'বার্সা ছাড়তে হবে জেনে কান্নায় ভেঙে পড়ি'
২১ বছরের সম্পর্কের ইতি টেনে লিওনেল মেসি এখন পিএসজির। এত দ্রুতই সবকিছু ঘটে গেছে যে বিষয়টি এখনো অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীদের কাছে। তাদের মতো বিষয়টি অস্বাভাবিক খোদ মেসির কাছেও। নতুন ঠিকানায় অনুশীলন শুরু করেছেন, চেষ্টা করছেন দ্রুত মানিয়ে নেয়ার। তবে মেসি জানিয়েছেন, বার্সেলোনা ছাড়তে হবে জানার পর কত বড় ধাক্কা এসেছে তার এবং তার পরিবারের জীবনে।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত মেসি জানতেন না, নিজের বেড়ে ওঠার ক্লাবকে বিদায় জানাতে হবে তার। শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত কথা চালাচালি হয়েছে বার্সা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তার সঙ্গে। তবে যখন জানতে পারলেন কাতালান ক্লাবটিতে আর থাকা হচ্ছে না তাঁর- তখন স্ত্রীকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বার্সার হয়ে ৩৫টি শিরোপা জেতা মেসি।
বিবিসিতে দেয়া সাক্ষাৎকারে ঘটনাবহুল এই কয়েক দিনের কিছু কথা কিছু গল্প শোনালেন বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, তার বাবা এবং এজেন্ট জর্জে মেসির কাছ থেকেই খবরটি শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ৬ বারের ব্যালনজয়ী।
মেসি বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাতে বাবা বাসায় এলেন। পুরো সন্ধ্যা তিনি (হুয়ান) লাপোর্তার সঙ্গে ছিলেন। বাবা ফিরেই আমাকে ব্যাপারটি জানান। শুনে সত্যিই ভেঙে পড়েছিলাম। এরপর নিজেকে আমার প্রস্তুত করে নিতে হয়েছে আন্তোনেল্লাকে (মেসির স্ত্রী) বলার জন্য।'
স্ত্রীকে জানিয়ে দুইজন একসাথে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিষয়টির সঙ্গে যে তার সন্তানদেরও সম্পর্ক রয়েছে তাও জানতেন এই আর্জেন্টাইন। কারণ গত ডিসেম্বরেই নিজের সন্তানের কাছে বলেছিলেন যে, বার্সা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না তিনি।
'আমরা কান্না করেছিলাম এবং সন্তানদেরও বিষয়টা জানাতে হতো। খুব খারাপ লাগছিল। তবে সন্তানদের বলার আগে আমরা দুজন পরস্পরের মন ভালো করার চেষ্টা করেছি। ওদেরকে বলার উপযুক্ত একটা উপায় খুঁজছিলাম, কারণ গত ডিসেম্বরেই ওদের বলেছিলাম যে আমরা বার্সেলোনাতেই থাকছি।'- মেসি বলেন।
বিশেষ করে তার বড় ছেলে থিয়াগো মেসির জন্য। কারণ থিয়াগো বড় হয়েছেন কাতালানে। স্কুল-বন্ধু সবই ওখানে। তাই এই সিদ্ধান্তে বড় পরিবর্তন আসবে মেসির সন্তানের জীবনেও। এটাই মূলত কঠিন ছিলো আর্জেন্টাইন অধিনায়কের জন্য।
মেসি জানান, 'আমরা জানতাম, এটা তাদের জন্য কতটা কঠিন হবে। বিশেষ করে থিয়াগোর জন্য। তবে কখনও কখনও হয়তো কিছু বিষয় আমরা অনেক বেশি ভাবি, কিন্তু শিশুরা দ্রুতই খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তারা এমনভাবে সবকিছু মেনে নিতে পারে, আমরা যা কল্পনাও করতে পারি না।'
তবে আপাতত নতুন ঠিকানায় সন্তান-স্ত্রীসহ মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন মেসি। যদিও বা তিনি জানেন, হুট করে আসা এমন পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটা কঠিন হবে।
'থিয়াগো হয়তো তার ভাবনা চেপে রেখেছে। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে, সে সবকিছু বেশ উপভোগ করছে। কিন্তু আমি তাকে বুঝি, সে আমার মতোই। সে মনে মনে কষ্ট পেলেও দেখাচ্ছে না। তবে এটা তেমন গুরুতর কিছু নয়। সে মানিয়ে নেবে এবং এটা তার জন্য ভালো অভিজ্ঞতা হবে।'- তিনি বলেন।
এএ