বাংলাদেশের নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্র প্রভাবিত করতে চায় না: ম্যাথিউ মিলার
বাংলাদেশ সরকার, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যম সবাই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রও সেটা চায়। কোনো দলকে সমর্থন করে বাংলাদেশের নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্র প্রভাবিত করতে চায় না। বললেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
সোমবার (২ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মার্কিন এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। বাংলাদেশের মানুষ যেন স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে সেজন্য ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে পিটার হাসের বক্তব্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সমর্থন করে কিনা এমন প্রশ্ন রাখা হয় ম্যাথিউ মিলারের কাছে। কিন্তু তার কোনো উত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান ম্যাথিউ মিলার।
উল্লেখ্য, গেলো মে মাসে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে নতুন ভিসা নীতির কথা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সেসময় টুইট করে এই ঘোষণা দেন। এই নীতির আওতায় যে কোন বাংলাদেশি ব্যক্তি যদি দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী হন বা এরকম চেষ্টা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয় - তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে সেসময় জানানো হয়, বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার-সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচারবিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যরাও এর আওতায় পড়বেন।
যে সব কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বানচালের আওতায় পড়বে সেগুলোও মার্কিন বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে আছে – ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার অধিকার প্রয়োগ করা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য সহিংসতাকে কাজে লাগানো, এবং এমন কোন পদক্ষেপ – যার উদ্দেশ্য রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা সংবাদমাধ্যমকে তাদের মত প্রচার থেকে বিরত রাখা।
গেলো ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
সেসময় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট আজ গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছেন।’
সর্বশেষ বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত গেলো ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নতুন ভিসা বিধিনিষেধে সাংবাদিক তথা মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন। এই বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যেই ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করলে প্রয়োজন অনুসারে যেকোনও বাংলাদেশির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
টিআর/