কোমর-পিঠের-কাঁধ ব্যথা দূর করার সহজ উপায়
পেশার তাগিদ কিংবা স্বভাবদোষের কারণে অকালেই শিরদাঁড়ার হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে অনেকের। অফিসের ডেস্কে বসে ল্যাপটপের সামনে দীর্ঘ ক্ষণ কাজ করতে করতে পিঠ, কাঁধ টনটন করে ওঠে! কিংবা বাড়িতে একটানা টিভি দেখতে গিয়ে বা ঘুম থেকে উঠে ঘাড় ঘোরাতে গেলেই তীব্র যন্ত্রণা হয়? এই সব উপসর্গ দেখলেই বুঝতে হবে শরীরে বাসা বেঁধেছে স্পন্ডিলাইটিস।
তবে সময় মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই অসুখে আক্রান্ত হলে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে যেতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে ব্যথা কাঁধ থেকে পিঠ, কোমর এমনকি, হাত অবধি ছড়িয়ে যায়। স্পাইনাল কর্ডের উপরেও চাপ ফেলে এই অসুখ। শুধু ঘাড়ে ব্যথাই নয়, ব্যথার অংশ অবশ হয়ে যাওয়া, সুচ ফোটানোর মতো তীব্র যন্ত্রণাও এই অসুখের লক্ষণ। এই অসুখে আক্রান্ত হলে অনেকের আবার মাথাও ঘোরে। তবে ব্যথার হাত থেকে বাঁচতে কেবল ওষুধ খেলেই হবে না, মেনে চলতে হবে কিছু অভ্যাসও। কী করলে স্পন্ডিলাইটিসের ব্যথায় মিলবে আরাম?
১) বসার অভ্যাস সবার আগে বদলাতে হবে। অফিসে ঘাড় বা পিঠ বেঁকিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকা যাবে না। পেশার তাগিদে তেমন ভাবে বসতে হলে মাঝেমাঝেই উঠে হাঁটাহাঁটি করুন। কাজের ফাঁকে চেয়ারে বসেই খানিক ক্ষণ ঘাড়ের ব্যায়াম করে নিতে পারেন। চোখ ও কম্পিউটারের স্ক্রিন যেন সোজাসুজি থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
২) শরীরচর্চা ও যোগাসন করেই এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই অসুখ সামলাতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম আছে, বিশেষ করে কিছু স্ট্রেচিং। মাংসপেশিকে শক্ত রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ব্যায়াম করুন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রোগীকে বেল্ট, কলার বা বিশেষ ট্রাকশন নেয়ার ব্যায়াম দেয়া হয়।
৩) স্পন্ডিলাইটিসের ক্ষেত্রে আপনার শোয়ার ধরনেও পরিবর্তন আনতে হতে পারে। সোজাসুজি না শুয়ে উপুড় হয়ে ঘুমোনোর চেষ্টা করুন। বালিশ ব্যবহার করা নিয়েও সচেতন হতে হবে। অনেকেই স্পন্ডিলাইটিসের সমস্যায় বালিশ ছাড়া ঘুমোন। কখন ওই বালিশ ছাড়া ঘুমোবেন না। নরম দেখে একটা বালিশ নিন, দেখবেন বালিশ যেন খুব বেশি উঁচু না হয়। ঘুম ভাঙার পর পাশ ফিরে উঠুন। সোজা উঠলে মেরুদণ্ডের উপর আরও চাপ পড়তে পারে।
৪) ব্যথার তীব্রতা যদি অনেক বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে আকুপাঞ্চার পদ্ধতির সাহায্য নিতে পারেন। ব্যথা উপশমে এই পদ্ধতি আদতে অব্যর্থ দাওয়াই।
৫) নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গোসল করার অভ্যাস করুন। এতে ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়। ব্যথার জায়গায় এক বার গরম পানির সেঁক দিন, পর ক্ষণেই আবার ঠান্ডা পানির সেঁক দিন। এই পদ্ধতিতেও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।