Connect with us

ফিচার

৯০ বছর আগে যেভাবে আধুনিক কাওয়ালির শুরু

Avatar of author

Published

on

নব্বই বছর আগে সৈয়দ নূরুল হাসান নামে একজন সুফি ‘নাগমত-উস-সামা (শোনার জন্য গান)’ নামে ফারসি শ্লোকের একটি সংকলন প্রকাশ করেছিলেন। প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার এই পেটমোটা বইয়ে ৭০০টিরও বেশি সযত্নে বাছাইকৃত ফারসি কবিতা রয়েছে, যা তিনি উত্তর ভারতের মাজার এবং অন্যান্য উৎস থেকে সংগ্রহ করেছিলেন।

ত্রয়োদশ শতাব্দীর সুফি হযরত আলাউদ্দিন সাবির কালিয়ারির স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছে এই ‘নাগমত-উস-সামা’। উত্তরাখণ্ডের পিরান কালিয়ারে তার মাজারে গিয়েই নূরুল হাসান এই সংকলনটি তৈরি করার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

‘সামা’, আরবি থেকে উদ্ভূত একটি জটিল শব্দ, যার আক্ষরিক অর্থ ‘শ্রবণ’। কিন্তু বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর অনেক ধরনের অর্থ হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় কার্যাবলি এবং গান। শ্রোতাদেরকে এক ধরনের ঘোরের মধ্যে চলে যাওয়ার অবস্থা উল্লেখ করতেও ব্যবহৃত হয় এই শব্দটি।

নূরুল হাসানের ১৯৩৫ সালের এই সংকলনকে সেই বিভিন্ন ধরনের একটি মিশ্রণ বলা যেতে পারে। এর মূল অংশ গজল হলেও অন্যান্য বেশ কয়েকটি কাব্যিক ধারাও রয়েছে, যেগুলোকে একত্রে নাগমা (গান) বলা হয়। এর সাংগীতিক ভাব ও জনপ্রিয়তাকে প্রাধান্য দিয়েই এগুলোকে নির্বাচন করা হয়েছে। তবে এতে স্থান পাওয়া নাগমা ও গজলগুলোর বড় একটি অংশ উত্তর ভারতের বিভিন্ন মাজারে গাওয়া হয়।

নূরুল হাসান তার সংকলিত বইয়ের ভূমিকায় অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে স্বীকার করেছেন যে তিনি যেভাবে পেরেছেন, তার সবগুলোই সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছেন। এগুলো তিনি মাজারে শুনেছেন এবং ‘মাইকাশ’ আকবরাবাদীর মতো পণ্ডিত তাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছেন। তিনি এ-ও স্বীকার করেছেন যে, বেশ কয়েকটি গানের জন্য তিনি তিন বা চারটি শ্লোকের বেশি সংগ্রহ করতে পারেননি, এমনকি এর মূল কবিদের সম্পর্কেও কোনো বিবরণ খুঁজে পাননি।

Advertisement

পাঠকদের কাছে হাসানের অনুরোধ

বইটি তার পাঠকদের কাছে একটি গুজারিশ (অনুরোধ) দিয়ে শুরু হয়েছে, যাতে ভারতের ফারসি ভাষা সম্পর্কে আক্ষেপ করে হাসান লিখেছেন:

‘সময় বদলেছে, আমাদের সময়ের মানুষ বদলেছে, কবিতার স্বাদ বদলেছে। এখন আর সেই মাশায়েখ (সাধক) নেই, সেই পৃষ্ঠপোষক, আরবাব-এ-হাল (অনুসন্ধানী) নেই, নেই সেই গায়ক কিংবা সেই শ্রোতারা। তারপরও, এই পৃথিবীতে কেউই ঐশ্বরিক সুবাস থেকে মুক্ত নয়। তাই যেসব পবিত্র আত্মা (সংকলিত গান) এখনো অবশিষ্ট আছে, যেগুলোকে আমি দীর্ঘকাল ধরেই চিনতে পেরেছি, আমি সেই আহলে-হালদের (অতীন্দ্রিয় অভিজ্ঞতায় আশীর্বাদপ্রাপ্ত ব্যক্তি) ফারসি লেখাগুলোকে একটি সংকলনে একত্রিত করতে চেয়েছিলাম। এই লেখাগুলো আধ্যাত্মিকতায় পরিপূর্ণ এবং প্রতিটি শব্দ ঐশ্বরিক গানের সাথে অনুরণিত হয় এবং তাদের গানের সাথে মিলে যায়।’

গুজারিশটি তার সময়ের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে, যখন ফারসি ভাষার প্রতি এবং একইসাথে ভাষাটি বোঝার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গিয়েছে। এবং বাস্তবতা হলো, সংকলনটি রচনার পর থেকে ভারতে ফারসি ভাষার অবস্থান আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। নৃতাত্ত্বিক সংগীত বিশেষজ্ঞ রেগুলা কুরেশি যেমনটি উল্লেখ করেছেন, ‘সামা’ রচনার প্রধান ভাষা ফারসি একসময় শ্রোতাদের মার্জিত ও পরিশীল রুচির চিহ্ন এবং উচ্চ মর্যাদার ভাষা হিসেবে পরিগণিত হতো। তবে সত্তরের দশকের পর ভারতে এর পৃষ্ঠপোষক, সংগীতশিল্পী এবং শ্রোতাদের কাছে সেই মর্যাদা হারিয়ে যায়।

গিরা খোলা

Advertisement

হিন্দুস্তানি সংগীতের অন্যান্য বেশিরভাগ ঘরানার মতোই কাওয়ালিও মূলত একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ অভিজ্ঞতা: অভিনয়শিল্পীরা শ্রোতাদের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য বেশ কিছু কৌশল প্রয়োগ করেন। এরকমই একটি কৌশল হলো মূল শ্লোকের বার্তা আরও অর্থবহ করার জন্য গিরাহ (নতুন শ্লোক যোগ করা) প্রবর্তন করা।

কাওয়ালিতে এখনও যে সামান্য ফারসি গাওয়া হয়, সেটিও গাওয়া হয় গিরা হিসেবে টুকরো টুকরো করে, এগুলোও আবার হিন্দি বা উর্দুতে; অথবা দর্শকদের আগ্রহ যাচাই করার উপায় হিসাবে। শ্রোতাদের মধ্যে যদি ফারসি ভাষা আগ্রহ না জাগায়, তখন তারা হিন্দি বা উর্দুতে গাওয়া শুরু করেন। বর্তমান সময়ের কাওয়ালিতে ব্যবহৃত ফারসি গিরার সবগুলোই উঠে এসেছে নূরুল হাসানের ‘নাগমত-উস-সামা’ থেকে।

সৈয়দ নূরুল হাসান (পুরো নাম সৈয়দ নূর উল-হাসান মওদুদী সাবরি ফজল-ই-রেহমানি সহসাওয়ানি) নিজেই স্বীকার করেন, তিনি মোটেই সংগীতজ্ঞ বা ফারসি সাহিত্যের কর্তৃপক্ষ নন। তিনি একজন পেনশনভোগী এবং সুফি, যিনি তার বার্ধক্যের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়েছিলেন সংকলনটি রচনার জন্য, যাতে তিনি উত্তর ভারতের মাজারগুলোতে পারস্যের গানের যে টুকরো টুকরো পরিবেশন শুনেছিলেন, তার প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। এমনকি তার নিজের জীবদ্দশাতেও এই সামাগুলো বিস্মৃত হওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল।

বইটির প্রথম সংস্করণ ১ হাজার কপি মুদ্রিত হয়েছিল। পাঠকদের কাছে তিনি অনুরোধ করেছিলেন এর ভুলগুলো শুধরে দেওয়ার জন্য এবং আরও গান পাঠানোর জন্য, যেগুলো এই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি। তবে সেই দ্বিতীয় সংস্করণের কাজ আর শুরু করতে পারেননি সৈয়দ নূরুল।

ফারসি গানের সংকলন

Advertisement

সৈয়দ নূরুল হাসানের বইটি এর বিষয়বস্তুর মতোই ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে থেকে যাবে। যে সময় দক্ষিণ এশিয়ায় ফারসি ভাষার ব্যবহার কমে যাচ্ছে, তখন এটি হয়ে উঠেছে উপমহাদেশের কাওয়ালি সংগীতজ্ঞদের মূল পাঠ। কারণ বর্তমান সময়ে এই উপমহাদেশে এমন কোনো জনপ্রিয় ফারসি কাওয়ালি গাওয়া হয় না, যা তার বইয়ে নেই।

যদিও ফারসি শ্লোকের আরও অনেক সংকলন রয়েছে, তারপরও সংগীতের মূর্ছনার ওপর তার বিশেষ নজর, এবং বেছে বেছে সহজলভ্য, জনপ্রিয় ও সহজেই সংগীতের ছাঁচে ফেলে দেওয়া যায় এমন গান নির্বাচন করাটাই তার বইকে পরিণত করেছে আধুনিক ফারসি কাওয়ালির ‘মূলপাঠ্য’ হিসেবে।

কাওয়ালি গাওয়ার জন্য পরবর্তী সমস্ত সংকলন, যেমন সত্তরের দশকে ভারতের ইদ্রিস খান এবং পাকিস্তানের মুশতাক ইলাহি ফারুকীর একই নামের সংস্করণগুলো তার বইয়ের ওপর ভিত্তি করেই রচিত হয়েছে। এটি বর্তমান সময়ের ‘ফারসি কাওয়ালির ক্যাননের (মূলবই) জনক’ হিসেবে নূরুল হাসানের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে।

‘নাগমত-উস-সামা’ কেবল আধুনিক সংগীতে ফারসি ভাষার গ্রহণযোগ্যতাকেই টিকিয়ে রাখেনি, বরং ‘জিগার’ মোরাদাবাদী এবং ‘মাইকাস’ আকবরাবাদীর মতো লেখকদের ফারসি রচনাগুলোকেও জনপ্রিয় করে তুলতে অবদান রেখেছে। যদিও সংকলনের বেশিরভাগই ইরানি পণ্ডিতদের শাস্ত্রীয় রচনা নিয়ে গঠিত, এতে বেশ কিছু ভারতীয় সুফি ও ভারতীয় ফারসি ভাষার কবির রচনাও রয়েছে।

শ্রদ্ধা নিবেদন

Advertisement

নূরুল হাসান যা শুনেছেন, ঠিক তা-ই বিশ্বাস করে লিখেছিলেন। তবে তাকে কেবল মাজারে মুখে মুখে ঘুরতে থাকা শ্লোকের সংকলনকারী বললে ভুল হবে। তিনি তার সংকলনে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন: লাইন বাদ দিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে কঠিন শব্দগুলোকে প্রতিস্থাপন করেছেন সহজ শব্দ দিয়ে; এবং অনেক ক্ষেত্রে, গানের রচয়িতাকে ভুলভাবে চিহ্নিত করেছেন এবং একাধিক রচনাকে একসাথে মিশিয়ে ফেলেছেন। তবে এটি সম্ভবত অসাবধানতার কারণে নয়, বরং বিগত কয়েক দশক ধরে চলা গানের বিবর্তনের ফলেই হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, পঞ্চদশ শতাব্দীর জনপ্রিয় কবি জামির ৫০টিরও বেশি কবিতা বা গান এই সংকলনে রয়েছে—যার মধ্যে ১৫টি রচনা তার নয়। এমনকি এই প্রবন্ধের প্রারম্ভিক পঙক্তিগুলো, যেগুলো দেওয়ান-ই-শামস-তাবরিজির একটি ‘সামা’র অংশ হিসেবে উদ্ধৃত করা হয়েছে, তার একটি আয়াত রুমির লেখা নয়।

ঐতিহ্য অনুযায়ী, একজন কবি একজন গুরুর প্রতি সবচেয়ে বড় যে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিতে পারেন, তা হলো একজন প্রতিষ্ঠিত কবির কাজগুলোর ওপর নতুন করে কাজ করা, তা থেকে ধার করা এবং উপস্থাপনের মাধ্যমে তার শৈলীর অনুকরণ করা। যদিও এ ধরনের জিনিস বর্তমান যুগে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়, কিন্তু তার সময়ে একে ত্রুটি হিসাবে দেখা হতো না, বরং শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের একটি রূপ হিসেবেই চিহ্নিত করা হতো।

তবে নূরুল হাসান যদি বেঁচে থাকতেন এবং দেখতে পেতেন কীভাবে তার সৃজনশীল স্বাধীনতাগুলো স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে এবং তার সংকলনটি পরবর্তী প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের জন্য বিপুল সম্ভাবনা উন্মুক্ত করে দিয়েছে, তাহলে তিনি সম্ভবত রোমাঞ্চিত হতেন।

Advertisement
Advertisement
মন্তব্য করতে ক্লিক রুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন

রিপ্লাই দিন

ফিচার

সীমার মাঝে অসীম ‘মা’

Published

on

কবি কাজী নজরুল ইসলাম ঠিকই লিখেছিলেন ‘যেখানেতে দেখি যাহা, মা-এর মতন আহা। মার বড়ো কেউ নাই –কেউ নাই কেউ নাই! নত করি বল সবে মা আমার! মা আমার!’ আর সেটাই তো মা ছাড়া আপন আর কে’ই বা আছে।

এক অক্ষরের একটি ছোট্ট শব্দ ‘মা’। অথচ ছোট্ট শব্দটির অর্থ কতোটা অসীম, অদ্বিতীয় তা প্রকাশের ভাষাও এখনো তৈরি হয়নি। যার সাথে কারোর তুলনা চলে না। সীমার মাঝে অসীম হলো ‘মা’। মা মানে মমতা, মা মানে ক্ষমতা, মা মানে নিরাপত্তা, মা মানে নিশ্চয়তা, মা মানে আশ্রয়দাতা, মা মানে সকল আশা, মা মানে এক বুক ভালোবাসা। মা এক বর্ণের এক বিশাল নাম। অস্তিত্বের নিরাপত্তার নাম। সন্তানের জন্য মা শাশ্বত।

আজ পৃথিবীর সকল মা’য়েদের জন্য একটি বিশেষ দিন। দিনটি হলো বিশ্ব মা দিবস। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস। এ হিসাব অনুযায়ী, আজ ১২ মে সারাবিশ্বে পালন করা হচ্ছে মা দিবসটি। দিনটিতে মাকে বিশেষভাবে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর দিন।

বিশেষ এই দিবসটি কীভাবে এলো তা হয়তো অনেকেরই অজানা। ইতিহাস বলছে, অনেক পথ পেরিয়ে এই দিবসটি নতুন রূপ পেয়েছে। ধারণা করা হয়, মা দিবসের সূচনা প্রাচীন গ্রিসের মাতৃরূপী দেবী সিবেলের এবং প্রাচীন রোমান দেবী জুনোর আরাধনা থেকে।

এছাড়া ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য অনেক আগে থেকেই মায়েদের এবং মাতৃত্বকে সম্মান জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট রোববারকে বেছে নিয়েছিলেন। ষোড়শ শতকে এটি ইংল্যান্ডে মাদারিং সানডে বলে পরিচিতি লাভ করে। অনেকেই ক্যাথলিক পঞ্জিকা অনুযায়ী এটিকে লেতারে সানডে যা লেন্টের সময়ে চতুর্থ রোববারে পালন করতে শুরু করে।

Advertisement

তবে ইতিহাস বিদদের মতে, জুলিয়া ওয়ার্ড হোই রচিত “মাদার্স ডে প্রক্লামেশন” বা “মা দিবসের ঘোষণাপত্র” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের গোড়ার দিকের প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পৈশাচিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন। এরপর যুদ্ধ শেষে পরিবারহীন অনাথদের সেবায় ও একত্রীকরণে নিয়োজিত হন মার্কিন সমাজকর্মী আনা রিভিজ জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস।

এ সময় তারা জুলিয়া ওয়ার্ড ঘোষিত মা দিবস পালন করতে শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আনা রিভিজ জার্ভিস ১৯০৫ সালের ৫ মে মারা যান।

মায়ের মৃত্যুর পর আনা মেরি জার্ভিস মায়ের শান্তি কামনায় ও তার সম্মানে সরকারিভাবে মা দিবস পালনের জন্য প্রচারণা চালান। তিন বছর পর ১৯০৮ সালের ১০ মে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার আন্দ্রেউজ মেথডিস্ট এপিসকোপাল চার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম মা দিবস পালন হয়।

এরপর ১৯১২ সালে এই দিবসটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচার শুরু হয়। এই প্রচার ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কানাডা, মেক্সিকো, চীন, জাপান, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকায়।

Advertisement

এ প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস ও জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই প্রতিটি দেশে মায়েদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এই দিনটি উৎসর্গ করা হয়। দেশে দেশে পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস।

টিআর/

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

ফিচার

প্রিয় মানুষের আলিঙ্গনে বাড়ে আত্মবিশ্বাস

Published

on

আলিঙ্গন

বলিউডের ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ চলচ্চিত্রের কথা মনে আছে কি? যেখানে জনপ্রিয় অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ‘জাদু কি ঝাপ্পি’ বলে জড়িয়ে ধরেন সামনের মানুষটিকে। মুন্না ভাই বিশ্বাস করেন এই আলিঙ্গন এনে দেয় প্রশান্তি, বাড়িয়ে দেয় নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস।

এ তো গেলো চলচ্চিত্রের কথা। বিভিন্ন গবেষণাতেও দেখা গেছে,  প্রীতিপূর্ণ আলিঙ্গন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এর মাধ্যমে নির্গত হয় অক্সিটোসিন হরমোন, যার ফলে মানসিক অবসাদ কমে গিয়ে মনে আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়। দুশ্চিন্তা কমে গিয়ে স্বস্তি আসে। শুধু তাই নয় আন্তরিক আলিঙ্গন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। কমায় রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি, সেই সঙ্গে দূর করে নানা শারীরিক ব্যথাও।

আজ ৬ জানুয়ারি, আলিঙ্গন দিবস। আমেরিকায় দিনটি উদযাপিত হয়। অবশ্য কবে কীভাবে এই দিবসের চল হয়েছিল তা জানা যায় না। তবে আলিঙ্গন বলতে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীর রোমান্টিক আলিঙ্গনকে বোঝাচ্ছে না।

আলিঙ্গন

আত্মীয় বা বন্ধুর সঙ্গে আলিঙ্গনেও বাড়ে আন্তরিকতা। সম্পর্কগুলো আরও গভীর হয়, মজবুত হয়। সাধারণত, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনকে শুভেচ্ছা জানানোর সময়, বিদায় জানানোর সময় বা কাউকে অভিনন্দন জানানোর সময় আমরা আলিঙ্গন করি। কাউকে সান্ত্বনা দিতে বা সহানুভূতি জানাতেও আমরা আলিঙ্গন করি।

তীব্র শীত মৌসুমে একটুখানি উষ্ণতার অভাবে কষ্ট পাচ্ছে কত অসহায় মানুষ। সেসব শীতার্ত মানুষের মধ্যে আলিঙ্গনের উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে এ দিবসের যাত্রা শুরু। আজকের দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন নিজের যতটুকু সাধ্য আছে তা নিয়েই শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে চাঁদা তুলে কিনতে পারেন কিছু লেপ-কম্বল। যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের বিলিয়ে দিতে পারেন। এভাবেই ছড়িয়ে দিতে পারেন আলিঙ্গনের উষ্ণতা।

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

ফিচার

শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করেও ঠেকানো যায়নি যে নির্বাচন (ভিডিও)

Published

on

৮ম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর। এই হিসেবে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ছিল ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল অনেক। আন্তর্জাতিক মহলেও ছিল ব্যাপক আগ্রহ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন আহমদের অধীনে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ৩৮টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। এতে আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পায়। অন্যদিকে বিএনপি পায় মাত্র ৩০টি আসন। প্রাপ্ত ভোটের ক্ষেত্রেও ছিল বিশাল ব্যবধান। আওয়ামী লীগ পায় ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ভাগ ভোট এবং বিএনপি ৩২ দশমিক পাঁচ শূন্য ভাগ ভোট।

নির্বাচনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টি আসন। সবচেয়ে বেশি ভরাডুবি হয়েছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। ৩৯টি আসনে লড়াই করে মাত্র দুটি আসন পায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের শরীক এই দলটি।

নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ পায় ৩টি আসন ।বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ ২টি করে আসন এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি একটি করে আসন পায়।০৪টি আসন পায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বিতীবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সংসদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর।

নির্বাচনের আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে সংবিধানে একটি বড় সংশোধনী আনে বিএনপি সরকার।আওয়ামী লীগের অভিযোগ ছিল-নিজেদের পছন্দের প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে রেখে নির্বাচনের সময় সুবিধা আদায়ের জন্য বিএনপি এটি করেছে। তাই বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে আওয়ামী লীগ।

Advertisement

এই আন্দোলনের মাঝেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতার জন্য একাধিক বৈঠক করেছেন ঢাকার নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।কূটনৈতিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত পেট্রেসিয়া বিউটেনিস।

তবে সমঝোতা না হওয়ায় সংঘাতময় এক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী।যেটি ওয়ান-ইলেভেন নামে বহুল পরিচিত।জারি করা হয় জরুরী অবস্থা।এই জরুরি অবস্থার মধ্যেই সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ত্ত্ত্বাবধায়ক সরকার।

৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের সরকার প্রশংসিত হলেও তাদের রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল।অভিযোগ রয়েছে,মাইনাস-টু ফর্মূলা কার্যকর করতে অর্থাৎ শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতির বাইরে রেখে নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাদের গ্রেপ্তার করার পরও ওই চেষ্টা সফল হয়নি।

এরপর মূল নেতৃত্বের বাইরে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে আরেকটি অংশ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলে।যারা ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। পরবর্তীতে সবদলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিএনপি-আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসে সফল হন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে পারেনি বিএনপি।দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়।অন্যদিকে আওয়ামী লীগে তখন উল্লাস আর উচ্ছ্বাস।

Advertisement

ওই সংসদ নির্বাচনকে বেশ দ্রুততার সাথে স্বীকৃতি দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি নির্বাচনকে ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন’ বলে বর্ণনা করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট -এনডিআই।

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত