংশ, আগে যা ছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। শুধু একজন চেয়ারম্যান ও এমডির কারণে ব্যাংকটির এমন অবস্থা হয়ে গেল। ৮০ শতাংশ ঋণ যখন খারাপ হয়ে গেল, তখন তো সরকারে উচিত ছিল কাউকে না কাউকে দায়ী করা। আর এত ঋণ যে খারাপ হয়ে গেল, তা তো কোনো শাখা ব্যবস্থাপকের জন্য হয়নি। চেয়ারম্যান-এমডি ছাড়া একটি ব্যাংক এত খারাপ হতে পারে না। কিন্তু চেয়ারম্যান দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুনেছি, দুদক দুদিন ডেকেছিল। চা খাইয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। তার মানে চেয়ারম্যানকে যাঁরা রক্ষা করছেন, তাঁরা দুদকের চেয়ে শক্তিশালী। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তারপর আসি ফারমার্স ব্যাংকের ঘটনায়। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটি দেওয়া হয়েছিল মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে, যিনি মন্ত্রীও ছিলেন। এ ব্যাংকটির অবস্থা এত খারাপ হয়ে গেল যে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছিল না। ব্যাংকটি দেউলিয়া হয়ে যেত, কিন্তু সরকার রক্ষা করল। সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ব্যাংককে দিয়ে মূলধন বিনিয়োগ করাল। এটা ভালো কথা। কিন্তু যারা ব্যাংকটিকে দেউলিয়ার মুখে নিয়ে গেল, তাদের কি কিছু হবে না? চেয়ারম্যানকে কেউ প্রশ্নও করেনি। এই যে বললাম, জবাবদিহি বলতে কিছু নেই। এখন বলা হচ্ছে, মাহবুবুল হক চিশতী ছিলেন, ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁকে ধরা হয়েছে। শুধু তিনি একাই কি ব্যাংকটিকে খারাপ অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলেন। নিশ্চয়ই এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত ছিলেন।

Advertisement
Advertisement

আইন-বিচার

জামিনে মুক্তি পেলেন জবি শিক্ষক দ্বীন ইসলাম

Published

on

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। বুধবার (৮ মে) বিকালে কুমিল্লা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান এই শিক্ষক।

ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাটি বেশ আলোচিত ছিল। যে ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়। ঘটনাটি কেন্দ্র করে কারাগারে ছিলেন এই শিক্ষক। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে আজ  মুক্তি পেয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশে আজ দ্বীন ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। দুপুরের পর আমরা কোর্টের অর্ডারটি হাতে পাই। এরপরই তাকে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে গ্রহণ করে নিয়ে গেছেন।“

দ্বীন ইসলামের সাথে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ফাইরুজ অবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকেও আটক করে পুলিশ। আম্মান এখনো কারাগারে আছেন বলে জানা যায়। গত ১৭ মার্চ ফেসবুক পোস্ট দিয়ে নিজ বাড়ি কুমিল্লাতে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। তাঁর পোস্টে শিক্ষক দ্বীন ইসলাম এবং সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে অভিযুক্ত করেন অবন্তিকা। ঘটনার পর কোতোয়ালি থানায় অবন্তিকার মা একটি মামলা করেন। যে মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ করা হয়েছিল।

 

এম/এইচ

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

জাতীয়

মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য মোটরযানের গতিসীমা নির্ধারণ

Published

on

রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা সদর ও শহর এলাকায় মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। এছাড়াও এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেলের গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ এবং মহাসড়কে ৫০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মোটরসাইকেল চলাচলের এই নির্দেশনা দেয় হয়।

মোটরসাইকেলের পাশাপাশি অন্যান্য মোটরযানেরও গতিসীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। প্রাইভেট কার, জিপ, মাইক্রোবাসের সর্বোচ্চ গতি এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। মহাসড়কেও একই গতিতে চলাচল করতে হবে। বাস-মিনিবাস ও ভারী যাত্রীবাহী মোটরযানও একই গতিতে এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কে চলবে।

ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ডভ্যান,ট্রেইলরসহ অন্যান্য মালবাহী মোটরযানের সর্বোচ্চ গতি এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ৫০ কিলোমিটার। মহাসড়কেও একই গতিসীমা মেনে চলতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ধারা-৪৪ এর উপধারা-১ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা, ২০২২ এর বিধি-১২৫ এর উপবিধি-৪ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সড়ক/মহাসড়কে মোটরযানের সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ, নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার নিমিত্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪ সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জারি করা হলো।

Advertisement

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, শহর, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/জেলা সদরের মধ্য দিয়ে ব্যবহৃত জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক রাস্তার প্রস্থ: ১০.৩ মিটার কমপক্ষে ৬ লেনে বিভক্ত, পৃথক হাঁটা এবং পারাপার সুবিধা আছে এমন সড়কে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার।

এএম/

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

বাংলাদেশ

ছেলের ওপর অভিমান করে বাবা-মায়ের বিষ পান

Published

on

নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের ওপর অভিমান করে বাবা-মায় একসাথে বিষ পান করার ঘটনা ঘটেছে। পরে স্বজন ও স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

বুধবার (৮ মে) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টায় উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষ পানে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মো. আলম শেখ ও তার স্ত্রী মোছা. নাজমা বেগম।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবা আলম শেখ জানান, তার দুই মেয়ে এক ছেলে। একমাত্র সন্তান মো. সবুজ শেখকে তার শেষ সম্বল সকল জমি-জমা লিখে দিয়েছিলেন। ছেলে তাকে কথা দিয়েছিলো সংসারের সকল দায়িত্ব এবং তার সকল ঋণ পরিশোধ করে দিবে। কিন্তু জমি লিখে নেয়ার পর ছেলে তার কথা রাখেনি। এদিকে ঋণের কারণে পাওনাদারদের অপমান-অপদস্ত নিরবে সহ্য করতে হতো । তাছাড়াও ছেলে ও ছেলের বউ তাদের স্বামী-স্ত্রী ২ জনের সাথেই খারাপ আচরণ করতো। একপর্যায়ে নিজেদের জীবনের ওপর অতিষ্ঠ হয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী বিষ পান করেছেন।

ছেলে সবুজ শেখের কাছে তার বাবা-মায়ের বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তবে তার চাচাতো ভাই জুয়েল রানা বলেন, তার চাচা-চাচি ২ জনেই সুস্থ হলে পারিবারিক ভাবে বসে এ বিষয়গুলো সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।

Advertisement

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. স্নিগ্ধা আক্তার বলেন, বিষ পান করে স্বামী-স্ত্রী ভর্তি হয়েছে। ২ জনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে আলম শেখের স্ত্রী নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এএম/

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত